হোম /খবর /খেলা /
ঋদ্ধি ইস্যুতে সিএবি কর্তাদের মধ্যেই ‘মতবিরোধ’, আপাতত ফরমান মুখে কুলুপের

Wriddhiman Saha : ঋদ্ধি ইস্যুতে সিএবি কর্তাদের মধ্যেই ‘মতবিরোধ’, আপাতত জারি মুখে কুলুপ দেওয়ার ফরমান

একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে একাধিক ইস্যু

একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে একাধিক ইস্যু

Wriddhiman Saha : সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক আর সচিব স্নেহাশিসের মধ্যে ফাটল? আসন্ন নির্বাচনের আগে সিএবির রাজনীতির খেলা শুরু? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঋদ্ধিমান ইস্যুতে সিএবির মধ্যে ফাটল স্পষ্ট। বিরাট কমিউনিকেশন গ্যাপ

  • Share this:

কলকাতা: সিএবি-র নোংরা রাজনীতির শিকার ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)? ভারতীয় উইকেটরক্ষককে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সিএবি কর্তারা। ভিন্ন মেরুতে সিএবি প্রেসিডেন্ট এবং সচিব, যুগ্ম সচিবরা। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা। আপাতত ঋদ্ধিমান ইস্যুতে মুখে কুলুপ দেওয়ার ফরমান জারি হয়েছে।

কিন্তু ঋদ্ধিমানকে নিয়ে কেন এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বঙ্গ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থায় (CAB)? ভারতের হয়ে চল্লিশটা টেস্ট খেলা কিপারের হয়ে কথা না বলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের খেলায় নামলেন সিএবি-র একাংশের কর্তারা? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঋদ্ধিমান ইস্যুতে সিএবির মধ্যে ফাটল স্পষ্ট। বিরাট কমিউনিকেশন গ্যাপ। আর বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের কত কাছে কে আছেন, তা বোঝাতেই নাকি অদ্ভুত খেলায় নেমে পড়েছেন কিছু কর্তা।

অতীতে ভারতীয় দল থেকে সৌরভের (Sourav Ganguly) বাদ পড়ার পর সিএবি কর্তারা সরব হয়েছিলেন কিংবা বোর্ডের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, ঋদ্ধিমানের ক্ষেত্রে কেন সেই কাজ করলেন না বর্তমান কর্তারা? উল্টে কেন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রঞ্জি খেলতে না চাওয়া ঋদ্ধিমানকে অপরাধী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করছেন একাংশের কর্তারা? এইসব একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে একাধিক ইস্যু।

আরও পড়ুন : আইপিএলের প্লে অফ পর্ব হতে পারে আমদাবাদে

ঘটনার সূত্রপাত গত মাসে। আচমকা খবর প্রকাশিত হয়, ঋদ্ধি বাংলার হয়ে রঞ্জি খেলতে চাইছেন না চলতি বছর। ভারতীয় উইকেটকিপারকে ছাড়াই বাংলার রঞ্জি দল ঘোষণা করা হয়। সেই সময়েই আচমকা সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত হয় পাকাপাকিভাবে ভারতীয় দল থেকে ছাঁটাই হতে চলেছেন ঋদ্ধিমান। শিলিগুড়ির পাপালিকে নিয়ে জল্পনার মাঝেই সিএবির রক্তদান দিবসে সস্ত্রীক ইডেনে এসে সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন ঋদ্ধি। সূত্রের খবর, সেই সময় ঋদ্ধি অভিষেককে পুরো বিষয়টি জানান। এমনকি ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মা আগামী দিনে ভারতীয় দলে যে তাঁকে রাখবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন, তাও অভিষেক ডালমিয়াকে বলেন ঋদ্ধি। তবে রঞ্জি না খেলার পিছনে ঋদ্ধিমানের যুক্তি ছিল পারিবারিক কিছু সমস্যা। যদিও সূত্রের দাবি, পারিবারিক কারণ অবশ্যই ঋদ্ধিমানের রঞ্জি না খেলার কারণ, তবে ভারতীয় টেস্ট দলে যেহেতু তিনি আর থাকবেন না সেইজন্য তাঁর জায়গায় বাংলা জুনিয়র ক্রিকেটারকে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন ঋদ্ধি।

আরও পড়ুন : ঋদ্ধিমান সাহাকে হুমকি ও ভয়ভীতির তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গড়ল বিসিসিআই

জানা গিয়েছে, অভিষেক ডালমিয়া সেই সময় বারংবার ঋদ্ধিমানকে খেলার জন্য অনুরোধ করেন। এমনকি ঋদ্ধির ভারতীয় দলের ইস্যুটি নিয়ে বিসিসিআই-এর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও নাকি জানিয়েছিলেন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আমদাবাদে বিসিসিআই সচিব জয় শাহকে ঋদ্ধিমানের বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করেন অভিষেক। যদিও প্রকাশিত খবর অনুযায়ী শ্রীলঙ্কা সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েন বঙ্গ কিপার। এই পর্যন্ত বিষয়টি জলের মত পরিষ্কার।

আরও পড়ুন : দুরন্ত ইনিংসের জন্য রোহিত, বিরাট এবং কোচ দ্রাবিড়কে ধন্যবাদ দিচ্ছেন ঈশান

এর পরই ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন ঋদ্ধিমান। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভের আশ্বাস সত্ত্বেও ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার খবর প্রকাশে নিয়ে আসেন ঋদ্ধি। সেই সময় পাপালি জানান, কাঁধে ব্যথা নিয়ে কানপুর টেস্টে লড়াইয়ের পর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে নাকি হোয়াটসঅ্যাপে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বলেছিলেন যতদিন আমি আছি চিন্তা করতে হবে না ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝেই ভারতীয় কোচ দ্রাবিড় যে তাকে অবসর নিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সেটাও প্রকাশ্যে বলে দেন ঋদ্ধিমান। নির্বাচন প্রধান চেতন শর্মা যে তাঁকে আর ভারতীয় দলে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাও প্রকাশ করেন ঋদ্ধি।

বঙ্গ কিপারের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারের পরেই সিএবি একাংশের কর্তারা প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়ার বিপরীত রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেন। সিএবি সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় অর্থাৎ সৌরভের দাদা জানান, সৌরভের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথোপকথন সাংবাদিকদের বলে ঠিক করেননি ঋদ্ধিমান। এমনকি ঋদ্ধিমানের বিষয়ে বিসিসিআইকে কোনও অনুরোধ করবে না সিএবি, সেটাও জানিয়ে দেন সচিব। তাছাড়াও দাবি করেন, রঞ্জি দল গঠন করার মুহূর্তে তিনি নাকি জানতেনই না ঋদ্ধি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে খেলতে রাজি নন। অথচ দল নির্বাচনের বেশ কয়েকদিন আগেই সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেকের সঙ্গে এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করে ফেলেছেন ঋদ্ধিমান।

ঋদ্ধিমানের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, অভিষেক ডালমিয়া ছাড়াও বাংলার কোচ অরুণলাল, নির্বাচক প্রধান শুভময় দাসকে ঋদ্ধি আগেই রঞ্জি না খেলার বিষয়টি রেখেছিলেন। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। ঋদ্ধিমানের বিষয়টি সিএবি-র একাধিক ব্যক্তি যখন জানতেন তাহলে কেন সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হল না সচিব স্নেহাশিসকে? নাকি সব জেনেও সিএবি সচিব অন্য কোনও কারণে ঋদ্ধির ভুলগুলো প্রকাশ্য তুলে ধরেছেন? নাকি সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক আর সচিব স্নেহাশিসের মধ্যে ফাটল? আসন্ন নির্বাচনের আগে সিএবি-র রাজনীতির খেলা শুরু?

এ সবের প্রশ্নের মাঝেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন সিএবি যুগ্মসচিব দেবব্রত দাস। তিনি আবার নাকি ঘনিষ্ঠমহলে দাবি করেছেন, বাংলার হয়ে খেলার ব্যাপারে ঋদ্ধিমানের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে নাকি ঋদ্ধিমান বাংলার হয়ে খেলতে চান না। এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরই ঋদ্ধিমানের অনুরাগীরা আবার আসরে নেমে পড়েছেন সিএবি কর্তাদের তুলোধনা করতে। যদিও ঋদ্ধিমান এ সব বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। তবে ঋদ্ধিমানের স্ত্রী রোমি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। ঋদ্ধির দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ক্ষুব্ধ তিনি। রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলার হয়ে ঋদ্ধিমানের সাফল্য তুলে ধরেছেন। সবমিলিয়ে ঋদ্ধিমান প্রসঙ্গ থামার লক্ষণ নেই।

Published by:Arpita Roy Chowdhury
First published:

Tags: CAB, Cricket, Wriddhiman Saha