Durga Puja 2025: অসমাপ্ত অবস্থায় শেষ হয়েছিল দুর্গাপুজো! দাঁইহাটে আজও হয় ভাস্কর পণ্ডিতের পুজো, জড়িয়ে আছে বর্গী আক্রমণের ইতিহাস

Last Updated:
Bhaskar Pandit Unfinished Durga Puja: বেগতিক অবস্থা দেখে ভাস্কর পণ্ডিত নিজের অসমাপ্ত দুর্গাপুজো ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কথিত আছে, দেবীমূর্তি যাতে অপবিত্র না হয়, তাই বিদায়ের সময় তিনি সেই দুর্গামূর্তি ভাগীরথীর জলে বিসর্জন দেন। অসমাপ্ত অবস্থাতেই শেষ হয় বর্গী সেনাপতির দাঁইহাটের দুর্গোৎসব।
1/7
'ছেলে ঘুমাল, পাড়া জুড়াল, বর্গি এল দেশে', এই প্রাচীন ছড়া আজও বাংলার গ্রামবাংলায় মা-ঠাকুমাদের মুখে শোনা যায়। প্রায় ২৮৩ বছর আগে বাংলায় ঘটে যাওয়া বর্গি আক্রমণের ভয়াবহ স্মৃতি আজও লোককথার মতো বেঁচে আছে। সেই ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দাঁইহাটে ভাস্কর পণ্ডিতের অসমাপ্ত দুর্গাপুজোর কাহিনী। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
'ছেলে ঘুমাল, পাড়া জুড়াল, বর্গি এল দেশে', এই প্রাচীন ছড়া আজও বাংলার গ্রামবাংলায় মা-ঠাকুমাদের মুখে শোনা যায়। প্রায় ২৮৩ বছর আগে বাংলায় ঘটে যাওয়া বর্গি আক্রমণের ভয়াবহ স্মৃতি আজও লোককথার মতো বেঁচে আছে। সেই ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দাঁইহাটে ভাস্কর পণ্ডিতের অসমাপ্ত দুর্গাপুজোর কাহিনী। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
advertisement
2/7
১৭৪২ সালে প্রায় চল্লিশ হাজার মারাঠা সৈন্য নিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেন বর্গি সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিত। নবাব আলীবর্দী খাঁ তখন বর্ধমানে অবস্থান করছিলেন। ঠিক সেই সময় নবাবের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় বর্গিরা। তাঁরা নবাবের কাছে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করে বসে। নবাব দাবি মানতে অস্বীকার করলে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।
১৭৪২ সালে প্রায় চল্লিশ হাজার মারাঠা সৈন্য নিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেন বর্গি সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিত। নবাব আলীবর্দী খাঁ তখন বর্ধমানে অবস্থান করছিলেন। ঠিক সেই সময় নবাবের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় বর্গিরা। তাঁরা নবাবের কাছে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করে বসে। নবাব দাবি মানতে অস্বীকার করলে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।
advertisement
3/7
গেরিলা যুদ্ধে পারদর্শী বর্গীদের মোকাবিলা করতে প্রথমে হিমশিম খেতে হয় নবাবের সেনাকে। নবাবের পিছনে ধাওয়া করতে করতে ভাস্কর পণ্ডিত কাটোয়ায় এসে পৌঁছন। সেখানে দাঁইহাটের বর্ধমান রাজাদের কাছারিবাড়ি দখল করে তাঁরা নিজেদের আস্তানা বানিয়ে নেন। এরপর দাঁইহাট, কাটোয়া ও আশেপাশের এলাকায় শুরু হয় বর্গীদের ভয়ঙ্কর লুটপাট।
গেরিলা যুদ্ধে পারদর্শী বর্গীদের মোকাবিলা করতে প্রথমে হিমশিম খেতে হয় নবাবের সেনাকে। নবাবের পিছনে ধাওয়া করতে করতে ভাস্কর পণ্ডিত কাটোয়ায় এসে পৌঁছন। সেখানে দাঁইহাটের বর্ধমান রাজাদের কাছারিবাড়ি দখল করে তাঁরা নিজেদের আস্তানা বানিয়ে নেন। এরপর দাঁইহাট, কাটোয়া ও আশেপাশের এলাকায় শুরু হয় বর্গীদের ভয়ঙ্কর লুটপাট।
advertisement
4/7
এমন সময় বাংলার আকাশে ভেসে আসে শারদ উৎসবের আমেজ। চারিদিকে দুর্গাপুজোর আবহ ছড়িয়ে পড়ে। বর্গী সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিতও ঠিক করেন, তিনি দাঁইহাটে দুর্গাপুজো করবেন। সেই মতো শুরু হয় প্রস্তুতি। আশেপাশের গ্রাম ও নগর থেকে নানা নজরানা আসতে থাকে। আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে বর্গী শিবির।
এমন সময় বাংলার আকাশে ভেসে আসে শারদ উৎসবের আমেজ। চারিদিকে দুর্গাপুজোর আবহ ছড়িয়ে পড়ে। বর্গী সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিতও ঠিক করেন, তিনি দাঁইহাটে দুর্গাপুজো করবেন। সেই মতো শুরু হয় প্রস্তুতি। আশেপাশের গ্রাম ও নগর থেকে নানা নজরানা আসতে থাকে। আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে বর্গী শিবির।
advertisement
5/7
এমন সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন আলীবর্দী খাঁ। মহানবমীর সন্ধ্যারতি শেষ হতেই ১৭৪২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভাগীরথী নদী পেরিয়ে নবাবের সেনারা দাঁইহাটে বর্গীদের পুজোমণ্ডপে অতর্কিতে হামলা চালায়। অপ্রস্তুত বর্গীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। যুদ্ধের ময়দানে আর দাঁড়াতে না পেরে তাঁরা পিছোতে শুরু করে।
এমন সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন আলীবর্দী খাঁ। মহানবমীর সন্ধ্যারতি শেষ হতেই ১৭৪২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভাগীরথী নদী পেরিয়ে নবাবের সেনারা দাঁইহাটে বর্গীদের পুজোমণ্ডপে অতর্কিতে হামলা চালায়। অপ্রস্তুত বর্গীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। যুদ্ধের ময়দানে আর দাঁড়াতে না পেরে তাঁরা পিছোতে শুরু করে।
advertisement
6/7
অবস্থা বেগতিক দেখে ভাস্কর পণ্ডিত নিজের অসমাপ্ত দুর্গাপুজো ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কথিত আছে, দেবীমূর্তি যাতে অপবিত্র না হয়, তাই বিদায়ের সময় তিনি সেই দুর্গামূর্তিকে ভাগীরথীর জলে বিসর্জন দেন। অসমাপ্ত অবস্থাতেই শেষ হয় বর্গী সেনাপতির দাঁইহাটের দুর্গোৎসব।
অবস্থা বেগতিক দেখে ভাস্কর পণ্ডিত নিজের অসমাপ্ত দুর্গাপুজো ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কথিত আছে, দেবীমূর্তি যাতে অপবিত্র না হয়, তাই বিদায়ের সময় তিনি সেই দুর্গামূর্তিকে ভাগীরথীর জলে বিসর্জন দেন। অসমাপ্ত অবস্থাতেই শেষ হয় বর্গী সেনাপতির দাঁইহাটের দুর্গোৎসব।
advertisement
7/7
আজও দাঁইহাটে বর্ধমান রাজাদের তৈরি কাছারিবাড়ির ধ্বংসাবশেষ দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেখানেই ভাস্কর পণ্ডিত দুর্গাপুজো করেছিলেন। সেই ইতিহাস স্মরণ করে এখনও দাঁইহাটে ভাস্কর পণ্ডিত দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। অতীতের রক্তক্ষয়ী আক্রমণ ও অসমাপ্ত পুজোর স্মৃতিকে ঘিরে আজও উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো শহর। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
আজও দাঁইহাটে বর্ধমান রাজাদের তৈরি কাছারিবাড়ির ধ্বংসাবশেষ দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেখানেই ভাস্কর পণ্ডিত দুর্গাপুজো করেছিলেন। সেই ইতিহাস স্মরণ করে এখনও দাঁইহাটে ভাস্কর পণ্ডিত দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। অতীতের রক্তক্ষয়ী আক্রমণ ও অসমাপ্ত পুজোর স্মৃতিকে ঘিরে আজও উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো শহর। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
advertisement
advertisement
advertisement