West Medinipur News: মুম্বইয়ের রক্তে প্রাণ বাঁচল বাংলার শিশুর! কিন্তু কেন...
- Published by:kaustav bhowmick
- news18 bangla
- Reported by:RANJAN CHANDA
Last Updated:
মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে সুপ্রীতি পালের বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা হয়। আর তাতেই জানা যায় সে ই-বিটা (E-BETA) থ্যালাসেমিয়াতে আক্রান্ত।
পশ্চিম মেদিনীপুর: একেই বোধহয় বলে অসাধ্য সাধন। চন্দ্রকোনার ছোট শিশু সুপ্রীতি পালের ক্ষেত্রে তাই ঘটল। মুম্বাই থেকে নিয়ে আসা রক্তে প্রাণে বাঁচল তার। যদিও কাজটা মোটেও সহজ ছিল না।
মাসখানেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার শ্যামখুরি গ্রামের এগারো বছরের শিশু সুপ্রীতি পাল বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান সে থ্যালাসিমিয়ায় আক্রান্ত। তবে বিপদ এখানেই শেষ হয়নি। সুপ্রীতির যে থ্যালাসেমিয়া আছে তা সচরাচর দেখা যায় না, এটা বিরল ধরনের। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল বা মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে এর চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাটা মনে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে সুপ্রীতিকে কলকাতার মেডিকেল কলেজ পাঠান চিকিৎসকরা।
advertisement
মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে সুপ্রীতি পালের বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা হয়। আর তাতেই জানা যায় সে ই-বিটা (E-BETA) থ্যালাসেমিয়াতে আক্রান্ত। এর চিকিৎসা হিসেবে লাগবে ও-পজেটিভ গ্রুপের রক্ত। জটিলতা এখানেই শেষ নয়। সুপ্রীতিকে সুস্থ করতে গেলে তাকে যে ও-পজেটিভ রক্ত দেওয়া হবে তার কম্পোনেন্ট হতে হবে ই-নেগেটিভ এবং ফেনোটাইপ আর টু আর টু (R2R2)।
advertisement
advertisement
এই রক্ত যোগাড় করা কতটা কঠিন জানেন? বরং একটা তথ্য তুলে ধরা যাক আপনাদের সামনে। গোটা রাজ্যে মাত্র দু’জনের শরীরে এই বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন রক্ত আছে! অন্তত সরকারি রেকর্ড তাই বলছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে এখানেই হয়তো সবাই যুদ্ধ হেরে যায়। কিন্তু সুপ্রীতির লড়াইটা এখান থেকেই শুরু হয়েছিল। তার জন্য উপযুক্ত রক্ত খুঁজে বের করতে যুদ্ধে সামিল হন মেদিনীপুরের শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সামন্ত।
advertisement
ওই বিরল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন রক্ত যাদের আছে তাঁদের একজন থাকেন কলকাতা থেকে অদূরে নৈহাটিতে। অপরজন থাকেন বিদেশে। প্রাথমিকভাবে নৈহাটি থেকে ওই ব্যক্তিকে মেডিকেল কলেজে নিয়ে এসে এক ইউনিট রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু প্রয়োজন ছিল দুই ইউনিট রক্ত। ফলে আরেক ইউনিট রক্ত জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় সুপ্রীতির পরিবার-পরিজন, শুভানুধ্যায়ী থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকেও।
advertisement
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিরল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন রক্তের সন্ধানে লাগাতার প্রচার চলতে থাকে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকরা, সকলেই যে যার নিজস্ব যোগাযোগ ও পরিচিতি কাজে লাগিয়ে এই বিরল গোত্রের রক্তের সন্ধান করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত এই বিরল গ্রুপের আরও একজন রক্তদাতার সন্ধান পাওয়া যায় মুম্বইতে। কলকাতা মেডিকেল কলেজের সহযোগিতায় মুম্বইতে রক্তদান করেন তিনি। সেই রক্ত বিমানে করে মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। দিনটা ছিল ১৫ জুন। শুক্রবার বিকেলে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুপ্রীতির শরীরে এই রক্ত স্থানান্তর করা হয়। আপাতত তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন এই বছরের জন্য স্বস্তি। আগামী এক বছর সুপ্রীতির আর কোনও রক্ত লাগবে না। ফলে আপাতত কিছুদিনের জন্য নিশ্চিত। সাময়িকভাবে হলেও এক অসম্ভব যুদ্ধ জিতে উঠল সুপ্রীতি।
advertisement
রঞ্জন চন্দ
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
June 18, 2023 12:12 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
West Medinipur News: মুম্বইয়ের রক্তে প্রাণ বাঁচল বাংলার শিশুর! কিন্তু কেন...