গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে বুধবার বাঁকুড়া মোদক সমাজ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার বের করে। মোদক সমাজ মানে বাঁকুড়া শহরের ময়রা সমাজের মানুষের একতা। বাঁকুড়া শহরের নুনগোলা রোড গণেশ মন্দিরের স্থাপনা থেকে পরিচর্যা পুরোটাই মোদক সমাজের মানুষেরা করে আসছেন। এটি প্রায় ৩২০ থেকে ৩৩০ বছরের পুরনো মন্দির। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু লোককথা।
এই মন্দিরে গণপতির আশীর্বাদ পেতে দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। শোনা যায়, যে একবার গণপতি বাবার শরণাপন্ন হয়, তাকে আর খালি হাতে ফিরতে হয় না। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই মন্দির চত্বরে বেলাগাম ঘুরে বেড়ায় ইঁদুর। গণেশ ভক্তেরা কি আর প্রভুর বাহনের ক্ষতি করতে পারে! অগত্যা মুষিকের অবারিত দ্বার।
advertisement
আরও পড়ুন: ফেলা দেওয়া স্ট্র দিয়ে সরস্বতী মূর্তি বানিয়ে চমক শিক্ষকের
এখানে গণেশ চতুর্থীর আগের দিন থেকেই শুরু হয় তোড়জোড়। আলোক সজ্জা এবং গণেশের বিগ্রহকে স্নান করানো। পরের দিন সকাল হলেই জীবন্ত মা দুর্গা, ভোলানাথ ও গণেশকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এক বিশাল ছাতার নিচে মাথায় করে নিয়ে যাওয়া হয় বাবার রুপোর ঘট আর তাতে থাকে ১১ কেজি খেজুর গুড়! এই পরম্পরা মেনেই এবছরও নুনগোলা রোড থেকে মাচানতলা, পোদ্দারপাড়া, শাঁখারিপাড়া, ইন্দারাগোড়া, লালবাজার মোড় হয়ে রানিগঞ্জমোড় রাসতলা হয়ে নুনগোলারোড মন্দিরে আবারও প্রবেশ করে সেই গুড় ভর্তি ঘট। দশ দিন রাখা থাকে এই গুড়। পরে তা গণপতি বাবার ভোগ এবং নানা কাজে প্রসাদ রূপে ব্যাবহৃত হয়। বাঁকুড়া জেলার মানুষের কাছে গুড় একটা ভালবাসা। আর তার সঙ্গে বাঁকুড়া মোদক সমাজের অন্যরকম গণেশ চতুর্থীর শোভাযাত্রা এক অনন্য ক্যানভাস রচনা করে, যায় জন্য প্রতি বছর অপেক্ষা করে থাকেন বাঁকুড়া শহরের বহু মানুষ।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জি