'এ কী! আমার ব্যাগ কই?' এসি কোচে সবাই যখন ঘুমে অচেতন, কী যে হল...! সকালে দেখা গেল কালো আর নীল ব্যাগ একটাও নেই!

রাতের ট্রেন। শীতল এসি কামরায় ডুবে থাকা যাত্রীদের মুখে ক্লান্তির ছাপ, চোখে ঘুমের আলতো পরত। কেউ জানে না—সেই ঘুমের ফাঁকেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে ব্যাগ। তাও আবার শুধু কালো আর নীল ব্যাগ! (Representational Image: AI Generated) 

কোনও লাল, সবুজ, হলুদ নয়। কেবল সেই দুই রঙের ব্যাগ, যেগুলোর চেহারা একরকম, নজরকাড়া নয়, সাধারণ। জেগে উঠে কেউ বললেন, “আমার ব্যাগটা কোথায় গেল?” আরেকজন চমকে বললেন, “আমারটাও ঠিক একই রঙের ছিল!” (Representational Image: AI Generated) 

প্রথমে মনে হচ্ছিল কাকতালীয়, পরে টের পাওয়া গেল এ এক নিখুঁত ছাঁক। কে বা কারা এসব করছে, সেটা তখনও কেউ জানত না। তবে তদন্ত যত এগোতে লাগল, সামনে এল এমন এক দল, যারা রোজকার যাত্রীদের ভিড়েই মিশে যেত। চুপচাপ আসত, হিসেবমতো কাজ সেরে আবার গা-ঢাকা দিত। (Representational Image: AI Generated) 

তাদের কেউ ডাকেন পেশাদার যাত্রী, কেউ বলেন ব্যাগের রঙ-চিনে চলা ছায়া। কিন্তু আসলে তারা ছিল ট্রেনযাত্রার মধ্যরাতের নীরব গেমপ্লেয়ার। কিন্তু আসলে কী চলছিল? (Representational Image: AI Generated) 

মাতা বৈষ্ণো দেবী কাটরা এক্সপ্রেস পৌঁছেছে নিউ দিল্লি স্টেশনে। যাত্রীরা যখন ট্রেন থেকে নামছেন, তখনই হইচই—A-1 কোচ থেকে পাঁচটি ব্যাগ উধাও! একাধিক যাত্রী জানান, তাঁরা রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, সকালে উঠে দেখেন তাঁদের ব্যাগ নেই। (Representational Image: AI Generated) 

খবর যায় রেল পুলিশ-এর কাছে। দায়িত্বে ছিলেন SHO বিষ্ণু পাসওয়ান, তদন্তে নামেন সঙ্গে সঙ্গেই। CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশের সন্দেহ পড়ে কয়েকজনের ওপর। ছবি মেলাতে সময় লাগেনি। (Representational Image: AI Generated) 

দু’দিনের মাথায় পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেল থেকে ধরা পড়ে তিন অভিযুক্ত— অমিত কুমার (৩৭) করন কুমার (২৭) গৌরব (৩৩) ১২টি ব্যাগ, দুটি মোবাইল, ও ৪৭ হাজার টাকা নগদ উদ্ধার হয়। চতুর্থ অভিযুক্ত পুনীত মাহাতো (৩৮) ধরা পড়ে আনন্দ বিহার স্টেশন থেকে। তাঁর কাছ থেকে আরও ৪টি ব্যাগ উদ্ধার হয়। (Representational Image: AI Generated) 

চারজনেই বিহারের বেগুসরাই ও বৈশালী জেলার বাসিন্দা। আর অবাক করা তথ্য হল— এরা দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিমুখী ট্রেনগুলোর এসি কোচে যাত্রী সেজে চুরি করে চলেছে, এবং এই ভাবে ১০০-র বেশি চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। (Representational Image: AI Generated) 

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্তরা কেবল কালো ও নীল ব্যাগই চুরি করত। কেন? কারণ নিজেরাও এই রঙের ব্যাগ নিয়ে চলত। ফলে CCTV ফুটেজে ব্যাগ দেখা গেলেও সন্দেহের অবকাশ থাকত না। রাত তিনটে থেকে ভোর চারটে—এই সময়টাকেই তারা টার্গেট করত। যাত্রীরা গভীর ঘুমে থাকেন, তাই সহজ হয়। (Representational Image: AI Generated) 

চুরি করে স্টেশনের মেন গেট দিয়ে বেরিয়ে হোটেলে ঢুকত। সেখানে নিজেদের পরিচয় দিত ‘কাপড়ের ব্যবসায়ী’ বলে। প্রতিদিন নতুন ব্যাগ আনলেও হোটেল কর্তৃপক্ষ কিছুই সন্দেহ করত না। (Representational Image: AI Generated) 

তাদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে? গৌরব ২০১৯ সাল থেকে পলাতক এক মামলায়। অমিত ও করনের বিরুদ্ধে একটি করে মামলা নথিভুক্ত। আর পুনীতের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ৫টি মামলা রয়েছে। এবারের ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধেই চুরির মামলা, এবং রেলওয়ে সুরক্ষা আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ। (Representational Image: AI Generated)