Ashram: নেতাজি, ভগত সিংয়ের পায়ের ধুলো পড়েছে বাংলার এই আশ্রমে, এখন সেই জায়গা অনাদরে পড়ে! নষ্ট হতে পারে স্বাধীনতার ইতিহাস
- Published by:Suman Majumder
- hyperlocal
- Reported by:Sayani Sarkar
Last Updated:
East Bardhaman- দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ যেখানে নিহিত রয়েছে, সেই জায়গাই এখন অনাদরে, অবহেলায় পড়ে আছে! সংরক্ষণে উদ্যোগী না হলে এই ইতিহাস শেষ হয়ে যাবে। তাই চান্না আশ্রমের পরিচালন কমিটি চাইছে সরকার অধিগ্রহণ করুক এই আশ্রম।
advertisement
ব্রিটিশ শাসন উৎখাত করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে চন্দন গাছের জঙ্গলে ঘেরা খড়ি নদীর পারে গলসীর চান্নাগ্রামে ১৯০৭ সাল নাগাদ বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় ওরফে শ্রীমৎ স্বামী নিরালম্ব প্রতিষ্ঠা করেন এক আশ্রম, যা পরবর্তীকালে চান্না আশ্রম নামে খ্যাতি লাভ করে। তৎকালীন সময়ে এই আশ্রমই ছিল ভারত তথা বাংলার বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গোপন ডেরা।
advertisement
গ্রামের একপ্রান্তে বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করেছিলেন এই আশ্রম। যার ভৌগোলিক অবস্থান রয়েছে নজরকাড়া। মনে করা হয়, স্বাধীনতা আন্দোলনের সুবিধার জন্যই তৎকালীন এই নির্জন জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল ভেবে চিন্তেই। চন্দন গাছের জঙ্গলে ঘেরা এই আশ্রম এলাকা চন্দনা নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে চন্দনা চলতি ভাষায় চান্না-য় পরিণত হয়।একদিকে গলসি থানা, অন্যদিকে আউসগ্রাম ও ভাতার ও বর্ধমান থানার সীমানায় বসে গুপ্তভাবে এই সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। আশ্রম মানে দেশের স্বাধীনতার জন্য গোপন কার্যকলাপ চালানোর আস্তানা। প্রায় ২৫ বিঘে জমির উপর তৈরি হয়েছিল একটি খড়ের চালের ঘর।
advertisement
বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ থেকে উজ্জীবিত হয়ে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার মুরারিপুকুরে ব্রিটিশের উপর বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন যতীন্দ্রনাথ। পঞ্জাবের গদর পার্টির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রেখে দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখতেন এই আশ্রমে বসেই। সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক সিধু-কানহুর সঙ্গে এখানেই বসে আলোচনা করেছেন দিনের পর দিন। চান্না আশ্রমে এসেছিলেন ভগত সিং, ভগত সিংয়ের বাবা কিষেণ সিং, বটুকেশ্বর দত্ত, লালা লাজপত রায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, অরবিন্দ ঘোষ, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত মতো বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত জেগে তাঁরা দেশকে স্বাধীন করার পরিকল্পনা করেছেন চান্না আশ্রমে বসে।
advertisement
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ যেখানে নিহিত রয়েছে, সেই জায়গাই এখন অনাদরে অবহেলায়। সংরক্ষণে উদ্যোগী না হলে এই ইতিহাস নষ্ট হয়ে যাবে। তাই চান্না আশ্রমের পরিচালন কমিটি থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা সকলেই চাইছে সরকার অধিগ্রহণ করুক এই আশ্রম। বাঁচিয়ে রাখুক স্বাধীনতার ইতিহাসকে। (চিত্র ও তথ্য সূত্র: সায়নী সরকার)