একই ফর্মুলা মেনে তৈরি হয়েছিল বলিউডের এই তিনটি ছবি, ৭ বছরের ব্যবধানে আসা প্রত্যেকটি ছবিই মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে ছিনিয়ে নিয়েছে ব্লকবাস্টারের তকমা
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Musical Blockbuster Bollywood Movies : বলিউডে একটা অনন্য বা বলা ভাল, বিশেষ জায়গা রয়েছে মিউজিক্যাল ফিল্মের। সমস্ত শ্রেণীর দর্শকরা স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের ছবির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকেন।
বি-টাউনে কোন ফর্মুলায় ছবি সুপারহিট হবে, সেটা আগে থেকে বোঝা যায় না। তবে তা সত্ত্বেও বহু প্রযোজক এবং পরিচালক বলিউডে রয়েছেন, যাঁরা একই ফর্মুলা অথচ নতুন নতুন ধারা ব্যবহার করে বারবার ব্লকবাস্টার ছবি উপহার হিসেবে দিয়ে আসছেন ভক্তদের। আজকের প্রতিবেদনে আমরা এমনই তিনটি ছবির কথা বলব। আর প্রত্যেকটি ছবিই ৭ বছরের ব্যবধানে মুক্তি পেয়েছে। আসলে এই তিনটি ছবির একটি বিশেষ মিল রয়েছে। আর প্রত্যেকটি ছবিই বলিউডকে রীতিমতো বদলে দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে আগমন ঘটেছে নতুন নতুন তারকাদের। সেই ছবিগুলির নামই জেনে নেওয়া যাক। বলিউডে একটা অনন্য বা বলা ভাল, বিশেষ জায়গা রয়েছে মিউজিক্যাল ফিল্মে র। সমস্ত শ্রেণীর দর্শকরা স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের ছবির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকেন। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিকে একটি নতুন দিশায় নিয়ে গিয়েছিল এই ছবিগুলি।
advertisement
আর এই মিউজিক্যাল ব্লকবাস্টার ছবিগুলি হল: ‘আশিকি’, ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ এবং ‘দিল তো পাগল হ্যায়’। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, প্রত্যেকটি ছবির গল্প ভীষণই ভাল। কিন্তু এই ছবির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পিছনে রয়েছে সুরেলা গানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। প্রত্যেকটি ছবিতেই রয়েছে প্রচুর গান। আর মজার বিষয় হল, হিন্দি ছবির দুনিয়ায় এক নয়া দিগন্ত খুলে দিয়েছিল তিনটি ছবিই। ১৯৯০ সালের ২৩ জুলাই মুক্তি পেয়েছিল ‘আশিকি’ ছবি। তাতে ছিল ১০টি গান। আবার ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে রয়েছে মোট ১৪টি গান। আর বলাই বাহুল্য যে, প্রতিটি গানই মন ছুঁয়ে গিয়েছে ভক্তদের। একটা গানও নিরাশ করেনি। আবার ‘আশিকি’ ছবিটিকেই মিউজিক্যাল অ্যালবাম বলে গণ্য করা হয়। আসলে এই ছবির গানগুলি প্রথমে ‘চাহত’ নামে একটি অ্যালবামের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। পরে পরিচালক মহেশ ভাট এই গানগুলির উপর একটি গল্প লিখে ফেলেন। আর সেই প্রেমকাহিনি কিন্তু খোদ পরিচালকের ব্যক্তিগত জীবনের উপরেই আধারিত ছিল। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ‘আশিকি’ ছবির গানের অডিও ক্যাসেট কোটি কোটি টাকায় বাজারে বিক্রি হয়েছে।
advertisement
এই ছবিটি প্রযোজনা করেছিলেন T-Series-এর মালিক গুলশন কুমার। আর ‘আশিকি’ ছবির গানের জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে পৌঁছে যায় যে, রাতারাতি তারকা হয়ে গিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী কুমার শানু। এদিকে রাহুল রায় এবং অনু আগরওয়াল হয়ে উঠেছিলেন পোস্টারের মুখ। নাদিম-শ্রাবণ জুটি এবং গীতিকার সমীর অঞ্জান একটি নতুন পরিচয় লাভ করেছিলেন। ছবিটি তৈরি হয়েছিল ৯০ লক্ষ টাকার বাজেটে। আর সারা বিশ্বে এটি আয় করেছিল ৫ কোটি টাকা। বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার তকমা পেয়েছিল ‘আশিকি’।
advertisement
এই তালিকার দ্বিতীয় ছবিটি হল ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’। এটি বলিউড সুপারস্টার সলমন খানের কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ ছবি বলে বিবেচিত হয়। সুরজ বরজাতিয়া পরিচালিত ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৪ সালের ৫ অগাস্ট। এই ছবির ১৪টি গান ছিল ৭১ মিনিটের। আর ছবিতে সঙ্গীত দিয়েছিলেন রাম লক্ষ্মণ। তাঁর আসল নাম হল বিজয় পাটিল। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ এবং ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবিতেও মিউজিক দিয়েছিলেন তিনি। এদিকে ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবির ‘দিদি তেরা দেবর দিওয়ানা’, ‘পহেলা পহেলা প্যায়ার হ্যায়’ এবং ‘জুতে দো প্যায়সে লো’ গানগুলি সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। যা এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে।
advertisement
১.২০ কোটিরও বেশি অডিও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছে। তবে ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবির গল্প ছিল আলাদা। এই ছবিতে কোনও খলনায়ক কিংবা খলনায়িকা ছিল না। সেই সময় ব্লকবাস্টার ফিল্মের ভাষা এবং অর্থই বদলে দিয়েছিল ছবিটি। আর এই ছবির জন্য সলমন খানের তুলনায় বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। সেই সঙ্গে এই ছবির হাত ধরে মাধুরীর স্টারডম আলাদা মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবির বাজেট ছিল প্রায় ৬ কোটি টাকা। আর সারা বিশ্বে এই ছবির সংগ্রহে এসেছিল ১২৭ কোটি টাকা। সর্বকালের সেরা ব্লকবাস্টার ছবি হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল ছবিটি। তবে এটিই প্রথম বলিউডি ছবি, যা ১০০ কোটির ব্যবসা করেছিল। আর বলাই বাহুল্য যে, নব্বইয়ের দশকের সবথেকে বেশি টাকা আয় করেছিল ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’।
advertisement
সলমন এবং মাধুরীর পাশাপাশি এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অলোক নাথ, রেণুকা সাহাণে, মণীষ বহেল, অনুপম খের এবং রিমা লাগুর মতো তারকাদের। তামিলনাড়ুর উটির নীলগিরি পাহাড়ে ছবির শ্যুটিং হয়েছিল। এই তালিকায় থাকা শেষ এবং তৃতীয় ছবিটি হল ‘দিল তো পাগল হ্যায়’। যা মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৭ সালের ৩০ অক্টোবর। আর ছবিকে ঘিরে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এক আলাদাই উন্মাদনা দেখা গিয়েছিল। ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-এর প্রযোজক-পরিচালক ছিলেন স্বয়ং যশ চোপড়া। আর এই ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন আদিত্য চোপড়া এবং যশ চোপড়া। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন উত্তম সিং। আর গীতিকার হলেন আনন্দ বক্সি।
advertisement
ছবিতে রয়েছে ১০টি গান। যার দৈর্ঘ্য ৫৪ মিনিট। ছবির প্রত্যেকটি গানই সুপারহিট ছিল। এমনকী এ-ও শোনা যায় যে, ছবিটি মুক্তির অনেক আগেই ৪.৫ কোটি টাকায় ছবির মিউজিক বিক্রি করে দিয়েছিলেন যশ চোপড়া। প্রায় ১.২ কোটি অডিও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল। আর ছবির বাজেট ছিল ৯ কোটি টাকা। সারা বিশ্বে এই ছবির সংগ্রহ ছিল ৭১ কোটি টাকা। ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ ব্লকবাস্টার ছবির তকমা পেয়েছিল। যদিও ছবির নাম প্রথমে ভাবা হয়েছিল ‘ম্যায়নে তো মোহব্বত কর লি হ্যায়’। তবে এই নাম একেবারেই না-পসন্দ ছিল আদিত্য চোপড়ার। সেই কারণে তা বদলে দিল তো পাগল হ্যায় করা হয়েছিল। আর এটাই ছিল প্রথম ছবি, যেখানে অক্ষয় কুমার এবং শাহরুখ খানকে একসঙ্গে কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। আবার এই ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে কাজ করেছিলেন শাহিদ কাপুরও।