Bhola Bhetki Fish: ভোলা ভেটকি খেলেই জব্দ ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, নিয়ন্ত্রণে থাকবে প্রেশারও! গবেষণায় উঠে এল চমকে দেওয়া তথ্য...

বাংলার মানুষ মাছপ্রেমী হলেও মাছ নির্বাচনে বেশ খুঁতখুঁতে। ইলিশ, রুই, কাতলা, পাবদা —এইসব মাছের চাহিদা বাংলা রান্নাঘরে বরাবরই শীর্ষে। তবে কিছু পুষ্টিকর সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে যেগুলোর গন্ধ তীব্র, সেগুলো অনেকসময়ই উপেক্ষিত হয়। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, এমনই এক উপেক্ষিত সামুদ্রিক মাছ ‘ভোলা ভেটকি’ হতে পারে ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেসার এবং লিভারের সমস্যার কার্যকর প্রাকৃতিক ওষুধ।

ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং হৃদরোগ বর্তমানে প্রায় প্রতিটি পরিবারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা কলেজ ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষকদের এক যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে যে, ভোলা ভেটকি মাছের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ ওষধিগুণ যা এই রোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক।

২০১৭-১৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন বেলদা কলেজের অধ্যাপক কৌশিক দাস। তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক শ্রাবন্তী পাইন, গবেষক জয়শ্রী লাহা, এবং ছাত্র গবেষক সঞ্জয় দাস, সুপ্রিয়া ভৌমিক ও সায়ন পান্ডা। তাঁরা যৌথভাবে রাজা নরেন্দ্রলাল খাঁ মহিলা কলেজের গবেষকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন।

অধ্যাপক শ্রাবন্তী পাইন জানিয়েছেন, নিয়মিত ভোলা ভেটকি খাওয়ার ফলে রক্তচাপ কমে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খান, তাদের হাঁটুর ব্যথা এবং ঋতুস্রাবজনিত অস্বস্তিও অনেকটাই কমে যায়।

পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলের ১২৪ জন মানুষের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। সেখানে দেখা যায়, সামুদ্রিক মাছ খাওয়া মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার ছিল মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ, যেখানে মিঠা জলের মাছ খাওয়াদের মধ্যে সেই হার প্রায় ৩০ শতাংশ।

গবেষকরা ইঁদুরের ওপর আরও এক ধাপ পরীক্ষা চালান। তাদের মধ্যে কিছু ইঁদুরকে নিয়মিত চিনিযুক্ত খাবারের পাশাপাশি ভোলা ভেটকি খাওয়ানো হয়। তাতে দেখা যায়, এই ইঁদুরদের রক্তে চিনির মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমে যায়, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে এই মাছ হাইপারগ্লাইসেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।

অধ্যাপক শ্রাবন্তী পাইন তাঁর এই যুগান্তকারী গবেষণার জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কংগ্রেস ২০২৩-এ সম্মানিত হন। গবেষকরা বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যতে ভোলা ভেটকির সক্রিয় উপাদানকে আলাদা করে ক্যাপসুল আকারে তৈরি করলে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় বড় পরিবর্তন আসতে পারে।

যদিও এই মাছের গন্ধ অনেকের কাছে সহনীয় নয়, কিন্তু এর আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্যগুণ এখন মানুষকে নতুন করে ভাবাচ্ছে—ভোলা ভেটকি কি সত্যিই বাঙালির ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে এক গোপন অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে?

Disclaimer: এই খবরের মধ্যে দেওয়া ওষুধ/স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রাপ্ত। এটি সাধারণ তথ্য এবং ব্যক্তিগত পরামর্শ নয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও কিছু ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নিউজ18 বাংলা কোনও ব্যবহারে ক্ষতির জন্য দায়ী থাকবে না।