বৃষ্টিতে জলে ডুবে বসিরহাট, সবজি থেকে মাছের আকাশছোঁয়া দামে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের

লাগাতার বৃষ্টিতে সবজি গাছ নষ্টবসিরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় টানা বৃষ্টির ফলে সবজি চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সাতটি ব্লক—স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, বসিরহাট ১ ও ২ নম্বর, হাসনাবাদ, মিনাখাঁ ও হাড়োয়া—পুরোপুরি জলের তলায় চলে যাওয়ায় গাছের গোড়ায় জল জমে মরতে বসেছে সবজি গাছ। এর ফলে মাঠ থেকে ফসল বাজারে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

চাষিরা ফসল তুলতে না পারায় বাজারে সবজির অমিল দেখা দিয়েছে। যে সবজি আগে সহজলভ্য ছিল, তা এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে খুবই কম। অল্প কিছু আসলেও তা ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সবজি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মাঠের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা চরম সমস্যায় পড়েছেন।

সবজি অমিলের কারণে বাজারে লাগামছাড়া দাম। ঢ্যাঁড়স ও শশা ৬০ টাকা কেজি, উচ্ছে ৭০ টাকা, ঝিঙ্গে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা পিস, ফুলকপি ৬০ টাকা পিস, টমেটো ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যে সবজি আগে ৩০–৪০ টাকায় মিলত, তার দাম এখন দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।

শুধু সবজি নয়, মাছ চাষও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে পুকুর থেকে মাছ বেরিয়ে যাচ্ছে, আবার অতিরিক্ত জলে মাছ ধরা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছও প্রায় নেই বললেই চলে। যেটুকু সামান্য পাওয়া যাচ্ছে তা অগ্নিমূল্যে বিক্রি হচ্ছে।

চাষিরা মাঠ থেকে ফসল তুলতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য না পাওয়ায় সমস্যায় পড়ছেন। ফলে উভয়পক্ষই আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত। এতে দ্রব্যমূল্য আরও অস্থির হয়ে পড়ছে।

সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে গিয়ে ৫০০ টাকা খরচ করলেও অল্প কিছু সবজি ও মাছ কেনা যাচ্ছে। এক ক্রেতা বলেন, “যেখানে আগে ৫০০ টাকায় ভালো করে বাজার হতো, এখন সেখানে ছোট একটি ব্যাগও ভর্তি হচ্ছে না।” ফলে বাজারের এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ক্রেতা, বিক্রেতা ও উৎপাদনকারীদের সমানভাবে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে।