পশ্চিম বর্ধমান: বড় হয়েছেন শাল, পিয়ালের সবুজ জঙ্গলের মাঝে। অভিভাবকদের শাসনও তেমনভাবে চোখে পড়েনি। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন নিজের দিশায়। মাস্টার্স করেছেন। করেছেন বিএড-ও। তবু পাননি সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার সুযোগ। কিন্তু তাতেও স্বপ্ন দেখা থামেনি ইমানি মুর্মুর। সেই স্বপ্নের জাল বুনে দিচ্ছেন নতুন প্রজন্মের মধ্যে। সরকারি স্কুলের শিক্ষক হতে পারেননি তো কী হয়েছে! ইমানি বিনামূল্যে পড়াচ্ছেন এক ঝাঁক দরিদ্র আদিবাসী ছেলে-মেয়েকে।
কাঁকসার মোলাডাঙায় বাড়ি ইমানি মুর্মুর। এই এলাকার মূলত আদিবাসী পরিবারের বসবাস। প্রায় ১০০ টি পরিবার থাকেন। বেশিরভাগই দিনমজুরি করে কোনরকমে সংসার চালান। ফলে সন্তানকে ভালো করে লেখাপড়া করানোর সামর্থ্য বেশিরভাগেরই নেই। সেই সঙ্গে নিজেরা লেখাপড়া জানেন না বলে সন্তানের পড়াশোনার দিকেও তেমন নজর দিতে পারেন না। অন্যদিকে এলাকায় ভাল স্কুল নেই। এ তো গেল মুদ্রার একপীঠ। মুদ্রার অন্যপীঠে আছেন ইমানি মুর্মু। যিনি নানান প্রতিকূলতাকে টপকে এই এলাকায় উচ্চশিক্ষার আলো এনে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হোলিতে ঝাঁ চকচকে নতুন ভবনে উঠে এল বড়ঞা থানা
তবে সরকারি স্কুলের শিক্ষক হওয়ার যে স্বপ্ন ছিল তা এখনও পূরণ হয়নি। তবে স্কুলের শিক্ষক হতে না পারলেও শিক্ষাদান থেকে বিরত থাকেননি তিনি। বিনামূল্যেই নিজের বাড়ির উঠোনে বসে প্রতিদিন পরান এলাকার দুঃস্থ আদিবাসী ছেলেমেয়েদের। তাদের চোখেও এঁকে দিচ্ছেন শিক্ষিত হওয়ার রঙিন স্বপ্ন।
ইমানি মুর্মু জানান, এই মুহূর্তে নানান জটিলতার কারণে স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ থমকে আছে। তাই তাঁর প্রতীক্ষা বাড়ছে। কিন্তু নিজের মহল্লায় তিনি একা উচ্চশিক্ষিত হয়ে থেকে যেতে চান না। তাঁর দেখানো পথ ধরে যাতে আরও অনেকে উঠে আসে তাই নিরন্তর ছেলেমেয়েদের চোখে বুনে চলেছেন উচ্চশিক্ষার বীজ।
নয়ন ঘোষ
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।