advertisement

দোলযাত্রা (Doljatra) 2024

দোলযাত্রা

প্রতি বছরই একদিন আগে ও একদিন পরে উদযাপিত হয় দোল ও হোলি উৎসব ।দুটোই রঙ খেলার উৎসব হলেও প্রকৃতিগত দিক থেকে দুই উৎসব আলাদা। গত দুই বছর কোভিড অতিমারীর জন্য সেভাবে এই উৎসব পালিত হয়নি। তবে এই বছর বেশ ভাল ভাবেই পালিত হয়েছে দোল ও হোলি। ছোট বড় সবাই মেতে উঠেছিল রঙের খেলায়। আবির আর পিচকারিতে সেজে উঠেছিল গোটা দেশ।

তবে পশ্চিমবঙ্গে উদযাপিত দোলযাত্রা বা দোল উৎসব অনেকটাই আলাদা ভারতীয় হোলির চেয়ে।

কাকে বলে দোলযাত্রা?

দোলযাত্রা বা দোলপূর্ণিমা পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয় ভগবান কৃষ্ণকে উৎসর্গ করে। বেশিরভাগ সময়েই  উত্তর-ভারতীয় উৎসব হোলির দিন বা তার আগের দিন উদযাপিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, ওড়িশা এবং অন্যান্য রাজ্যের কিছু অংশেও দোলযাত্রা পালিত হয়। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দোলযাত্রা হল বছরের শেষ উৎসব। দোল উৎসব উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বসন্ত ঋতুকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। এটি একটি আনন্দ উৎসব,তাই অনেকেই বাড়িতে দোলের পূজা অনুষ্ঠিত করে। এই দিন দুধের সঙ্গে ভাঙ মিশিয়ে পান করার রেওয়াজ আছে।

তবে আলাদা দিন পালিত হলেও হোলি এবং দোল উভয়ই একই উৎসবের প্রতীক। হিন্দু পুরাণে হোলিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কিংবদন্তি কাহিনী বর্ণনা করা আছে।

হোলির উৎসবের সঙ্গে জড়িত আছে বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতার ও ভক্ত প্রহ্লাদের কাহিনী। আবার বাঙালিদের দোল পালিত হয় কৃষ্ণ এবং রাধাকে ঘিরে। কৃষ্ণও বিষ্ণুর অবতার। বৃন্দাবনে ফাল্গুনে (বাংলা ক্যালেন্ডারে একটি মাস) পূর্ণিমার রাতের পরের দিন থেকে দোল শুরু হয়। কিংবদন্তী অনুসারে, এই দিনেই কৃষ্ণ তাঁর ‘সখীদের’ সঙ্গে দোল খেলার সময় তাঁদের মুখে ‘ফাগ’ (আবিরের মতো পাউডার রঙ) নিক্ষেপ করে রাধার প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছিলেন। দোল শব্দের আক্ষরিক অর্থ দোলনা। প্রায়শই কৃষ্ণের রাধা ও সখীদের সঙ্গে দোলনাতে দোলার উল্লেখ পাওয়া যায় ধর্মগ্রন্থে। বলা হয়, রঙ লাগানোর পর, সখীরা দু’জনকে পালকি বা দোলাতে চড়িয়ে মিলনের মুহূর্ত উদযাপন করেছিলেন। এই দোলা বা পালকি কিছু পথ অতিক্রম করে যার অর্থ যাত্রা। এভাবেই দোলযাত্রা পালিত হয়। আজও, ঐতিহ্যবাহী বাঙালি দোল যাত্রা শুকনো রঙ বা আবির দিয়ে খেলা হয়।

দোল ও হোলি

হোলির কিংবদন্তীর সঙ্গে ঘিরে আছে হোলিকা ও তার ভাইপো প্রহ্লাদ। প্রহ্লাদ ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত। হোলিকা তাই ভাইপোকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। শিশু প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেয় হোলিকা। সে ছিল জাদুবিদ্যা ও ডাকিনীবিদ্যায় দক্ষ। হোলিকা আত্মবিশ্বাসী ছিল যে আগুন তার কোনও ক্ষতি করবে না, কেন না সে আগুনে না পোড়ার বর পেয়েছিল। আগুন দেখে প্রহ্লাদ এক মনে বিষ্ণুর জপ করতে শুরু করে। শুদ্ধ মনের অধিকারী প্রহ্লাদের আগুনে কিছু হয় না। অথচ হোলিকা আগুনে পুড়ে মরে যায়। সেই থেকেই দিনটি হোলি হিসাবে পালিত হয়। হোলিকার নাম থেকেই এই শব্দটি এসেছে। হোলির আগের দিন কাঠকুঠো, শুকনো গাছের ডাল সব একসঙ্গে করে জ্বালানো হয়। উত্তর ভারতে একে হোলিকা দহন বলা হয়ে থাকে।

আরো দেখুন …

সব খবর

advertisement
advertisement