Kharagpur IIT : আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) বিজ্ঞানী অধ্যাপক শুভাশিস দে ছিনিয়ে নিয়েছেন 'হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন পুরস্কার'
- Published by:Samarpita Banerjee
Last Updated:
চলতি বছরের (২০২২) জুন মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা শহরে আয়োজিত এই বিষয়ক অনুষ্ঠানে সশরীরে হাজির থেকে এই পুরস্কার নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক শুভাশিস দে-কে
#পশ্চিম মেদিনীপুর- 'নদী আপন বেগে পাগলপারা'- শুধু রবি ঠাকুরের গানে নয়, ভৌগলিকভাবেও। স্রোতস্বিনী তার আপন স্রোতে, আপন খেয়ালে বয়ে চলে! বিজ্ঞানী 'সাহিত্যিক' জগদীশ চন্দ্র বসু তাঁর "অব্যক্ত" গ্রন্থের 'ভাগীরথীর উৎস সন্ধানে' বর্ণনা করেছেন, "নদীকে আমার একটি গতি পরিবর্তনশীল জীব বলিয়া মনে হইত।" নদীর উৎসপথ-ও তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন 'মহাদেবের জটা' স্বরূপ হিমালয় পর্বতমালা (গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা) থেকে! আর, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু'র সেই 'অব্যক্ত' প্রকাশিত (১৯২১) হওয়ার ঠিক ১০০ বছর পরে আরেক বাঙালি বিজ্ঞানী সারা বিশ্বকে জানালেন, কিভাবে নদীর গতিপথের খামখেয়ালিপনায় বন্যা হয়, ভেঙে যায় সেতু, নিমজ্জিত হয় সভ্যতা! কিভাবেই বা এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে, তাও জানিয়েছেন নিজের গবেষণায়।
গত ৩০ বছর ধরে নদীর গতিরহস্যময়তা মূলক গবেষণায় নিয়োজিত থেকে, আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) বিজ্ঞানী অধ্যাপক শুভাশিস দে ছিনিয়ে নিয়েছেন 'হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন পুরস্কার' (Hans Albert Einstein Award)। উল্লেখ্য যে, জগদ্বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সুযোগ্য সন্তান প্রকৃতি বিজ্ঞানী হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের (Hans Albert Einstein) এর নামে ১৯৮৮ সাল থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে, নদী পরিবহন বা জলপথ নিয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গবেষণাকারীদের। পুরস্কার প্রদান করা হয় 'আমেরিকান সোসাইটি অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারস' (ASCE/ American Society of Civil Engineers) এর পক্ষ থেকে। ভারতবর্ষ থেকে এই প্রথমবার কোনও বিজ্ঞানী এই পুরস্কার পেলেন। স্বভাবতই, এই খবর শুধু আইআইটি খড়্গপুর নয়, সারা দেশের কাছেই গর্বের!
advertisement
প্রসঙ্গত, আইআইটি খড়গপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (Civil Engineering) বিভাগের প্রথিতযশা গবেষক ও অধ্যাপক ড. শুভাশিস দে গত ৩০ বছর ধরে নদীর গতিরহস্যময়তা বিষয়ক গবেষনায় নিয়োজিত থেকেছেন। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইআইটি খড়্গপুরের অধ্যাপক ড. দে জানিয়েছেন, "নদীর গতিপথ পরিবর্তন, নদীর ভাঙন, বন্যায় সেতু ভেসে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞান থেকেই পরিকাঠামো উন্নত করা যায়। কিভাবে, সুরক্ষিত অঞ্চলে ও পদ্ধতিতে সড়ক, সেতু প্রভৃতি গড়া যায়, তা নিয়ে আমি গত তিন দশক ধরে কাজ করে চলেছি।" তিনি এও জানিয়েছেন, "আমার এই গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার অন্যতম ঈর্ষণীয় প্রতিষ্ঠান আমেরিকান সোসাইটি অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারস (American Society of Civil Engineers)। নিঃসন্দেহে সম্মানিত বোধ করছি। নদী ভাঙ্গন ও নদীর গতিপথ নিয়ে আমার সারা জীবনের কাজ স্বীকৃতি পেল! এই বয়সেও কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাচ্ছি।"
advertisement
advertisement
উল্লেখ্য যে, বিজ্ঞানী হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যু হয় ১৯৭৩ সালে। তাঁর 'নদীপথ ও পলল পরিবহন' (Sediment Transport) এর কাজের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১৯৮৮ সাল থেকে নদী বিষয়ক বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ গবেষণা গুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। গত ৩৫ বছরে এই প্রথম কোন ভারতীয় বিজ্ঞানী এই পুরস্কার পাচ্ছেন। স্রোতস্বিনী নদীর প্রবাহ পথের অপার রহস্য এবং সভ্যতাকে রক্ষার বিষয়ে সুদীর্ঘ ৩০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে অধ্যাপক দে এই বিরল পুরস্কারে সম্মানিত হলেন। গর্বিত সারা দেশ ও আইআইটি খড়গপুর (IIT Kharagpur)। জানা গেছে, চলতি বছরের (২০২২) জুন মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা শহরে আয়োজিত এই বিষয়ক অনুষ্ঠানে সশরীরে হাজির থেকে এই পুরস্কার নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক শুভাশিস দে-কে।
advertisement
Partha Mukherjee
Location :
First Published :
February 10, 2022 7:32 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
Kharagpur IIT : আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) বিজ্ঞানী অধ্যাপক শুভাশিস দে ছিনিয়ে নিয়েছেন 'হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন পুরস্কার'