Knowledge Story: ফিনল্যান্ড হল বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ! কেন জানেন? ফাঁস হয়ে গেল রহস্য
- Published by:Satabdi Adhikary
Last Updated:
united nationsআরেকটি জিনিস যা ফিনল্যান্ডের মানুষকে অন্যান্য দেশের চেয়ে আলাদা করে তোলে, তা হল অন্যদের সাহায্য করার ইচ্ছা। ফিনল্যান্ডের বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, অন্যের মধ্যে আনন্দ সঞ্চার করতে পারলে নিজেও আনন্দিত থাকবেন।
রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে এই নিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ফিনল্যান্ড। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক এবং তৃতীয় স্থানে আইসল্যান্ড। প্রশ্ন হচ্ছে, ফিনল্যান্ডের নাগরিকেরা কেন অন্যান্য দেশের মানুষের চেয়ে বেশি সুখী? তাঁদের কি অনেক টাকা আছে? নাকি, তাঁদের জীবন যাপনের ধারাই অনেকখানি অন্য রকম? এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ফিনল্যান্ডেরই একজন মনোবিজ্ঞানী।
advertisement
ফিনল্যান্ডের অনেকগুলি বিষয় এই দেশকে অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে আলাদা করে দেয়। যেমন, এই দেশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, এখানকার সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ব্যক্তি এবং সর্বনিম্ন উপার্জনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই। দেশের নাগরিকদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা আছে এবং ফিনল্যান্ডে দুর্নীতির পরিমাণও অত্যন্ত কম। মানুষ একে অপরকে সাহায্য করে। চিকিৎসা ব্যবস্থাও ভাল। গণপরিবহণ অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য এবং সস্তা।
advertisement
ফিনল্যান্ডে বসবাসকারী মানুষদের খুশি থাকার আরও কিছু কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মনোবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক মার্টেলা। বলেছেন, এখানকার মানুষ একটি বিশেষ নীতিতে নির্ভর করেই জীবনযাপন করেন। নিজের জন্য বাঁচুন, অন্য কারও প্রত্যাশা পূরণের জন্য নয়। এখানকার মানুষ চিন্তায় কম ভোগেন। কারণ, তাঁরা কোনও কিছুরই খুব একটা অভাব বোধ করেন না। তাঁরা প্রয়োজনীয় সবকিছুই সহজে পেয়ে যান৷
advertisement
advertisement
ফিনল্যান্ডে একটি তত্ত্ব খুব জনপ্রিয়। এখানে শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন ৩ জনকে সাহায্য করে। পোস্টম্যানকে এক গ্লাস জল দেওয়া হোক, কী বয়স্কদের সঙ্গে বিকেল কাটানো বা কোনও পর্যটককে তাঁর রাস্তা খুঁজে পেতে সাহায্য করা। এই সহজ সাধারণ সাহায্য করার অভ্যাস এঁদের অপরিমেয় সুখ দেয়। মনোবলও বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আপনি যদি আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটান, তাহলে আপনি দীর্ঘজীবী হবেন।
advertisement
‘তালকুট’ শব্দটি ফিনল্যান্ডে খুবই জনপ্রিয়। এর অর্থ একসাথে এমন কিছু করা, যা কেউ একা করতে পারে না। মাঠে একসঙ্গে কাজ করার কিংবা শস্যাগারে একসঙ্গে সময় কাটানো। সমস্ত প্রতিবেশী স্বেচ্ছায় জড়ো হয়ে একে অপরের সাহায্যে দুর্দান্ত সব কঠিন কাজ নিমেষেই সেরে ফেলেন এখানে৷ তারপর একসাথে খাবার রান্না করে, একসাথে বসে খান। এটা একটা ঐতিহ্যের মতো। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাটা জীবনেযাপনের অভ্যাস বলে মনে করেন ফিনল্যান্ডের মানুষ৷
advertisement
সাধারণত, শান্তি ও প্রশান্তির সন্ধানে, মানুষ এমন কোনও জায়গায় যেতে চান, যেখানে তাঁরা একা সময় কাটাতে পারবেন। কিন্তু ফিনল্যান্ডের মানুষ একসঙ্গেই শান্তির সময় কাটান। এখানে মানুষ নীরবে থাকলেও পরস্পরের পাশে থাকেন৷ যোগাযোগ রাখেন। নীরবে একসাথে থাকা একটি সুদৃঢ় বন্ধন এবং ভালবাসার অনুভূতি দেয়। পরিবার বা বন্ধু বা প্রতিবেশীর সাথে একসঙ্গে সমুদ্র সৈকত বা নিরিবিলি জায়গায় যাওয়া এবং সেখানে প্রকৃতির দৃশ্য দেখা তো আরও বেশি আনন্দদায়ক।