

সম্ভবত সুড়ঙ্গ তৈরি করেই ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল নাগরোটা এনকাউন্টারে নিহত চার পাক জঙ্গি৷ ঘটনার তিন দিন পর বিএসএফ এবং কাশ্মীর পুলিশ সাম্বা সেক্টরে একটি সদ্য খোঁড়া সুড়ঙ্গের খোঁজ পেয়েছে৷ Photo-ANI


বিএসএফ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নতুন এই সুড়ঙ্গটির মুখ থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ১৬০ মিটার৷ আর ভারতের সীমান্ত বেড়ার থেকে দূরত্ব মাত্র ৭০ মিটার৷ মাটি থেকে ২৫ মিটার গভীরে সুড়ঙ্গটি খোঁড়া হয়৷Photo-PTI


বিএসএফ-এর জম্মুর আইজি এন এস জামওয়াল বলেছেন, 'নাগরোটায় এনকাউন্টারে নিহত জঙ্গিরা এই ৩০ থেকে ৪০ মিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি ব্যবহার করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে৷ কারণ এটি একেবারে নতুন খোঁড়া হয়েছে৷ আমাদের অনুমান, সুড়ঙ্গ পথে ভারতে প্রবেশের পরে কোনও গাইড তাদের হাইওয়ে পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল৷' Photo-ANI


এক সিনিয়র পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, জঙ্গিদের ব্যবহৃত সুড়ঙ্গটি তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট চওড়া৷ সুড়ঙ্গের মুখে সবুজ রংয়ের বালির বস্তা পাওয়া গিয়েছে৷ সেগুলির গায়ে উর্দুতে কিছু লেখা ছিল৷ একটি বস্তার গায়ে ইংরেজিতে করাচি, পাকিস্তান লেখা রয়েছে৷Photo-ANI


জম্মুর আইজি মুকেশ সিং জানিয়েছেন, নাগরোটা কাণ্ডের তদন্তে নেমে প্রযুক্তিগত এবং ডিজিটাল নজরদারির সূত্রেই সাম্বা সেক্টরে পৌঁছন তাঁরা৷ এর পর আরও তদন্ত চালিয়ে এই সুড়ঙ্গের খোঁজ মেলে৷ নিহত চার জইশ জঙ্গির কাছ থেকেমোবাইল ফোন, জিপিএস এবং রেডিও সেট উদ্ধার করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী৷ সেগুলি থেকে পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখেই তারা কোন পথে অনুপ্রবেশ করেছে তার খোঁজ পান তদন্তকারীরা৷ তদন্তে অনুমান, সুড়ঙ্গ পথে ভারতে প্রবেশের পর প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটে জাটওয়াল গ্রামে পৌঁছয় ওই চার জঙ্গি৷ সেখানেই তাদের জন্য একটি ট্রাক অপেক্ষা করছিল৷Photo-file


নিহত জঙ্গিদের জিপিএস সেটে পাওয়া তথ্যে আরও স্পষ্ট, পাকিস্তানের নরোওয়ালের শাকাগড়ের জইশ ক্যাম্প থেকে দীর্ঘ তিরিশ কিলোমিটার হেঁটে সাম্বা সেক্টরের উল্টো দিকে পাকিস্তানের চক বুরা আউটপোস্টে পৌঁছয় চার জঙ্গি৷ সেখান থেকে সুড়ঙ্গ পথে প্রায় ২০০ মিটার হামাগুড়ি দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে তারা৷ জঙ্গিদের জিপিএস-এ পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখে আরও জানা গিয়েছে, সম্ভবত ১৮ নভেম্বর রাত ২টো নাগাদ ভারতে প্রবেশ করে চার জঙ্গি৷ ওই দিন চাঁদ না ওঠায় অন্ধকারের সুযোগ নিয়েই ভারতে প্রবেশ করে জঙ্গিরা৷Photo-ANI


গত বৃহস্পতিবার ভোরে নাগরোটায় টোল প্লাজায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইতে মারা যায় চার জইশ জঙ্গি৷ তল্লাশির জন্য চালের বস্তা বোঝাই লরিটি থামাতেই চালক পালিয়ে যায়৷ লরির ভিতরে লুকিয়ে থাকা চার জঙ্গি নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে৷ নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা জবাবে চার জইশ জঙ্গিরই মৃত্যু হয়৷ ২৬/১১ হামলার বর্ষপূর্তিতে শ্রীনগরে বড়সড় হামলা চালানোর লক্ষ্যে তাদের ভারতে পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ৷Photo-file


পলাতক ট্রাক চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷ এই ঘটনায় পাক যোগ স্পষ্ট হয়েছে৷ জঙ্গিদের কাছে পাওয়া মোবাইল রেডিও ডিভাইস, ওষুধ, পোশাক, জুতো, খাদ্যদ্রব্য সবকিছুথেকেই পাক মদতের প্রমাণ স্পষ্ট হয়েছে৷ পাক হাই কমিশনের আধিকারিককে ডেকে পাঠিয়ে এই সমস্ত প্রমাণের উল্লেখ করে ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিয়েছে দিল্লি৷ যদিও পাকিস্তান যথারীতি এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷Photo-file