

♦ আগামী ৮ মার্চ নারী দিবস ৷ সরকারিভাবে মহিলাদের জন্য বেঁধে দেওয়া গোটা একটা দিন ৷ আর বছরের ৩৬৪টা দিন কি মহিলাদের জন্য নিবেদিত নয়? প্রশ্নটা কিন্তু রইলো আপামর দর্শকদের জন্য ৷ তবে, ওম্যান অ্যাক্টিভিস্টরা বলেন, প্রতিটা দিনই নারীর দিন ৷ নারীদের এগিয়ে যাওয়ার দিন ৷ দৃষ্টান্ত তৈরি করার দিন ৷ পুরুষশাসিত সমাজকে সপাটে চড় মেরে বাস্তবের সামনে দাঁড় করানোর দিন ৷ আজ জানা যাক এমনই এক নারীর কথা ৷ যিনি নিজেই দৃষ্টান্ত ৷ ছবি: ফেসবুক ৷


♦ কেরিয়ারটা আরও ঝকঝকে হবে ৷ বাড়ির দেওয়ালে একটা শংসাপত্রের পর জুড়বে শয়ে শয়ে শংসাপত্র ৷ জীবনে তো চাহিদা প্রচুর ৷ সবাই দৌড়চ্ছে ৷ তবে জীবনে অপ্রত্যাশিত ঘটনাও ঘটে। জীবন নতুন বাঁক নেয়। কল্পনা ভেঙে যায় বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে। আবার সচেতনভাবেই কেউ চালু পথ ছেড়ে বেছে নেয় উত্তাল জীবন। সানা শেখ সেরকমই একজন। ছবি: ফেসবুক ৷


♦ দুঃস্থ পিছিয়ে পড়া সমাজের জন্য ডাক্তারি ছেড়ে পথে নেমেছেন। এডস আক্রান্ত রোগীদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে চান সানা। ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক বাবাকে দেখেছেন। সমাজে প্রতিষ্ঠা আছে, সুখী জীবন। সানাও ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন। স্কুল শেষ করে ভর্তি হন মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই খুঁজে পান জীবনের অন্য মানে। যোগ দেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাথীর সঙ্গে। বাড়ি থেকে পালানো বাচ্চাদের ঘরে ফেরাত এই সংস্থা। সানার কথায়, ‘একটা জিনিস আমি পেয়েছি, সেটা মানসিক শান্তি। শুরুটা স্বার্থপরের মতো করেছিলাম। এখন এটাই জীবনের লক্ষ্য।’ছবি: ফেসবুক ৷


♦ হিউম্যানস অফ বোম্বের একটি প্রতিবেদনে শুরুর দিনগুলির কথা বলেছেন সানা। ১১ বছরের এক মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। কথাও বলছিল না কারও সঙ্গে। শেষে জানা যায় মেয়েটির এডস হয়েছিল। হিউম্যানস অফ বোম্বেতে সানা লিখেছেন, ‘আমরা জানতে পেরেছিলাম ওর এডস হয়েছে। আমার তখন মাত্র ১৯ বছর বয়স। তবুও মনে হয়েছিল ওর প্রতি আমার কিছু দায়িত্ব আছে। তাই ওর আর্থিক ব্যয়ভার নিয়েছিলাম। তখন থেকেই ও আমার ‘মেয়ে’র মতো।’ছবি: ফেসবুক ৷


♦ বাড়ি থেকে পালানো এইডস সংক্রামিত শিশুদের জন্য মন কাঁদে সানার। সহকর্মীরা মিলে ঠিক করেন তাঁদের জন্য যতটা সম্ভব সাহায্য করবেন। ২৫ বছর বয়সে আবার শিক্ষাজগতে ফিরে আসেন সানা। এমবিএ ডিগ্রি হাসিল করেন। ছবি: ফেসবুক ৷


♦ গ্র্যাজুয়েশনের পর সানা বহুজাতিক হাসপাতালে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই হাফিয়ে ওঠেন। অপূর্ণতা গ্রাস করছিল তাঁকে। দিনরাত পরিশ্রম করেও মনের তৃপ্তি পাচ্ছিলেন না। মনে হচ্ছিল, কোথাও খামতি থেকে যাচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের জীবন ছেড়ে যোগ দিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়। এটাই সানার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সানা যোগ দেন জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থায়। সেখানে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হত। দিনে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ শিশুর রোগ নির্ণয় হত। সানার সঙ্গে আলাপ হয় মানসিক ভারসাম্যহীন এইডস আক্রান্ত শিশুর তত্বাবধায়কদের সঙ্গেও। ছবি: ফেসবুক ৷