মাথায় মারাত্মক চুলকানি হলেই বুঝে যেতে হয় যে, মাথায় উকুন হয়েছে। আসলে এই সমস্যা গোটা দুনিয়াতেই দেখা যায়। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অতি সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে উকুন। তিলের বীজের মতোই ছোট আকারের পরজীবী হল উকুন। যা মানুষের রক্ত খেয়েই বেঁচে থাকে। মাথার স্ক্যাল্প এবং চুলে উকুন বাস করে। শুধু তা-ই নয়, সমস্যা বাড়লে কখনও কখনও চোখের পাতা ও ভুরুতেও উকুন হতে পারে। কিন্তু উকুন হলে কী ভাবে বোঝা যায় (Ways to get rid of head lice in natural way)? Representative Image
উকুন হওয়ার উপসর্গ: বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকেই বুঝতে পারেন না যে, তাঁরা উকুনে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু মাথার স্ক্যাল্পে উকুন থাকলে তার কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায়। স্ক্যাল্প বা ঘাড়ে সুড়সুড়ি লাগে বা অস্বস্তিবোধ হয় ৷ উকুনের লালার কারণে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়, তার জন্য স্ক্যাল্পে চুলকানি হয় ৷ স্ক্যাল্প, ঘাড় ও কাঁধে আচমকাই ছোট ছোট লাল দাগ দেখা যেতে পারে ৷ চুলের গায়ে নিট বা উকুনের ডিমের উপস্থিতি ৷ ঘুমের সমস্যা, যা থেকে অস্বস্তিবোধ হতে পারে ৷ Representative Image
অস্বস্তিবোধ হওয়ার জন্য বহু সময় অনেকেই মারাত্মক ভাবে মাথা চুলকোন। যার জেরে ত্বকের সংক্রমণ ঘটতে পারে। এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, উকুনের জেরে রোগ ছড়াতে পারে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে আফ্রিকা-সহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সংক্রান্ত সমীক্ষা চালানো হয়। তাতে জানা গিয়েছে যে, উকুন সংক্রামক রোগের বাহক। আর একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, মানবদেহে বসবাসকারী উকুন এক ধরনের প্যাথোজেন বহন করে, যা মারাত্মক জ্বরের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। Representative Image
রোগ নির্ণয় ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা: আসলে উকুন খুব তাড়াতাড়ি এ-দিক সে-দিক চলে যেতে পারে এবং আলো এড়িয়ে চলে। তাই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ, চুল ভেজানোর পরে উকুন আছে কি না, তা বোঝা যায় ভালো ভাবে। উকুনের জন্য ব্যবহৃত বিশেষ চিরুনির মাধ্যমেও উকুনের উপস্থিতি বোঝা যায়। আবার অনেক সময় মাথায় খুশকি, নোংরার কারণে চুলকানি হতে পারে। অনেকেই বিষয়টিকে উকুনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতে পারেন। তাই অন্য কাউকে দিয়েও মাথায় উকুন আছে কি না, তা নির্ণয় করানো যেতে পারে। স্ক্যাল্পে উকুন না-মিললে চুল ভালো করে দেখতে হবে। কারণ চুলের গা আঁকড়ে থাকতে পারে নিট বা উকুনের ডিম। সংক্রমণ নির্মূল করার পরে মাথায় জীবিত উকুন না-থাকলেও অনেক সময় চুলের গায়ে নিট লেগে থাকতে পারে। সেই সব কিছু ভাল করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। Representative Image
চিকিৎসা: বিশেষ শ্যাম্পু, ক্রিম– এ সবের মাধ্যমে উকুন নির্মূল করা যায়। যেসব শ্যাম্পু বা ক্রিমে উকুন নাশকারী উপাদান থাকে, সেই সবই ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ চিরুনি দিয়ে বার বার চুল আঁচড়ালে উকুন বেরিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে চুলের গায়ে লেগে থাকা উকুনের ডিমও চলে যায়। আর মাথায় রাখতে হবে যে, এই সমস্যা প্রতিরোধ করতে আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যেমন– আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়া চলবে না, আবার আক্রান্তের ব্যবহার করা জিনিসপত্র থেকেও দূরে থাকতে হবে। Representative Image