আরও পড়ুন: মহালয়ার আগেই শুরু হয়ে গেল দেবী দুর্গার পুজো! ৫ নয়, এখানে টানা ১৫ দিন বাপের বাড়ি থাকেন উমা
কথিত আছে আজ থেকে ৩২৫ সার্থক শীট ভেড়া চড়াতে চড়াতে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থেকে এসে উপস্থিত হন এই কোষ্টিয়া গ্রামে। একসময় ক্লান্ত হয়ে একটি বট গাছের তলায় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর তাঁর সঙ্গে কিছু দৈবিক ঘটনা ঘটে, স্বপ্নে ঈশ্বরের নির্দেশ পান। তারপরই চালা তৈরি করে কোনরকমে মা দুর্গার পুজো করেন। ব্যস, তারপরই নাকি ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়, রাতারাতি বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন সার্থক শীট। এরপর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে একের পর এক জমিদারি ক্রয় করতে শুরু করেন।মালিক হয়ে ওঠেন কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমির। সার্থক শীটের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি আড়ম্বর করে চালু করেন মা দুর্গার পুজো।
advertisement
প্রতিষ্ঠিত হয় মা দুর্গার বিশাল নাটমন্দির। এই পুজোর বিশেষ বৈচিত্র ছিল আরেকটি। এই পুজোকে কেন্দ্র করে একসময় দিনের বেলায় যাত্রা হত। দিনের বেলায় যাত্রা শুনে অবাক হচ্ছেন তো? এই দিনের বেলার যাত্রার পিছনে একটা কারণ ছিল। বন-জঙ্গলে ঘেরা এই কোষ্টিয়া গ্রামে বুনো হাতির উপদ্রব প্রায়শই লেগে থাকত। তাই বিভিন্ন গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে আসা প্রজারা যাতে দিনের আলো থাকতে থাকতে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন তার জন্যই অমন ব্যবস্থা ছিল। এখন যাত্রাপালা বন্ধ হয়ে গেলেও বিজয়ার দিনে চলে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শীটদের সেই জমিদারি আর নেই। অনেক সম্পত্তি সরকারের হাতে চলে গেছে। জৌলুস আগের থেকে অনেকটা ফিকে হয়ে গেলেও ৩২৫ বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো। রুজির টানে গ্রামের যে সমস্ত মানুষ বাইরে থাকে তারা আজও ছুটে আসেন এই পুজোকে উপভোগ করতে। পুজোর চারটে দিন আনন্দে মেতে ওঠে গোটা গ্রাম।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জি