‘বড় কিছু ঘটতে চলেছে’, পরবর্তী ২ বছরের জন্য বিশাল এক ভবিষ্যদ্বাণী করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর; চিনকে দিলেন হুঁশিয়ারিও
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
S Jaishankar Prediction: বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থা হোক কিংবা বহুপাক্ষিক সংস্থা, চিন এর সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করছে। আর আমরা সকলেই এই বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আমরা আরও বলতে পারি যে, আমাদের এর বিরোধিতা কঠোর ভাবে করা উচিত। কারণ অন্য যে বিকল্প রয়েছে, তা আরও খারাপ হতে চলেছে। কিন্তু আমি ভাবছি যে, আমাদের এখন কী করা উচিত।”
গত সপ্তাহে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের পর দিল্লির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অবজার্ভার রিজার্ভ ফাউন্ডেশনের আয়োজন করা আলোচনায় নিজের বক্তব্য রেখেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন যে, “আমি বলছি না যে, এটা ভাল না কি খারাপ...। আমি শুধু ভবিষ্যদ্বাণী করছি যে, কী ঘটতে চলেছে এবং আমার মনে হয়, আসন্ন সময়ে অনেক বড় কিছুই ঘটতে চলেছে।” আসলে এর দিন কয়েক আগেই আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর পরবর্তী ২ বছরে কী ঘটতে চলেছে, সেই বিষয়ে একটা স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
advertisement
আর বিদেশমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, গোটা বিশ্বে চিনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য ও আগ্রাসন হ্রাস করতে ব্যাপক ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ভারত। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থা হোক কিংবা বহুপাক্ষিক সংস্থা, চিন এর সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করছে। আর আমরা সকলেই এই বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আমরা আরও বলতে পারি যে, আমাদের এর বিরোধিতা কঠোর ভাবে করা উচিত। কারণ অন্য যে বিকল্প রয়েছে, তা আরও খারাপ হতে চলেছে। কিন্তু আমি ভাবছি যে, আমাদের এখন কী করা উচিত।”
advertisement
কীভাবে চিনের দমন এবং আগ্রাসন কমানো যেতে পারে? এশিয়া জুড়ে চিনের দমন এবং আগ্রাসন কমানোর একটা উপায় তো রয়েছে। আর সেটি হল - ভারতকে ইউনাইটেড নেশনস সিকিউরিটি কাউন্সিল (ইউএনএসসি)-এ স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া। অবশ্য ভারত এর জন্য বেশ কয়েক দশক ধরেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চিন বারংবার এই সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউএনএসসি-র পাঁচ সদস্যের মধ্যে চার সদস্যই অবশ্য ভারতের এই দাবিকে সমর্থন করেছে। যদি এমনটা ঘটে, তাহলে এশিয়ায় চিনের দমন অনেকাংশেই খর্ব করা যাবে।
advertisement
কিন্তু যতক্ষণ না এমনটা হচ্ছে, ততক্ষণ QUAD-কে আরও সক্রিয় হিসেবে দেখতে চাইবে ভারত। বলে রাখা ভাল যে, QUAD হল অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কূটনৈতিক এবং সামরিক গ্রুপিং। যার প্রধান লক্ষ্য হল, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের প্রভাব এবং আগ্রাসনকে প্রতিহত করা। সত্তর বছর বয়সী বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, এই সরকার (ডোনাল্ড ট্রাম্প) প্রথম পররাষ্ট্রনীতি শুরু করেছিল QUAD দিয়েই। তিনি আরও বলেন, QUAD-এর সবথেকে সেরা জিনিসটা কী? এতে কোনও খরচ হবে না... প্রত্যেকেই আসে, নিজেদের বিল মেটায়। প্রত্যেকেই আসলে এখানে সমান। আমরা যদি অন্য ধরনের কাঠামোর দিকে তাকাই, সেটা হবে আমেরিকার ক্ষমতার আলাদা অর্থ।”
advertisement
NATO আর QUAD-এর ফারাক: নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (NATO)-র মডেলের সঙ্গে সম্ভবত QUAD-এর তুলনা করেছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। প্রসঙ্গত NATO হল ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার ৩২টি দেশের একটি সামরিক জোটশক্তি। এর বার্ষিক বাজেটের দুই-তৃতীয়াংশ প্রদান করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প NATO-র বার্ষিক বাজেটের একটি বড় অংশ প্রদানের মার্কিন নীতির কঠোর সমালোচক। জার্মানি এবং পোল্যান্ডের মতো NATO-র সদস্য দেশগুলি নিজেদের প্রতিরক্ষামূলক ব্যয় বৃদ্ধি করেছে। আবার অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলি ২০১৯ সালে সম্মত নতুন কস্ট শেয়ারিংয়ের সূত্র অনুযায়ী সামরিক জোটের দ্বারা বাধ্যতামূলক জিডিপি-র ন্যূনতম ২ শতাংশও পরিশোধ করেনি।
advertisement
Quad-এর উপর মনোযোগ বাড়াবে ডোনাল্ড ট্রাম্প: বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান ঐকমত্য রয়েছে যে, যদি এটি তার বিদেশি প্রতিশ্রুতি এবং সম্পর্ক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে, তাহলেই এটি আমেরিকার স্বার্থে হবে। সেই কারণে জয়শঙ্করের উদাহরণ সম্ভবত একটি ইঙ্গিত যে, চিনের প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাবের অধিকারী ট্রাম্প এবার QUAD-এ নিজের মনোযোগ বাড়াতে পারেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেনের শাসনের আমলে কিছুটা হলেও থিতিয়ে পড়েছিল।
advertisement
গত সপ্তাহের বৈঠকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত একটি নতুন ডিফেন্স পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদি। চলতি বছরের শেষে এই চুক্তি চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক দিকে যেখানে দুই দেশ শুল্কের জটিল বিষয়ে আলোচনা করছে, তখন অন্য দিকে চিনের ক্রমবর্ধমান শক্তি উভয় দেশের জন্যই অভিন্ন উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। সেই কারণে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হতে হবে।