জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change)। এটাই কি হাজার হাজার পাখির ডিভোর্স-এর একমাত্র কারণ! মানুষই শুধু নয়, পশু-পাখির উপরও প্রতক্ষ প্রভাব বিস্তার করে জলবায়ু পরিবর্তন। বহু প্রজাতির পশু-পাখির জীবনে প্রভাব পড়েছে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, অ্যালবাট্রস (Albatross) প্রজাতির পাখির বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন। এই প্রজাতির পাখি সঙ্গী বা সঙ্গীনীর প্রতি দায়বদ্ধ। তবে এখন হাজার হাজার পাখিকে সঙ্গী বা সঙ্গীনী ছাড়াই দেখা যাচ্ছে। (ছবি-shutterstock)
অ্যালবাট্রস বিশ্বের সব থেকে বড় ডানাওয়ালা সামুদ্রিক পাখি। এরা সাধারণত সমুদ্রের মাছ খেয়ে জীবন যাপন করে। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরে দেখা যায় এই প্পজাতির পাখিদের। বলা হয়, এই প্রজাতির পাখিরা মানুষের মতো সঙ্গী বেছে নেয়। তার পর সারা জীবন সেই সঙ্গীর সঙ্গেই থাকে। তাদের বিবাহবিচ্ছেদও অনেকটা মানুষের মতোই। দুজনের মধ্যে যে কেউ অন্য সঙ্গী বেছে নিলে অপরজন সরে যায়। (ছবি-shutterstock)
রয়্যাল সোসাইটি জার্নালে গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাসাগরের জলে উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য অ্যালবাট্রস পাখির জীবনে পরিবর্তন হচ্ছে। কারণ এই সময়ে তারা মাছ শিকারের জন্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। পাঁচজন বিজ্ঞানী একটি গবেষণার পর জানিয়েছেন, মূলত মাছ শিকার নিয়েই সঙ্গী বা সঙ্গীনীর সঙ্গে মনোমালিন্য হচ্ছে এই প্রজাতির পাখিদের। যার ফলে তারা আলাদা থাকছে।
অ্যালবাট্রস (Albatross) সঙ্গী বা সঙ্গীনীর প্রতি দায়বদ্ধ থাকে সব সময়। যা অন্য প্রজাতির পাখিদের মধ্যে বিরল। একজন সঙ্গীর সঙ্গেই এই প্রজাতির বেশিরভাগ পাখি জীবন কাটিয়ে দেয়। যা কি না বিরল ব্যাপার। দক্ষিণ আফ্রিকার অকল্যান্ড দ্বীপে এই পাখি দেখা যায় প্রচুর। ২০০৩ সালে এখানে প্রায় ১৬ হাজার যুগল দেখা গিয়েছিল। তবে এখন সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। বেশিরভাগ পাখি একা ঘুরছে, মাছ শিকার করছে।
জলবায়ু পরিবর্তন অ্যালবাট্রস পাখির জীবনচক্রে প্রভাব ফেলেছে। যার জেরে তারা সঙ্গী ছাড়াই থাকতে শুরু করেছে। প্রজননেও যার প্রভাব পড়ছে। ফলে কমে যাচ্ছে এই পাখির সংখ্যা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনও পাখি প্রজননে অক্ষম হলে তার সঙ্গী তাকে ছেড়ে চলে যায়। তার পরের মরশুমে সেই পাখি নতুন সঙ্গী খুঁজে নেয়। তা না হলে এই প্রজাতির পাখির বিবাহবিচ্ছেদ বিরল ব্যাপার। এখন প্রজননে সক্ষম পাখিকেও ছেড়ে যাচ্ছে তার সঙ্গী।