এটি হেরাতের গিরিপথ। ছবিটি ৪ দশকেরও বেশি পুরনো। ছবিটি ৭০- এর দশকের। হেরাতের গিরিপথটি উঁচু পাহাড়ের মাঝখানে এমন একটি জায়গা, যেখানে রাস্তায় কাউকে দেখা যায় না। ছবিতে যে বাসটি দেখা যাচ্ছে, সেটি সেই সময় ভারত থেকে চলাচল করত। পথে যে জায়গাগুলোতে থামত সেগুলো ছিল কাবুল ও হেরাত। বাসের কিছু যাত্রীও এসব স্থানে নামতেন এবং উঠতেন। এমন বাস যেটি ভারত থেকে আফগানিস্তানে পৌঁছাত। সেই বাস সার্ভিস ৭০- এর দশকে বন্ধ হয়ে গেলে আর চালু হয়নি।
যে বাসের কথা বলা হচ্ছে, সেটি আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে যেতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগত। কিন্তু এই বাস সার্ভিস এমন ছিল যে ভারত থেকে আফগানিস্তান এবং ইরান পর্যন্ত অনেকে এটির যাতায়াতের জন্য অপেক্ষা করত। বাসের গন্তব্য ছিল লন্ডন। এই বাসটি ৭০- এর দশকে কলকাতা থেকে লন্ডন পর্যন্ত সার্ভিস দিত। এটি সিডনির অ্যালবার্ট ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ছিল। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত এই বাস সার্ভিস চালু ছিল। এর পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এই বাসের রুট কতটা আকর্ষণীয় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, একবার ভেবে দেখুন।
এটা সেই বাস সার্ভিসের টিকিট। ভাড়া ও রুট উল্লেখ করা হয়েছে এতে। এই বাস ছাড়ার দিন আগেই ঠিক করা থাকত এবং লন্ডনে পৌঁছানোর দিনও আগেই নির্ধারিত হত। ভারত থেকে লন্ডন হয়ে অনেক দেশের মধ্যে দিয়ে যেত এই বাস। পথে অনেক স্টপেজ ছিল। অনেক সময় রাস্তায় ঘোরাঘুরির জায়গা থাকলে হোটেলে যাত্রীদের রেখে ঘোরাত সফর পরিচালনা করা সংস্থা।
এই টিকিট পরবর্তী বছরগুলোর। ততদিনে ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৫ ডলার। বাসের টিকিটে আরও লেখা ছিল, ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত বন্ধ থাকলে বিমানে করে পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাওয়া হবে। তখন ভাড়া একটু বেশি হবে। যদিও সম্প্রতি কয়েক মাস আগে আবার একই ধরনের বাস চালুর ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ যে এত বছরে দেশগুলোর অবস্থা এতটাই বদলে গেছে যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যে দিয়ে এই ধরনের বাস পাস করানো যাবে না।