GK: বলুন তো, বিদ্যুতের তারে বসেও পাখিরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় না কেন? ৯৯% মানুষই জানেন না সঠিক উত্তরটি

আমরা প্রায়ই দেখি পাখির ঝাঁক বিদ্যুতের তারের ওপর আরামে বসে থাকে, যেন নিচে দিয়ে প্রবাহিত প্রাণঘাতী বিদ্যুৎ তাদের কোনো প্রভাবই ফেলছে না। এই দৃশ্য এতটাই সাধারণ যে আমরা আর আশ্চর্যও হই না।

একটু খেয়াল করলে অনেকেই ভাবতে পারেন, এটি কি কোনো যাদু? কারণ ছোটবেলা থেকেই আমাদের বলা হয়, বিদ্যুতের সংস্পর্শে এলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। তাহলে বিদ্যুতের তারে বসে থাকা পাখিরা কেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় না?

এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিদ্যার চমৎকার এক মেলবন্ধনে। চলুন, দেখে নিই আসলে কী ঘটে যখন কোনো পাখি উচ্চ ভোল্টেজের তারে বসে।

এখানে মূল বিষয় হল, "বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য প্রয়োজন হয় ভোল্টেজ পার্থক্য বা বৈদ্যুতিক পটেনশিয়ালের পার্থক্য"। একটি পাখি যখন বিদ্যুতের তারে বসে, তখন তার দুটি পা একই তারের ওপর থাকে এবং সেই পয়েন্টগুলোর ভোল্টেজ সমান। ফলে কোনো উল্লেখযোগ্য ভোল্টেজ পার্থক্য তৈরি হয় না এবং তাই তার দেহ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় না।

পাখির শরীর ছোট হওয়া, তার পায়ের মাঝে দূরত্ব কম থাকা এবং মাটি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকা—এই তিনটি বিষয় একত্রে পাখিকে নিরাপদ রাখে। যেহেতু তারা কোনো বিদ্যুৎ সার্কিট সম্পূর্ণ করে না, তাই তাদের দেহে বিদ্যুৎ প্রবাহ ঘটে না।

মানুষের ক্ষেত্রে বিপদ কেন হয়? কারণ আমরা যদি বিদ্যুতের তার স্পর্শ করি এবং সেই সঙ্গে মাটির সংস্পর্শে থাকি, তাহলে উচ্চ ভোল্টেজ থেকে মাটির শূন্য ভোল্টেজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ শরীর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই বিশাল ভোল্টেজ পার্থক্যের কারণে প্রাণঘাতী ঝুঁকি তৈরি হয়।

তবে সবসময় পাখি নিরাপদ থাকে না। বড় পাখি যেমন ঈগল বা সারস যদি ডানা মেলে একসঙ্গে দুটি আলাদা ভোল্টেজযুক্ত তার স্পর্শ করে, তাহলে সেই পার্থক্যের কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

আরও একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি হয় যখন কোনো পাখি একটি বিদ্যুতের তার এবং একটি গ্রাউন্ডেড বস্তু (যেমন খুঁটি, ট্রান্সফর্মার বা লোহার তার) একসঙ্গে স্পর্শ করে। তখনও তাদের দেহ হয়ে ওঠে বিদ্যুৎ প্রবাহের পথ, যা প্রাণঘাতী হতে পারে।