Knowledge Story: মহাভারতে শকুনির মৃত্যুর পর কী পরিণতি হয়েছিল তাঁর জাদুকরী পাশার? আর কীভাবেই বা মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছিল দুর্যোধনের মামার? জেনে নিন বিশদে
- Published by:Siddhartha Sarkar
- trending desk
Last Updated:
Mahabharat Katha: আসলে শকুনিই ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে প্রবল শত্রুতা ঘটিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুদ্ধেও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছেন। কিন্তু যুদ্ধে মারা যাওয়ার পরে শকুনির পাশার কী হয়েছিল, সেটা আজও রহস্য।
Sanjay Srivastava: কথিত আছে, মহাভারতে যখন শকুনির মৃত্যু হয়েছিল, তখনও তাঁর সঙ্গে ছিল জাদুকরী পাশাটি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, শকুনির মৃত্যুর পর সেই পাশার পরিণতি কী হয়েছিল? আসলে বলা হয় যে, শকুনির ওই পাশা আসলে বিশ্বাসঘাতকতা আর প্রতারণার প্রতীক। জানা যায় যে, ওই পাশা তিনি তৈরি করেছিলেন হাড় দিয়ে। কিন্তু কার হাড় দিয়ে ওই পাশা তৈরি, সেটাও একটা বড় রহস্য! আসলে শকুনিই ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে প্রবল শত্রুতা ঘটিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুদ্ধেও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছেন। কিন্তু যুদ্ধে মারা যাওয়ার পরে শকুনির পাশার কী হয়েছিল, সেটা আজও রহস্য।
advertisement
গ্রহ-নক্ষত্র গণনা করে শকুনিকে বধ: কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় পাণ্ডবের মধ্যে সহদেবই শকুনিকে হত্যা করেছিলেন। আসলে সহদেব ছিলেন জ্যোতিষশাস্ত্রের বড় পণ্ডিত। দুর্যোধনের এই বিশ্বাসঘাতক মামার পরিণতি নিয়ে কৃষ্ণ থেকে যুধিষ্ঠির সকলেই চিন্তিত ছিলেন। তখন সহদেব বলেছিলেন যে, তিনি শকুনিকে হত্যা করবেন। অবশেষে গ্রহ-নক্ষত্র গণনা করে শকুনি কীভাবে শেষ হতে পারেন, সেটা দেখে নিয়ে তবেই তাঁকে হত্যা করেছিলেন সহদেব।
advertisement
advertisement
হাড় থেকে তৈরি হয়েছিল পাশা: কথিত আছে, নিজের পিতা সুবলার হাড় থেকে এই পাশাগুলি প্রস্তুত করেছিলেন। কুরু রাজবংশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এই পাশাগুলি তৈরি করা হয়েছিল। আসলে ধৃতরাষ্ট্র শকুনির পিতা ও পরিবারকে বন্দি করে অত্যাচার করেছিলেন। তাই নিজের পিতার হাড় থেকে পাশা তৈরি করার পর শকুনি সেটিকে তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে শক্তিশালী করেন।
advertisement
শকুনির প্রতিশোধের কারণ: গান্ধারের রাজকুমার ছিলেন শকুনি। ধৃতরাষ্ট্র ও কৌরবদের কৃতকর্মের কারণে তাঁর পরিবারের মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল। পিতা সুবলা এবং ভাইদের সঙ্গে বন্দি করা হয়েছিল শকুনিকেও। প্রতিদিন খাওয়ার জন্য মাত্র একমুঠো করে ভাত দেওয়া হত তাঁদের। শকুনি যাতে বেঁচে থাকেন, তার জন্য পিতা সুবলা নিজের এবং তাঁর অন্যান্য পুত্রদের ভাগের খাবারও শকুনিকে দিতে শুরু করেছিলেন। সকলের মৃত্যু হলেও শকুনি কিন্তু বেঁচে গিয়েছিলেন।
advertisement
কুরু রাজবংশের ধ্বংস চেয়েছিলেন শকুনির পিতা: মারা যাওয়ার আগে কৌরবদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য শকুনিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুবলা। তিনি শকুনিকে একটি শক্তিশালী যন্ত্র তৈরি করতে তাঁর হাড় ব্যবহার করতে বলেছিলেন, যা কুরু রাজবংশকে ধ্বংস করে দিতে পারে। সেই কারণে শকুনি তাঁর পিতার হাড় থেকে এক জোড়া জাদু পাশা তৈরি করেছিলেন। আর এই পাশাগুলি সব সময় তাঁকে ভাগ্যের খেলায় অনুকূল ফল দিত।
advertisement
পাশা খেলায় যুধিষ্ঠিরের হার: শকুনির ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই দুর্যোধন যুধিষ্ঠিরকে পাশা খেলার জন্য ডেকেছিলেন। আর তাতেই যুধিষ্ঠির নিজের রাজ্য, ধন-সম্পদ সব কিছু হারিয়ে ফেলেন। এই খেলায় যুধিষ্ঠির যখন হারতে শুরু করেছেন, তখন তিনি দ্রৌপদীকেও বাজি রেখেছিলেন। কিন্তু পাণ্ডবদের হারের পরেই দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করার চেষ্টা করে কৌরবরা। এতে পাণ্ডবদের মনে কৌরবদের প্রতি ক্ষোভে ভরে ওঠে।
advertisement
শকুনির চরিত্র : শকুনিকে প্রায়শই ধূর্ত ও নিষ্ঠুর চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়। কৌরবদের মধ্যে দুর্যোধনের উপর তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিল। তবে নিজের বোন এবং পরিবারের প্রতি হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নেওয়ার আকঙ্ক্ষা তার মধ্যে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু শকুনির পরিবারের উপর কেন রাগ ছিল ধৃতরাষ্ট্রের? আসলে এ নিয়ে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে। রাশিফল গণনা করে ভবিষ্যদ্বাণী এসেছিল যে, গান্ধারী বিধবা হবেন।
advertisement
তাই এই পরিণতি এড়ানোর জন্য প্রতীকী ভাবে একটি ছাগলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয়। এরপর অন্ধ রাজা ধৃতরাষ্ট্রের কাছ থেকে গান্ধারীর জন্য বিবাহ প্রস্তাব এলে শকুনি বিরক্তি প্রকাশ করেন। আসলে ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে গান্ধারীর বিয়েতে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন। তবে দাদার আপত্তি সত্ত্বেও গান্ধারী ধৃতরাষ্ট্রকেই বিয়ে করেন। এদিকে গান্ধারীর আগের বিয়ের কথা জানতে পেরে ক্রুদ্ধ হন ধৃতরাষ্ট্র। প্রতিশোধের জন্য স্ত্রীর বাবা এবং ভাইদের বন্দি করেছিলেন। সকলে বন্দিদশায় মারা গেলেও জীবিত ছিলেন শুধু শকুনিই। এরপর তিনি ধৃতরাষ্ট্রের থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করেন।
advertisement