Charak Festival 2022|| অসময়ে আগমনীর সুর, চরক উৎসবে মহিলা ঢাকিদের জাদুতে মাতল কাঁকসা

*দেবীর বোধনের এখনও দু'মাসের বেশি সময় বাকি। তবে তার আগেই যেন দেবীর আগমনের এক প্রস্থ মহড়া হয়ে গেল কাকশাই কাঁকসায়। আষাঢ় মাসে চড়কে একদল মহিলা ঢাকির ঢাকের লড়াইকে কেন্দ্র করে এমনই ছবি ফুটে উঠল কাঁকসার মাধবমাঠ এলাকায়। প্রতিবেদন ও ছবি: নয়ন ঘোষ। 

*চড়ক উপলক্ষে চলতি বছরে একদল মহিলা ঢাকির লড়াই মাতিয়ে তুলেছিল সবাইকে। যা দেখতে ভিড় করেছিলেন বহু মানুষ। একরঙা শাড়ি পড়ে কাঁধে ঢাক নিয়ে মহিলাদের একই তালে নেচে উঠতে দেখে কোমর দুলিয়েছেন নবীন থেকে প্রবীণ সকলেই। মহিলাদের এই ঢাকের লড়াইয়ে মাধবমাঠে অসময়ে ফুটে উঠেছিল দেবী দুর্গার আগমনের স্বাদ।

*করোনা আবহ কাটিয়ে দু'বছর পর মহা ধুমধামে কাঁকসার মাধবমাঠ ধর্মরাজের গাজনের আয়োজন করা হয়। গাজন উপলক্ষে উৎসবে মেতে ওঠেন কাঁকসার মাধবমাঠ সহ আশেপাশের গ্রামের মানুষ।

*রাত গাজনের পর দুপুর থেকে শুরু হয় দিন গাজন। এ দিন দুপুরে কাঁকসার মাধবমাঠ অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় অংশ নেন কয়েকশো মানুষ।

*তবে এদিন সবথেকে বেশি সকলের নজর কাড়ে মহিলা ঢাকির দল। দিন গাজন উপলক্ষে মহিলা ঢাকির দল ঢাক বাজিয়ে সকলের নজর কাড়ে।উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে ধর্মরাজের গাজন অনুষ্ঠিত হয়।

*তবে করোনার জন্য দু-বছর কোনও রকমে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। এ বছর করোনার প্রকোপ তেমন না থাকায়, মহা ধুমধামে পুজোর আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার এলকার মানুষ এই উৎসবে সামিল হয়েছিলেন। দু'বছর পর আয়োজিত পুজোর সেই পুরনো আমেজ আবার ফিরিয়ে আনতে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে মহিলা ঢাকিদের নিয়ে আসা হয়েছিল।

*তবে তাদের লড়াই যে এত আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, বা স্থানীয়দের এত বেশি আকর্ষণ করবে, তা আশা করেননি উদ্যোক্তারা। এ দিন মাধবমাঠের চড়ক উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিল মা সরস্বতী মহিলা ঢাকি সমিতি।

*মহিলা ঢাকি সমিতির সদস্য মানস দাস জানিয়েছেন, বিগত চার বছর ধরে এই মহিলা ঢাকিরা বিভিন্ন জায়গায় তাদের ঢাকের লড়াই দেখাচ্ছেন। মন্তেশ্বর থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে তারা এই মহিলা ঢাকি সমিতি তৈরি করেছেন। গ্রামের পুরুষ ঢাকিরাই মহিলাদের এই পেশার দিকে এগিয়ে দিয়েছেন। গ্রামের পুরুষ ঢাকিদের বক্তব্য, যদি ছেলেরা ঢাক বাজাতে পারে, তাহলে মেয়েরা কেন পারবে না। এই চিন্তা নিয়ে তারা গঠন করেছিলেন মহিলা ঢাকির দল, যা আজ সফল হয়েছে।

*কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই মহিলা ঢাকির দল নিজেদের ঢাকের লড়াই দেখিয়ে দর্শকদের বাহবা কুড়িয়ে এনেছে। সরকারি সাহায্য না পেলেও, মহিলা ঢাকিয়া এই কাজ চালিয়ে যেতে চান আগামী দিনেও।