বিয়ের জন্য স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান ৩, ৫ না ৭ বছর? ছোট-বড় হলে কী প্রভাব পড়ে, জানুন বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা
- Published by:Soumendu Chakraborty
Last Updated:
Best age gap between couples: আমাদের সমাজে সাধারণভাবে মনে করা হয় যে স্বামীর বয়স স্ত্রীর বয়সের চেয়ে বেশি হওয়া উচিত। তবে একই সমাজে এমন বহু সফল দম্পতি আছেন, যেখানে স্ত্রীর বয়স স্বামীর চেয়ে বেশি। এমন পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে—স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান আসলে কত হওয়া উচিত?
দম্পতির মধ্যে আদর্শ বয়সের ব্যবধান: একথা বলা হয়, ‘ভালোবাসা নাকি অন্ধ।’ তাই যখন আমরা প্রেমে পড়ি, তখন সামাজিক কোনও মানদণ্ড—যেমন সামাজিক অবস্থান, বয়স, ভাষা, কথ্য রীতি, উচ্চতা কিংবা গায়ের রং—এসবের দিকে তেমন নজর দিই না। ভালোবাসা যেন চোখ দিয়ে ঢুকে সরাসরি হৃদয়ে পৌঁছে যায়, আর মানুষ সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু ভিন্ন। ভালোবাসা অন্ধ হতে পারে, কিন্তু বিয়ে অন্ধ নয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে সমাজে নানা নিয়ম ও রীতি প্রচলিত আছে, যেগুলি সাধারণত মেনে চলা হয়। এরকমই একটি নিয়ম হলো স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য। ভারতীয় সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে যে স্বামীকে স্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় হওয়া উচিত। এখান থেকেই প্রশ্ন ওঠে—স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আদর্শ বয়সের ব্যবধান আসলে কতটা হওয়া উচিত?
advertisement
প্রথাগতভাবে ভারতীয় সমাজে বিয়েকে একটি পবিত্র বন্ধন হিসেবে দেখা হয়। একে সাত জন্মের বন্ধন বলেও মনে করা হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও নানা সামাজিক রীতিনীতিতেও পরিবর্তন এসেছে। সাধারণভাবে আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন ধরে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের চল থাকলেও, বর্তমান প্রজন্ম ধীরে ধীরে লাভ ম্যারেজের দিকেও আকৃষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, আজ আমরা বিয়ের সঙ্গে যুক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
advertisement
তবে আজ আমরা আপনাদের জানাব, বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর বয়সের মধ্যে কতটা ব্যবধান থাকা উচিত। এই বিষয়টি আলোচনায় আনার আগে আমরা একটি বিষয় স্পষ্ট করে নিতে চাই—বিজ্ঞানে ‘বিয়ে’ নামে কোনও ধারণা নেই। এখানে মূলত আলোচনা করা হচ্ছে, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে একজন নারী ও একজন পুরুষের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া উচিত।
advertisement
স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য নিয়ে প্রচলিত সামাজিক ধারণাগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সমাজে এমন বহু দাম্পত্য সম্পর্ক রয়েছে, যেখানে স্ত্রী স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় হওয়া সত্ত্বেও সেই বিবাহ সফল হয়েছে। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে সাধারণত এই বয়সের সীমাবদ্ধতা মেনে চলা হয়, কিন্তু লাভ ম্যারেজ অনেক সময়ই এই সামাজিক মানদণ্ডের বাইরে থাকে।
advertisement
আজকের যুবসমাজ ক্রমেই লাভ ম্যারেজের দিকে বেশি করে আকৃষ্ট হচ্ছে। ফলে সম্পর্ক যত এগোচ্ছে, ততই আদর্শ বয়সের ব্যবধান নির্ধারণ করা আরও কঠিন হয়ে উঠছে। শতাব্দীপ্রাচীন সামাজিক ধারণা অনুযায়ী, স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে তিন থেকে পাঁচ বছরের বয়সের পার্থক্যকে আদর্শ ধরা হয়, যেখানে স্বামী স্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় হন। সমাজের একটি বড় অংশ এখনও এই মানসিকতাকেই অনুসরণ করে চলেছে।
advertisement
advertisement
হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে সাধারণত মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় শারীরিক ও মানসিক পরিপক্বতায় আগে পৌঁছে যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই হরমোনগত পরিবর্তন সাধারণত ৭ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়, অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে তা শুরু হয় প্রায় ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে। এই কারণেই মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় আগে শারীরিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে কোপুলেশন (copulation) বলা হয়।
advertisement
advertisement
advertisement
এই বয়সের সীমাবদ্ধতা ভেঙে এমন অনেক দম্পতি রয়েছেন, যাঁদের দাম্পত্য জীবন সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ, অভিনেতা শাহিদ কাপুর ও তাঁর স্ত্রী মীরা রাজপুতের মধ্যে প্রায় ১৫ বছরের বয়সের পার্থক্য রয়েছে। আবার আলিয়া ভাট ও রণবীর কাপুরের মধ্যে বয়সের ব্যবধান প্রায় ১১ বছর। অন্যদিকে, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নিক জোনাসকে বিয়ে করেছেন, যিনি তাঁর থেকে প্রায় ১০ বছর ছোট।
advertisement
বিয়ে শুধু শারীরিক ঘনিষ্ঠতার বিষয় নয়। সেই কারণেই শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড দিয়ে বিয়ের উপযুক্ত বয়স নির্ধারণ করা যায় না। বাস্তবে, প্রত্যেক মানুষের শারীরিক ও মানসিক পরিপক্বতা আলাদা আলাদা হয়। একটি সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া, বিশ্বাস এবং সম্মান—এই বিষয়গুলো বয়সের ব্যবধানের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
advertisement
সমাজের দৃষ্টিতে উপযুক্ত বয়সের ব্যবধান সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক বলে মনে করা হয়। তবে বিজ্ঞানের মতে, সঠিক বয়সের পার্থক্য নির্ভর করে উভয় সঙ্গী মানসিক, আবেগগত ও শারীরিকভাবে কতটা পরিপক্ব তার উপর। একটি সফল বিবাহ শুধুমাত্র বয়সের ব্যবধানের উপর নির্ভর করে না; বরং পারস্পরিক ভালোবাসা, সম্মান ও বোঝাপড়ার উপরই তার ভিত্তি গড়ে ওঠে। বয়সের পার্থক্য তিন বছর হোক বা পনেরো বছর—প্রকৃতপক্ষে সেই সম্পর্কগুলিই সফল, যেখানে দু’জনই একে অপরের পরিপক্বতা ও চিন্তাধারাকে বোঝে এবং পরস্পরকে সমর্থন করে।






