মাধাপার গ্রাম কীভাবে সমৃদ্ধির স্বর্ণশিখর স্পর্শ করল, সেই রহস্য লুকিয়ে আছে গ্রামের লেউয়া পটেল সম্প্রদায়ের মধ্যে। এই প্রসঙ্গে মাধাপার গ্রামের লেউয়া পটেল সম্প্রদায়ের প্রধান এবং প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য জয়ন্ত ভাই মাধাপারিয়া জানিয়েছেন যে সম্প্রতি নয়, গ্রামের এই সমৃদ্ধি ১৯৩৪ সাল থেকেই বিদ্যমান। সেই সময়ে যখন গ্রামের বিদ্যালয় ভবনটি তৈরি হয়েছিল, তখন দূর দূর থেকে লোকে তা দেখতে আসত- এতটাই অনুপম ছিল তার শৈলী। তবে সেই বিদ্যালয় ভবন এখন আর নেই। ভূমিকম্পে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই সময়ে অধ্যয়নরত সব ছাত্রেরা মিলে নতুন করে তা গড়ে তোলেন।
জয়ন্ত ভাই মাধাপারিয়ার বক্তব্য থেকে গ্রামের সমৃদ্ধির সূত্রটিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি জানিয়েছেন যে অনেক আগে থেকেই গ্রামের লেউয়া পটেল সম্প্রদায়ের যুবকেরা বিদেশে উপার্জনের জন্য পাড়ি দিতেন। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, আফ্রিকা, দুবাই, কানাডার মতো নানা দেশে তাঁরা ছড়িয়ে পড়েন জীবিকার সংস্থানে। তাঁদেরই উপার্জিত অর্থে গত পাঁচ দশক ধরে গ্রাম সমৃদ্ধ হয়েছে। এই প্রসঙ্গে জয়ন্ত ভাই মাধাপারিয়া জানিয়েছেন যে এখন গ্রামের ব্যাঙ্কে সব মিলিয়ে ৫০০০ কোটি টাকা জমা থাকলেও অতীতেও বিত্তের পরিমাণ কম ছিল না। ১৯৭৫ সালেই যেমন গ্রামের পোস্ট অফিসে জমা ছিল ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। সেই সময়ে সবাই পোস্ট অফিসে টাকা রাখেন আর এখন রাখেন ব্যাঙ্কে- এই যা তফাত!
স্বাভাবিক ভাবেই মাধাপারে আধুনিক জীবনের সব বন্দোবস্তই মজুত- বর্তমানে এক লাখ মানুষ বাস করেন সেখানে। বাসিন্দারা অধিকাংশই কৃষিজীবী। এই জায়গায় এসে মাধাপার কীভাবে ছায়াছবিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছে, তা না উল্লেখ করলে অন্যায় হবে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান যখন ভুজের এয়ারস্ট্রিপ ধ্বংস করে, সেই সময়ে গ্রামের মহিলারা ভারতীয় সেনাকে রানওয়ে তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন, এই ঘটনা অবলম্বনেই তৈরি হয়েছে সোনাক্ষী সিনহা ও অজয় দেবগন অভিনীত ভুজ: দ্য প্রাইড অফ ইন্ডিয়া।