'হাত দিলেই হাতকড়া'! হচ্ছেটা কী দিঘায়! জানুন পুরো ঘটনা, জানলে স্যালুট জানাবেন বন দফতরকে
- Published by:Ananya Chakraborty
- hyperlocal
- Reported by:Madan Maity
Last Updated:
প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই জায়গাগুলোতে বেড়াতে আসেন। এই জায়গাগুলোতে প্রচার চালালে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের মধ্যেও বার্তা ছড়িয়ে পড়বে।
ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দেশীয় টিয়া, চন্দনা ও পাহাড়ী ময়না বিক্রি বা বাড়িতে খাঁচায় পোষা বেআইনি। অথচ অনেকেই আইন না জেনে সখের বসে এই পাখিগুলি পালন করেন, যা তাদের স্বাভাবিক জীবন ও বংশবৃদ্ধিকে বিপন্ন করে। এবার সেই প্রবণতা রুখতে পুজোর আগে উদ্যোগ নিয়েছে বন দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র দিঘা, মন্দারমনি, শংকরপুর ও তাজপুরে বড় আকারে হোর্ডিং লাগিয়ে সচেতনতা প্রচার চালানো হবে, যাতে মানুষ আইন সম্পর্কে অবগত হন। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রচার অভিযান চালানো হবে তারপরও কাজ না হলে কড়া পদক্ষেপ নেবে বন দফতর। (তথ্য ও ছবি : মদন মাইতি)
advertisement
দিঘা সহ জেলা জুড়ে শুরু হবে বন দফতরের এই সচেতনতা প্রচার। নিউ দিঘা, ওল্ড দিঘা, শংকরপুর, তাজপুর, মান্দারমনি ও জুনপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকায় হোর্ডিং লাগানো হবে। বন দফতরের দাবি, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই জায়গাগুলোতে বেড়াতে আসেন। এই জায়গাগুলোতে প্রচার চালালে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের মধ্যেও বার্তা ছড়িয়ে পড়বে। একই সঙ্গে কাঁথি ও রামনগরের মতো জনবহুল এলাকা গুলিতেও বিশেষভাবে প্রচারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
advertisement
সম্প্রতি দেখা গেছে, অনেকেই আইন না জেনে খাঁচাবন্দি টিয়া ও চন্দনা বাড়িতে পুষছেন। প্রথমে বন দফতর সাধারণ মানুষকে আইন সম্পর্কে সচেতন করবে। বিভিন্ন প্রচার কর্মসূচির মাধ্যমে বোঝানো হবে যে সংরক্ষিত পাখি পোষা বেআইনি। তাতেও যদি কাজ না হয়, তবে বনকর্মীরা সরাসরি উদ্ধার অভিযানে নামবেন। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই জেলা জুড়ে বন দফতরের তরফে সচেতনতা প্রচার ও নজরদারি চলবে বলে জানানো হয়েছে।
advertisement
কাঁথি বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসার অতুল প্রসাদ দে জানান, “সংরক্ষিত প্রজাতির টিয়া ও চন্দনা রাখা কিংবা বিক্রি সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। প্রথম ধাপে প্রচার ও সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হবে। মানুষকে বোঝানো হবে যে এই টিয়াপাখিদের মুক্ত আকাশেই থাকা উচিত। কিন্তু যদি তাতেও আইন ভঙ্গ চলতে থাকে, তবে নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে সরাসরি উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। প্রয়োজনে খাঁচাবন্দি পাখি মুক্ত করে দেওয়া হবে প্রাকৃতিক পরিবেশে।”
advertisement
জেলার বিভিন্ন মেলায় টিয়া, চন্দনা ও ময়না পাখি বিক্রির ঘটনা প্রায়শই চোখে পড়ে। বন দফতর জানাচ্ছে, মেলা, বাজার কিংবা বাসস্ট্যান্ডের মতো জায়গায় এবার থেকে হোর্ডিং লাগিয়ে আইন ভঙ্গের পরিণতি বোঝানো হবে। আইন ভঙ্গ করলে অভিযুক্তের ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। পাশাপাশি তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডেরও বিধান রয়েছে। আগেও দেখা গেছে, মেলায় অভিযান চালিয়ে বন দফতরের হাতে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর খাঁচাবন্দি টিয়া ও ময়না।
advertisement
এগরা পুরসভার জীববৈচিত্র্য কমিটির সভাপতি ও এগরা কলেজের অধ্যাপক ড. সুদীপ্ত কুমার ঘোড়াই বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে বাড়িতে সংরক্ষিত প্রজাতির টিয়া বা চন্দনা রাখা একেবারেই বেআইনি। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এসব পাখি প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে অভ্যস্ত, তাই খাঁচাবন্দি জীবনে তাদের জীবন বিপন্ন হয়। শুধু তাই নয়, স্বাভাবিকভাবে বংশবিস্তারও বাধাগ্রস্ত হয়। বন দফতরের এই উদ্যোগ সচেতনতা বাড়াবে এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।"