'স্যার! পেটটা ভীষণ ব্যথা করছে...'! হাসপাতালে পৌঁছলেন মহিলা, চিকিৎসক পরীক্ষা করতেই ধরা পড়ল ১৭ বছর আগের ভুল!

সন্ধ্যার আবছা আলোয় হাসপাতালের করিডোরে বসে ছিলেন এক মহিলা। যন্ত্রণা তার চোখেমুখে স্পষ্ট। চিকিৎসকের ঘরে ঢুকে কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন, "স্যার! পেটটা ভীষণ ব্যথা করছে..."!

প্রথমে সাধারণ পরীক্ষা, তারপর একের পর এক স্ক্যান। হঠাৎ এক্স-রে রিপোর্ট হাতে পেয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলেন চিকিৎসক। রোগীর চোখেমুখে উদ্বেগ, পরিবারের সদস্যদের নিঃশব্দ উৎকণ্ঠা। চিকিৎসকের কপালে গভীর ভাঁজ। রিপোর্টে যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা অবিশ্বাস্য!

সেদিনের সেই রহস্যময় যন্ত্রণা কী ভাবে এক ভয়ঙ্কর সত্য উন্মোচন করল? ১৭ বছর আগে ঘটে যাওয়া এক ছোট্ট ভুল কীভাবে মহিলার জীবনের সবচেয়ে বড় বিভীষিকা হয়ে উঠল?

ভুক্তভোগীর স্বামী অরবিন্দ কুমার পাণ্ডে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে ইনদিরানগরের এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ পুষ্পা জয়সওয়ালের বিরুদ্ধে গাজিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা পাণ্ডেকে 'She Medical Care' হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। সেখানেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর সন্তান জন্মগ্রহণ করে।

অস্ত্রোপচারের পর কিছুদিন সব ঠিকঠাক থাকলেও, এরপর নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন সন্ধ্যা। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন ওষুধ খেলেও ব্যথা কমেনি। এরপর এক্স-রে করানোর পরই ধরা পড়ে সেই ভয়ঙ্কর সত্যি।

এক্স-রে রিপোর্টে ধরা পড়ে মহিলার পেটে একটি কাঁচি রয়েছে! এই রিপোর্ট হাতে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জানা যায়, ১৭ বছর আগে ওই মহিলার অস্ত্রোপচার হয়েছিল, তখনই কাঁচিটি তাঁর পেটে থেকে যায়।

শেষমেশ ২৬ মার্চ, কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে (KGMU) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়। উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ থেকে এমনই চমকপ্রদ ঘটনা সামনে এসেছে।

জানা গেছে, দেওরিয়া জেলার সালেমপুরের বাসিন্দা অরবিন্দ কুমার পাণ্ডে বর্তমানে লখনউতে সমবায় সমিতি ও পঞ্চায়েত নিরীক্ষার উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত। তিনি ইনদিরা নগরে পরিবারের সঙ্গে থাকেন। তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা পাণ্ডে বারাবাঁকি জেলার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন।