লকডাউনে ফিরে গিয়েছিলেন বাড়িতে, মেমারি বাজারে মাছ বেচছেন টলিউডের এই অভিনেতা
- Published by:Debalina Datta
- news18 bangla
Last Updated:
রাশি, অগ্নিপরীক্ষার মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক এবং তোর নাম, নিউ নর্মালে টলি পাড়া ছেড়ে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন প্রতিভাবান অভিনেতা
#মেমারি: অভিনয়ই ছিলো একমাত্র নেশা। সেই নেশাকেই পেশা হিসেবে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিলেন বছর তেত্রিশের যুবক। সেই স্বপ্নপূরণ হওয়ার মধ্যেই করোনার সংক্রমণের জেরে লকডাউনে পেট চালাতে এখন মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁকে। সিনেমা ও ধারাবাহিকে একাধিক চরিত্রে অভিনয় করলেও, জীবনের বাস্তব চরিত্রে এখন সে মাছ বিক্রেতা। মেমারির স্টেশন বাজারে প্রতিদিন সকালে মাছের খদ্দের সামলানোই এখন তাঁর মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেমারির সোমেশ্বরতলার যুবক অরিন্দম প্রামানিকের জীবন সংগ্রাম এখন দৃষ্টান্ত এলাকার মানুষের কাছে।
advertisement
গত বছর লক ডাউনের সময় টলি পাড়া ছেড়ে মেমারির বাড়িতে চলে আসেন তিনি। তখনও জানতেন না, অতিমারি এভাবে গ্রাস করবে তাঁর স্বপ্নের পেশাকে। ক্যামেরার সামনে একের পর এক চরিত্রে সাবলীল ভূমিকায় অভিনয় করলেও জীবনের রঙ্গমঞ্চে মাছ নিয়ে রাস্তার ধারে বসে বিক্রি করাটা তাঁর কাছে মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু উপায় নেই। বাবা মা ও স্ত্রীর সংসারে টানাটানি ছিলই। বাবার ৪০ বছরের সব্জির দোকানে বছর খানেক আগে থেকে খুব একটা বেচাকেনা ছিল না। তাঁর অভিনয় পেশার উপরেই ভরসা চারজনের পরিবারের। তাই বাধ্য হয়েই পৈতৃক সেই দোকানকেই মাছের দোকানে বদলে ফেলেন অরিন্দম।
advertisement
গত বছর লকডাউনের সময় থেকে নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে বড়ো ছোট মাছ নিয়ে ক্রেতাদের মন জয় করার চেষ্টা চলে তাঁর। কখনো হাসি মুখে অভিনয়ের দু'এক লাইন সংলাপ উপরি পাওনা ক্রেতাদের। একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে নাট্যকার ও নির্দেশক চন্দন সেনের নাটকের দলে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল অরিন্দমের। ২০১১ সালেসুবর্ণলতা মেগা সিরিয়ালে 'খোকা' চরিত্রে তাঁর পরিচিতি বাড়িয়েছিল। বাংলা ছাড়িয়ে ওপার বাংলার দর্শকেরাও তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপর একের পর এক ধারাবাহিকে তিনি অভিনয়ের দক্ষতার পরিচয় দেন। রাশি, অগ্নিপরীক্ষার মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক এবং তোর নাম, হারাকিউলিসের মতো কয়েকটি চলচিত্রের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ বসু ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার ভালো অভিনয়ের খ্যাতিতে নিয়মিত কাজের পরিসর বাড়তে থাকে। এমন সময় করোনার প্রকোপ ও লক ডাউন জীবনের গতিপথ পাল্টে এখন রাস্তার ধারে ১৫ বাই ২০ ফুটের দোকানে রুই, কাতলা, ইলিশ ও চিংড়ি বিক্রি করেন তিনি।
advertisement
অরিন্দম বাবু বললেন, প্রথম পর্বের লকডাউনের পর যখন অর্ধেক ইউনিট নিয়ে টলিপাড়ায় কাজ শুরু হয়, তখন ফের অভিনয়ের ডাক এসেছিল। কিন্তু ভরসা করতে পারিনি। কারণ গত এক বছরে ধীরে ধীরে মাছের ব্যবসাটা গুছিয়ে নিয়েছি। পরিবারের এটাই একমাত্র আয়ের উৎস। তাই এটা ছেড়ে স্বপ্নের পেশায় যাওয়ার ঝুঁকিটা নিতে পারিনি।তাই আপাতত আমার পেশা মাছ বিক্রি করা।