Earthquake Tsunami Warning: খুব শীঘ্রই এই দেশে আছড়ে পড়বে ভয়ঙ্কর 'মেগা' সুনামি, চলবে ধ্বংসযজ্ঞ, মুছে যাবে ৩ শহর! সতর্কবার্তা গবেষকদের

ভয়াবহ মেগা-সুনামির আশঙ্কা! আগামী ৫০ বছরের মধ্যে আমেরিকার একাধিক রাজ্যে আছড়ে পড়তে পারে বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ—নতুন এক গবেষণায় এমনই চাঞ্চল্যকর সতর্কবার্তা দিয়েছে ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদরা।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্যাসকাডিয়া সাবডাকশন জোন নামের একটি বিশাল ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল আগামী ৫০ বছরে ৮.০ বা তার চেয়েও বেশি মাত্রার এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। এই ভূমিকম্পে উপকূলীয় অঞ্চলে সৃষ্ট হবে ভয়ংকর মেগা-সুনামি।

এই বিপদের মুখে সবচেয়ে বেশি রয়েছে আমেরিকার প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট অঞ্চল, অর্থাৎ উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগনের উত্তরাংশ এবং ওয়াশিংটনের দক্ষিণাংশ। পাশাপাশি, আলাস্কা ও হাওয়াইও সুনামির ঝুঁকিতে রয়েছে, কারণ এরা সক্রিয় ভূকম্প ও আগ্নেয়গিরির জোনের কাছাকাছি।

গবেষণার প্রধান লেখক ও ভূতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক টিনা ডুরা বলেন, “এই অঞ্চল আগেও সুনামি ও ভূমিকম্প দেখেছে, কিন্তু এবার সম্ভাব্য সাবসাইডেন্স বা ভূমিধস এবং তার ফলে সৃষ্ট বন্যার ব্যাপকতাকে আগে কখনও বিশ্লেষণ করা হয়নি।”

ক্যাসকাডিয়া সাবডাকশন জোনটি ক্যালিফোর্নিয়ার কেপ মেনডোসিনো থেকে শুরু হয়ে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপ পর্যন্ত ৬০০ মাইলজুড়ে বিস্তৃত। এখানে জুয়ান ডে ফুকা প্লেট ধীরে ধীরে নর্থ আমেরিকান প্লেটের নিচে সরে যাচ্ছে, যা ভূতত্ত্ববিদদের মতে মারাত্মক ধাক্কা দিতে পারে।

ডুরা আরও জানান, “এই অঞ্চল অতটা ঘনবসতিপূর্ণ না হলেও, প্রতিটি নদী মোহনায় ছোট ছোট জনবসতি রয়েছে, যেগুলি ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

এছাড়া, ভূমিধস বা প্লেটের নিচে সরে যাওয়া মাটির ফলে উপকূলবর্তী জমিগুলি নিম্নভূমিতে পরিণত হতে পারে, যা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করবে।

গবেষণায় হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, এই মেগা-সুনামির ঢেউ সাধারণ সুনামির মতো নয়। সাধারণ সুনামিতে ঢেউয়ের উচ্চতা হয় কয়েক ফুট, কিন্তু মেগা-সুনামিতে এই ঢেউ শত শত ফুট উঁচু হয়ে অনেক মাইল পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে পড়তে পারে।

এই ধরনের সুনামি সাধারণত সমুদ্রের নিচে বিশাল ভূমি চ্যুতি বা বিশাল মাপের আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হয়, এবং এর প্রভাব ধ্বংসাত্মক হয় সম্পূর্ণ উপকূলজুড়ে। তাই উপকূলবর্তী আমেরিকান রাজ্যগুলিকে এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এই গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে Proceedings of the National Academy of Sciences-এ, যা বিশ্বজুড়ে ভূতাত্ত্বিক ও দুর্যোগ প্রস্তুতি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোড়ন ফেলেছে।