দেবীকে বিদায় জানিয়ে নতুন উৎসবে মাতল পুজো কমিটিগুলি! পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বসিরহাটে কী চলছে দেখুন

উৎসবের ঢাকের শব্দ থেমে গেলেও হিঙ্গলগঞ্জে এখন এক নতুন সুর ধ্বনিত হচ্ছে, সবুজের জয়গান। পূজোর আনন্দের মাঝেই বসিরহাট জেলা পুলিশ পরিবেশ সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার লক্ষ্যে এক অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই সবুজ বিপ্লব উৎসবের উদযাপনে এক নতুন এবং স্থায়ী মাত্রা যোগ করেছে। <strong>(ছবি ও তথ্য় - জুফিকার মোল্যা)</strong>

বসিরহাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে হিঙ্গলগঞ্জ থানার অন্তর্গত প্রায় একশোটি পুজো কমিটিকে অন্তত দশটি করে চারা রোপণের আহ্বান জানানো হয়। পুজো কমিটিগুলির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে প্রায় এক হাজার এবং হিঙ্গলগঞ্জ থানার নিজস্ব উদ্যোগে আরও ১০০টি চারা রোপণ করা হয়, যার ফলে মোট ১১০০টি নতুন গাছ হিঙ্গলগঞ্জের মাটিতে প্রাণ পেল।

সুন্দরবনের নিকটবর্তী হওয়ায় হিঙ্গলগঞ্জ প্রতি বছর নদীভাঙন, ভূমিক্ষয় এবং বিধ্বংসী ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি তাই কেবল একটি প্রতীকী পদক্ষেপ নয়, বরং এই অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী করে ভূমিক্ষয় ও ঝড়ের তীব্রতা কমানোর একটি সুচিন্তিত প্রয়াস।

পুলিশের এই উদ্যোগে স্থানীয় মানুষ আন্তরিকভাবে সাড়া দিয়েছে, যা এই কর্মসূচিকে একটি গণ-আন্দোলনের রূপ দিয়েছে। কেউ পুজোমণ্ডপের পাশে, আবার কেউ বাড়ির সামনে চারা রোপণ করে পুজোর আনন্দের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার অঙ্গীকারকে যুক্ত করেছেন, যা এই উদ্যোগের প্রকৃত সাফল্য।

বসিরহাট জেলা পুলিশের এই দূরদর্শী ভাবনাকে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এবং সুন্দরবন বিষয়ক গবেষক অনিমেষ মন্ডল সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে এবং সুন্দরবনের ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় এক নতুন পথের দিশা দেখায়।

পুজোর উৎসব শেষ, কিন্তু সুন্দরবন এলাকায় সবুজের উৎসব সবে শুরু হয়েছে। বসিরহাট জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ আগামী দিনে হিঙ্গলগঞ্জকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হয়ে থাকবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুরক্ষিত পরিবেশ গড়ার বার্তা দেবে। <strong>(ছবি ও তথ্য় - জুফিকার মোল্যা)</strong>