নাইরবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকা কী?
পূর্ব আফ্রিকায় উৎপত্তি হয়েছে নাইরবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকার। এই পতঙ্গের দুই প্রজাতি রয়েছে। একটি প্রজাতির রং হয় কমলা, অন্যটির কালো। বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চলে এরা দ্রুত বংশবিস্তার করে।
নাইরবি ফ্লাই কতটা ক্ষতিকারক?
চিকিৎসকদের মতে নাইরবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকা মানে এরা নাইট্রিক অ্যাসিড বা হাইড্রোক্লরিক অ্যাসিড তৈরি করে না। এরা তৈরি করে পলি-আন- স্যাটুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (C10H12 O4)। সেটি মারাত্মক বিষ। পোকামাকড়গুলি হলুদ তরল নির্গত করে যাতে ক্যান্থারিডিন থাকে এবং মানুষের ত্বকে ফোস্কা সৃষ্টি করে।
advertisement
এই পোকাদের কোনো হুল বা স্টিং থাকেনা, তাই এরা হুল ফোটায় না। এই পোকারা মানুষদের কামড়াতে পারেনা। এরা গায়ে উঠলে বা এদেরকে ধরলে, অর্থাৎ এরা ত্বকের সংস্পর্শে এলে কোনোরকমের কোনো ক্ষতি হয় না। পোকাটিকে মেরে ফেললেই তার শারীরিক রস ত্বকে ঘা সৃষ্টি করবে। জায়গাটি পুড়ে যাবে।সেই ঘা কিছু দিন পর মিলিয়ে গিয়ে চামড়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কোনো চিন্তার কিছু নেই।
নাইরবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকা কোথায় বেশি দেখা যায়?
এই পোকা আসলে অত্যন্ত উপকারী এক জীব যারা চাষবাসের বিভিন্ন ক্ষতিকারক পোকাকে মেরে খেয়ে ফেলে। তাই এদেরকে natural predator বা natural enemy of pest বলা হয়। আরো অন্যান্য উপকারী শিকারী পোকাদের সাথে এরাও জৈবিক উপায়ে চাষের ক্ষতিকারক পোকা কমানোয় কাজে আসে। তাতে ক্ষতিকারক কীটনাশকের প্রভাব থেকে আমাদের প্রতিদিনের শস্য, সব্জি কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়ে থাকে।
চিকিৎসকের পরামর্শ
চিকিৎসকরা বলছেন ঘর, বিছানা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে। কোনো পোকা মারার ওষুধ বা স্প্রে ব্যবহার করতে না।জামা কাপড় ভালো করে ঝেড়ে নিয়ে পরতে।সন্ধ্যে নামার কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।সঙ্গে ফুল হাতা জামা ব্যবহারেরও নিদান দিচ্ছেন তাঁরা।ওই পোকার সংস্পর্শে আসা মাত্রই শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গটিকে তরল জীবাণু নাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: শোয়ের নাম কেন 'কফি উইথ করণ'? নিজে খান তো কফি? কী বলছেন করণ জোহর?
অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার জেলার ভারত-ভুটান সীমান্ত জয়গাঁ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় নাইরবি ফ্লাই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে । স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত জয়গাঁ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৩ জন আক্রান্ত হয়ে এসেছে চিকিৎসা করাতে। প্রতিদিন তিন চার জন আসছে। বৃহস্পতিবার সকালেও তিনজন আক্রান্ত এসেছে চিকিৎসা করাতে। বৃহস্পতিবার ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মী ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা আক্রান্তের বাড়ি বাড়ি যান পরিদর্শনে। এলাকার জনগণকে সচেতন করেন।লতাবাড়ি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার অনুপম সরকার জানান, " খবর পাওয়া মাত্র এলাকা পরিদর্শন করছি।জনগণকে সচেতন করছি।"তিনি জানান অযথা আতঙ্কিত হবার কারণ নেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এর ওষুধ পর্যাপ্ত আছে। তিনি আরও জানান আক্রান্ত হবার সাথে সাথে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।
Annanya Dey