মাত্র ১৫ বছরেই কী ভাবে ফাটল ধরল কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনের পিলারে? বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন...দোষ কার?
- Published by:Tias Banerjee
- news18 bangla
- Reported by:ABIR GHOSHAL
Last Updated:
নিউ গড়িয়া মেট্রো স্টেশনের পিলারে ফাটল ধরা পড়তেই চাঞ্চল্য। মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে এমন অবস্থা! বিশেষজ্ঞদের দাবি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং মরচে ধরার ফলেই এই বিপর্যয়।
নির্মাণের ১৫ বছরের মধ্যেই ফাটল ধরল কবি সুভাষ ব নিউ গড়িয়া মেট্রো স্টেশনের একাধিক পিলারে। ফলত সোমবার দুপুর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই স্টেশনের পরিষেবা। এখন মেট্রো চলাচল সীমিত দক্ষিণেশ্বর থেকে ব্রিজি স্টেশন পর্যন্ত। কিন্তু কেন হল এমন? উঠছে প্রশ্ন।
advertisement
যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। অনেকেই খবর না জেনে সকালে স্টেশনে পৌঁছে জানতে পারছেন পরিষেবা বন্ধ। নিরাপত্তারক্ষীরাও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। এক যাত্রীর অভিযোগ, “গেট বন্ধ, কোনও নোটিশ নেই, শুধু বলা হচ্ছে পরিষেবা বন্ধ অনির্দিষ্টকালের জন্য। এত মানুষের যাতায়াত এই স্টেশন দিয়ে, অথচ এমন আচমকা পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া—এটা ঠিক নয়।”
advertisement
২০১০ সালের অক্টোবরে চালু হয় নিউ গড়িয়া মেট্রো স্টেশন। মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে ফাটল ধরেছে আপ লাইনের ৪টি পিলারে। অথচ শহরের অন্যান্য মাটির নিচের স্টেশনগুলি প্রায় ৪০ বছর ধরে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছে, সেগুলিতে এমন সমস্যা দেখা যায়নি।
advertisement
প্রতিদিন যে স্টেশনে এত মানুষের যাতায়াত, সেখানে পরিকাঠামোয় কীভাবে এমন ত্রুটি? প্রশ্নের মুখে মেট্রো রেলের পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে সমস্যার মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা। নিউ গড়িয়া মেট্রো থেকে বহু মানুষ শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার ট্রেন ধরেন। এই পরিস্থিতিতে ভোগান্তি হচ্ছে তাঁদেরও।
advertisement
মেট্রো কর্তৃপক্ষ দাবি করছে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই এই ফাটল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি নিয়মিত 'হেলথ মনিটরিং' চালু থাকত, যদি আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়া হত, তবে কি এমন হতো? মেট্রো সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই নিউ গড়িয়া মেট্রো স্টেশনে সমস্যা দেখা যাচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুজোর পর এই কাজে হাত দেওয়া যাবে। গত সপ্তাহে লাগাতার বৃষ্টিতে বদলায় পরিস্থিতি। গঠনগত কারণে একের পর এক পিলারে ফাটল দেখা যায়। বসে গিয়ে প্ল্যাটফর্মের বেশ কিছু অংশ।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টেশনের এলাকাটি একসময় জলাভূমি ছিল। ফলে নরম মাটিতে পিলারের গঠন দুর্বল হতে পারে, বিশেষ করে যদি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস জানান, “এই ধরনের ফাটল সাধারণত মরচে পড়ার ফলে হয়। এটা একদিনে হয়নি, বহুদিন ধরে এমন চলছিল। মেট্রো কর্তৃপক্ষ নজর দেয়নি বলেই এই বিপত্তি।”
advertisement
সারাতে কতদিন সময় লাগবে জানাতে পারেনি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রো রেলের দাবি, ওভারগ্রাউন্ড স্টেশন ও অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরেই এই ফাটল দেখা দিয়েছে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কথায়, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। যে পিলারগুলিতে ফাটল দেখা গিয়েছে, সেগুলির সঙ্গে ছাদ যুক্ত রয়েছে। ফলে যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ সোমবার দুপুরের পর থেকে ব্লু লাইনে কোনও মেট্রোই কবি সুভাষ স্টেশন পর্যন্ত যায়নি। দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো চলে। আবার সেখান থেকেই রেক ঘুরিয়ে ফেরানো হয় দক্ষিণেশ্বরে।