Teacher Turns Walls Into Blackboards: প্রতিটা পাঁচিলে ব্ল্যাকবোর্ড, অজ পাড়া গাঁয়ে স্কুলের অভাব ঘুঁচিয়ে দিলেন এক শিক্ষক
- Published by:Suman Majumder
- news18 bangla
Last Updated:
স্কুল বন্ধ। বাচ্চাদের পড়াশোনার কী হবে! এই চিন্তাই তাঁর ঘুম উড়িয়েছিল। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এমন স্বার্থহীন মানুষ তো বিরল।
অজ পাড়া গা। সেখানে এমনিতেই স্কুলের অভাব। অনেক বাড়ির ছেলেমেয়েরা এমনিতেই নিয়মিত স্কুলে যেত না। তার উপর করোনা লকডাউন। যার জেরে স্কুল-কলেজ বন্ধ অনেকদিন। কবে খুলবে তারও কোনও ঠিক নেই। এই পরিস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার কী হবে! অনলাইনে তো আর সবাই ক্লাস করছে না। তা হলে তাদের শিক্ষার কী হবে! নায়ায়ণ নায়েককে এই চিন্তা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল।
advertisement
করোনা লকডাউনের গভীর প্রভাব পড়েছে বাচ্চাদের পড়াশোনায়। আমরা অনেকেই তা নিয়ে চিন্তিত। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের সন্তানের শিক্ষা ও ভবিষ্যত্ নিয়েই বেশি চিন্তায়। আর পাঁচটা বাচ্চার ভবিষ্যত্ নিয়ে ভাবেছে কজন! তবে নায়ারণ নায়েকের মতো অনেকে কিন্তু ভাবছেন। আর তাঁরা ভাবছেন বলেই অজ পাড়া গাঁয়ে কিছু বাচ্চার ইস্কুলের অভাব ঘুঁচছে। ৩৪ বছরের নায়ারণ এখন পথ শিক্ষক নামে এলাকায় জনপ্রিয়। তিনি যা করেছেন তা বিরল তো তো বটেই, নজিরবিহীনও বটে। আস্ত একটা গ্রামে স্কুলের অভাব মিটিয়ে দিয়েছেন তিনি।
advertisement
পশ্চিম বর্ধমানের জোবা আটপাড়া একটি আদিবাসী গ্রাম। সেখানে এমনিতেই বহু বাচ্চা স্কুলছুট। লকডাউন যেন পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দিয়েছিল। বাচ্চারা সারাদিন গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। স্কুল বন্ধ। পড়াশোনা বলে কিছু নেই। বাচ্চাদের ভবিষ্য়ত্ কী হবে কেউ জানে না। নায়ায়ণ নামেয়ক নামের এক শিক্ষক বাচ্চাদের পড়াশোনার কথা চিন্তা করে রাতের ঘুম উড়িয়ে বসেছিলেন। তিনি মনে মনে স্থির করলেন, গোটা গ্রামকেই স্কুলে পরিণত করে দেবেন। ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। গ্রামের প্রতিটা বাড়ির পাঁচিলে এখন ব্ল্যাকবোর্ড। গোটা গ্রামের প্রায় ৬০ জন বাচ্চাকে তিনি পড়াশোনায় ফিরিয়েছেন। নিজের ইচ্ছে ও উদ্যোগে গোটা গ্রামকে পাঠশালায় পরিণত করেছেন। বাচ্চাদের ছড়া শেখানো থেকে শুরু করে অক্ষরের সঙ্গে পরিচয় করানো, সব একার হাতেই করছেন নারায়ণ। আর বাচ্চারাও এভাবে পড়াশোনা করে বেজায় খুশি।
advertisement
অগাস্ট মাসে করা একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে মাত্র ৮ শতাংশ বাচ্চা লকডাউন অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে। ৩৭ শতাংশ বাচ্চা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে পুরোপুরি। এই রিপোর্ট থেকেই বোঝা যায়, লকডাউন কীভাবে বাচ্চাদের ভবিষ্যতে প্রভাব ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে নারায়ণ নায়েকের মতো শিক্ষকরা আছেন বলেই কিছু বাচ্চা তবু পড়াশোনায় ফিরতে পেরেছে।
advertisement
করোনার এই সময়ে মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার সম্পর্কেও বাচ্চাদের পাঠ দিচ্ছেন নারায়ণ। বাচ্চাদের পড়াশোনা চলছে খেলার ছলে। তবে তাদের পড়াশোনা শেখানোর ব্যাপারে এই পথ শিক্ষক কিন্তু সিরিয়াস। একটুও ফাঁকি নেই তাঁর উদ্যোগে। বরং আছে আন্তরিকতা ও স্বার্থত্যাগের মানসিকতা। আজকের দিনে যা অতিবিরল এক জিনিস।