সোনার বদলে নুনেই ভাগ্যের খোঁজ, হঠাৎ বেড়ে গেল চাহিদা! দোকানে দোকানে আকাল, কী চলছে এখানে?

ধনতেরাসে ভিড় নুন কিনতে, হাবরা-অশোকনগরে দোকান জুড়ে যেন নুনের আকাল। হাবরা, অশোকনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মুদি দোকানগুলিতে ভিড় উপচে পড়েছে। তবে সোনা, রুপো বা পিতল নয়, মানুষ এবার ছুটছেন নুন কিনতে।

ধনতেরসে নুন কেনার বিশেষ প্রথা মেনেই আজ বহু মানুষ এক মুঠো বা এক প্যাকেট নুন কিনছেন শুভ লক্ষ্মী ও সমৃদ্ধির আশায়। আর তাই দোকানদারদের মুখে এখন রীতিমতো হাসি। একদিনেই নুনের বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, গত কয়েক বছর ধরে ধনতেরাসে সোনা বা ধাতব দ্রব্য কেনার পাশাপাশি ঝাঁটা কেনার প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। তবে এবার দেখা যাচ্ছে নুন কেনার হিড়িক। অনেক দোকানে দুপুরের পরই নুন প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। এক দোকানদার জানান, এত নুন বিক্রি আগে কখনও হয়নি। দুপুরের মধ্যেই পুরো স্টক শেষ। বিশ্বাস অনুযায়ী, ধনতেরাসে নুন কেনা মানেই অশুভ শক্তি ও দারিদ্র্য দূর হওয়া।

জ্যোতিষীরা জানাচ্ছেন, ২০২৫ অনেক ক্ষেত্রেই শুভ যাচ্ছেনা মানুষের। তাই নজর কাটাতে আচার অনুসারে, এই দিনে নুন কেনা শুভ বলে মনে করা হচ্ছে।আয়ুর্বেদ অনুযায়ী নুন শরীর ও মন পরিশুদ্ধ করে। তাই অনেকে মনে করেন, ধনতেরাসে নতুন নুন ঘরে আনলে জীবনের ভারসাম্য বজায় থাকে। কেউ কেউ আবার পুজোর পর সেই নুনে সামান্য চন্দন ও ফুল মিশিয়ে রাখেন ঘরের উত্তর-পূর্ব দিকে, যাতে লক্ষ্মীর কৃপা থাকে সারাবছর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ধনতেরসের দিনে নুন কেনার সময় কিছু নিয়ম মানা প্রয়োজন। নিজের টাকায় নুন কিনতে হয়, ধার করে নয়। পুরনো নুন এদিন ফেলে দেওয়া বা বিক্রি করা অশুভ। কেউ কেউ নুনজল দিয়ে ঘর মুছে নেন, এতে নেতিবাচক শক্তি দূর হয় বলে বিশ্বাস। উত্তর ভারতের বহু জায়গার মতোই এখন উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা ও অশোকনগরেও এই নুন কেনার ধনতেরাস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

পাশাপাশি ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, এদিন দেবী লক্ষ্মী, কুবের ও ধন্বন্তরির পুজো করা হয়। তাই অনেকেই নতুন পাত্রে বা কাঁচের বাটিতে নুন রেখে পুজো দেন। তাঁদের মতে, এই নুনই ঘরে এনে দেয় আর্থিক উন্নতি, শান্তি ও সমৃদ্ধি। এ যেন সময়ের সঙ্গে বদলে যাওয়া প্রথার নতুন চেহারা, সোনার বদলে নুনেই আজ ভাগ্য গড়ছেন হাবরা, অশোকনগরের মানুষ।