World: একসময় পৃথিবীর মতোই গ্রহ ছিল, এখন আর গ্রহ নয় 'প্লুটো'! কেন জানেন, শুনে চমকে উঠতে বাধ্য হবেন
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
World: প্লুটো যখন গ্রহ ছিল তখনকার সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনায় এর আকার-আকৃতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।
advertisement
advertisement
প্লুটো যখন গ্রহ ছিল তখনকার সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনায় এর আকার-আকৃতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এর কক্ষপথ যেমন ছিল তেমনই রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্লুটোর কক্ষপথটি অতি বিশাল এবং সূর্যকে চক্রাকারে একবার ঘুরে আসতে এর সময় লাগে ২৪৮ বছর। একজন মানুষের জীবদ্দশাতেও সৌরজগতে প্লুটোর অবস্থানের খুব বেশি পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় না। তার পরও প্লুটো যদি এর আগে গ্রহ হয়ে থাকে, তাহলে এখন গ্রহ নয় কেন?
advertisement
প্লুটো কেন গ্রহ নয় সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে এর নাড়ি-নক্ষত্র সম্বন্ধে একটু জেনে নেওয়াই ভাল। প্লুটো আকাশের উজ্জ্বলতম বস্তুগুলোর একটি নয় এবং তাই খালি চোখে এটিকে শনাক্ত করার প্রশ্নও আসে না। প্রকৃতপক্ষে, প্লুটোর চেয়ে অনেক অনেক বিশাল এবং সূর্যের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও নেপচুনকে খালি চোখে দেখা যায় না। বরং নেপচুন গ্রহটি আবিষ্কার করা হয়েছিল ইউরেনাস গ্রহের কক্ষপথ পর্যবেক্ষণ করে আরেকটি গ্রহের উপস্থিতি অনুমান করে। নেপচুন আবিষ্কৃত হয় ১৮৪০-এর দশকে। নেপচুন আবিষ্কারের পর এর গতি পর্যবেক্ষণ করে নবম একটি গ্রহের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা অনুমান করা হয় উনিশ শতকের শেষাবধি। অজানা বলে এই গ্রহটির নাম দেওয়া হয় প্ল্যানেট এক্স, কেউ কেউ বলেন প্ল্যানেট নাইন।
advertisement
১৮৯৪ সালে ব্যবসায়ী পারসিভাল লয়েল আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য অ্যারিজোনায় লয়েল অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৬ সাল থেকে এই নবম গ্রহটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু হয়। ১৯০৯ সাল নাগাদ গ্রহটির সম্ভাব্য কয়েকটি অবস্থানের ঘোষণা দেওয়া হয় যদিও এটি তখনো পর্যবেক্ষণ করা যায়নি। ১৯১৬ সালে গ্রহটিকে শনাক্ত না করেই লয়েল মারা যান। তবে তার অজান্তেই ১৯১৫ সালে তার তোলা দুটি ছবিতে প্লুটোকে অস্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
advertisement
লয়েলের মৃত্যুর পর অবজারভেটরির কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে এবং অবশেষে ১৯২৯ সালে লয়েলের স্ত্রী কনস্ট্যান্স লয়েলের উদ্যোগে ক্লাইড টমবফ নামে ২৩ বছর বয়সী এক জ্যোতির্বিদকে নবম গ্রহটি খোঁজার কাজে নিয়োগ করা হয়। আগের মতোই টমবফের কাজ ছিল সম্ভাব্য অবস্থানে টেলিস্কোপ তাক করে আকাশের ছবি তোলা এবং পর পর তোলা ছবিগুলো মিলিয়ে দেখে গতিময় কোনো বস্তু নির্ণয় করা।
advertisement
বছরখানেক পর্যবেক্ষণ শেষে ১৯৩০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি টমবফ এ ধরনের একটি গতি শনাক্ত করেন। আরও কিছু পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়ার পর এই নতুন আবিষ্কারটিকে হার্ভার্ড কলেজ অবজারভেটরিতে প্রেরণ করা হয়। নতুন গ্রহটির আবিষ্কারে সারা পৃথিবীতে হইচই পড়ে যায় এবং বড় বড় সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়। এবার আসে এর নামকরণের পালা। হাজারেরও বেশি নামের প্রস্তাবনা শেষে এই গ্রহের নামকরণ করা হয় প্লুটো।
advertisement
advertisement
প্রাথমিকভাবে যে প্ল্যানেট এক্সের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল তার ভর ধরা হয়েছিল অনেক বেশি। কিন্তু প্লুটোর আবিষ্কারের পর এর গতিবিধি এবং অস্পষ্টতা দেখে সন্দেহ করা হলো এটি আগের অনুমানকৃত প্ল্যানেট এক্স নয় বরং অন্য একটি গ্রহ। জ্যোতির্বিদরা প্রাথমিকভাবে এর ভর নির্ণয় করেছিলেন নিকটবর্তী অন্য দুটি গ্রহ নেপচুন ও ইউরেনাসের কক্ষপথের ওপর এর অভিকর্ষের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে। ১৯৩১ সালে প্লুটো ভর নির্ণয় করা হয় পৃথিবীর ভরের কাছাকাছি।
advertisement
পরবর্তীতে আরও সূক্ষ্ম মাপে এর ভর কমে আসে এবং মঙ্গল গ্রহের কাছাকাছি নির্ণীত হয়। ১৯৭৬ সালে প্লুটোর বর্ণালি পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা হয় এর ভর পৃথিবীর ভরের ১ শতাংশের বেশি হবে না। ১৯৭৮ সালে প্লুটোর চাঁদ শ্যারন আবিষ্কৃত হলে এর ভর যথাযথভাবে নির্ণয় করার পথ খুলে যায়। বিভিন্ন হিসাবে দেখা যায় এর ভর হবে পৃথিবীর ভরের মাত্র ০.২ শতাংশ। এত সামান্য ভর নিয়ে প্লুটোর পক্ষে ইউরেনাস গ্রহের কক্ষপথে প্রভাব বিস্তার করা দুষ্কর। তাই ধারণা করা হয়, প্ল্যানেট এক্স গ্রহটি এখনো আবিষ্কৃত হয়নি যদিও তা বিদ্যমান আছে।