Ibrahim Traore: বিশ্বের নতুন 'চে গেভারা', আমেরিকার যম! পুতিন বলছেন, নতুন বিশ্বনেতা! কে এই তরুণ নেতা জানেন! কী এমন ক্ষমতা এই যুবকের? শুনে চমকে উঠবেন
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
Ibrahim Traore: পশ্চিম আফ্রিকান দেশ বুরকিনা ফাসোর ৩৭ বছর বয়সি ক্যারিশমাটিক নেতা ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে গত কয়েক বছরে সমগ্র আফ্রিকার নেতা হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ইরানের সঙ্গে যখন ইজরায়েলের সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তখন আফ্রিকার ছোট্ট দেশ বুরকিনা ফাসো ইরানের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছিল। আর সেই সূত্রেই বারবার উঠে এসেছে বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ট্রাওরের নাম।
advertisement
পশ্চিম আফ্রিকান দেশ বুরকিনা ফাসোর ৩৭ বছর বয়সি ক্যারিশমাটিক নেতা ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে গত কয়েক বছরে সমগ্র আফ্রিকার নেতা হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার দেশসহ ওই অঞ্চলের বেশকিছু দেশের মানুষের মধ্যে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ ও নব্য-উপনিবেশবাদের ধারণা থেকে মুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই সেনাশাসক।
advertisement
বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে, আফ্রিকার বাইরেও অনেক দেশে ইব্রাহিম ট্রাওরের এই ভাবধারা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার সমর্থকরা তাকে ‘আফ্রিকার চে গেভারা’ নামে পরিচিত বুরকিনা ফাসোর মার্ক্সিস্ট বিপ্লবী নেতা থমাস সাঙ্কারার উত্তরসূরি হিসেবে মনে করেন।
advertisement
আন্তর্জাতিক কনসালটেন্সি ফার্ম কন্ট্রোল রিস্কস এর সিনিয়র গবেষক বেভারলি ওচিয়েং বলছেন, ট্রাওরের প্রভাব ব্যাপক। আমি কেনিয়ার রাজনীতিবিদ আর লেখকদের বলতে শুনেছি যে তারা বলছেন, আমরা এতদিন পর কাঙ্ক্ষিত নেতা পেয়েছি। অনেক আফ্রিকানই এখন আফ্রিকার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করছেন।
advertisement
তাদের জিজ্ঞাসা, বিপুল মাত্রায় সম্পদ থাকার পরও কেন আফ্রিকা মহাদেশ এখনো চরম দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে। আর আফ্রিকানদের এই মনোভাবই প্রতিধ্বনিত হয় ইব্রাহিম ট্রাওরের কার্যক্রমে।
advertisement
সেনা অভ্যুত্থানে ২০২২ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর ট্রাওরের সরকার সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করেছে। বুরকিনা ফাসোতে বামপন্থী অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন ও রাশিয়ার প্যারা মিলিটারি ব্রিগেড মোতায়েনের মত সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই তা অনেকটা পরিষ্কার হয়।
advertisement
বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ বুরকিনা ফাসোর বেশ কয়েকটি স্বর্ণের খনি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাত থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানার অধীনে নিয়ে এসেছেন ট্রাওরের সেনা সরকার। গত এপ্রিল মাসে তারা ঘোষণা করেছে, বিদেশি মালিকানাধীন আরও খনি রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
advertisement
রাষ্ট্রীয় নীতিতে এই ধরনের আমূল পরিবর্তন আনার কারণেই আফ্রিকায় ট্রাওরের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বলছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইন্সটিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের গবেষক এনোখ র্যান্ডি আইকিন্স। তিনি বলেনন, তাকে এখন আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণার ফলে তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
advertisement
গবেষক বেভারলি ওচিয়েংয়ের মতে ট্রাওরে প্রথম আফ্রিকানদের কাছে জনপ্রিয়তা পান যখন ২০২৩ সালে রাশিয়া-আফ্রিকা সামিটে তিনি বক্তব্য দেন। সেসময় তিনি আফ্রিকান নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে, প্রতিবার সাম্রাজ্যবাদী নেতাদের ঘোরানো ছড়ির ইশারায় পুতুলের মত নাচা বন্ধ করুন।
advertisement
তার ওই বক্তব্য সেসময় রাশিয়ার গণমাধ্যমে ফলাওভাবে প্রচার করা হয়েছিল। ট্রাওরেকে পুরো আফ্রিকার নেতা হিসেবে তুলে ধরতে ওই প্রচারণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কিছুদিন আগে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় উদযাপনের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাশিয়া গিয়েছিলেন ট্রাওরে।
advertisement
সেখানে বৈঠক শেষে তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন যে তিনি সহ পার্শ্ববর্তী দেশ মালি ও নাইজারের সেনাশাসকরা মিলে সন্ত্রাসবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে বদ্ধপরিকর।
advertisement
তার সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন ও বাকপটুতা তাকে সারাবিশ্বেই বেশ জনপ্রিয় করে তুলেছে। আফ্রিকান-আমেরিকান ও কৃষ্ণাঙ্গ ব্রিটিশ নাগরিকদের মধ্যেও তার এই জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে বলে বলছিলেন গবেষক মিজ ওচিয়েং। তার মতে, বর্ণবাদ, সাম্রাজ্যবাদ বা দাসত্বের প্রভাব যারা অভিজ্ঞতা করেছেন, তারা সবাই তার বার্তার অর্থ অনুভব করতে পারবেন।
advertisement
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ অবশ্য ট্রাওরের খুব একটা ভক্ত নন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ট্রাওরেকে ‘স্বঘোষিত আফ্রিকাপন্থি ও নব্য-সাম্রাজ্যবাদী’ জোটের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তার এক বক্তব্যে। ২০২৩ সালে ওই বক্তব্যে তিনি চিন ও রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছিলেন আফ্রিকার সাবেক ফরাসী কলোনি থাকা দেশগুলোকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে।
advertisement
ট্রাওরে যদিও ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। বুরকিনা ফাসোতে গত ১০ বছর ধরে চলা ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম এখন পার্শ্ববর্তী শান্তিপূর্ণ দেশ বেনিনেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইব্রাহিম ট্রাওরের জান্তা সরকার সরকারের সমালোচনাকারী বিরোধীদের বিরুদ্ধেও শক্ত অবস্থান নিয়েছে।
advertisement