#নয়াদিল্লি: রিত্ত-তে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী সাক্ষী মালিকের কৃতিত্বে পদোন্নতি হল সাক্ষীর বাবার ৷ দিল্লি পরিবহণ দফতরের কর্মী সাক্ষীর বাবাকে উচ্চতর পদে নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করল দিল্লি সরকার ৷
রোহতাক থেক রিত্ত-র সফর ৷ সাক্ষী মালিকের কাছে রূপকথার কম নয় ৷ এটাই হয়তো সবচেয়ে বড় বিশ্ময় ৷ যে রাজ্য কন্যা হত্যার জন্য কুখ্যাত ৷ সেই রাজ্যের মেয়েই ভারতের জন্য অলিম্পিক থেকে ছিনিয়ে আনলেন প্রথম পদক!
হরিয়ানা এই বছর ২৩-এর কন্যার কীর্তিতে গর্বে ফুলে উঠেছে ভারতের বুক ৷ সাক্ষীর হাত ধরেই এবারের অলিম্পিকে প্রথম পদক এসেছে ভারতের কাছে ৷ ১২ বছরের তপস্যা, কঠিন অধ্যাবসায়, পরিশ্রমে বাস্তব করেছেন তাঁর স্বপ্ন ৷ প্রথম মহিলা কুস্তিগির হিসেবে অলিম্পিকে ব্যক্তিগত বিভাগে পদক জিতে ইতিহাস গড়েছেন সাক্ষী ৷ আর সেই ইতিহাস-রূপকথা কোনটাই বাস্তব হত না যদি না সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে সাক্ষীর সমর্থনে তাঁর বাবা মা রুখে না দাঁড়াতেন ৷
সংরক্ষণশীল গ্রামের মেয়ে কুস্তির ময়দানে! ফোগট পরিবার বা মালিক পরিবারের মেয়েরা ভারতের কুস্তিতে না এলে বিশ্ব মঞ্চে অনেক সম্মান অধরা রয়ে যেন ভারতের ৷ প্রথম থেকেই সাক্ষীর কুস্তি চালিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে সওয়াল করেছে সমাজ ৷
‘মেয়ে হয়ে জন্মেছে, সে কিনা ছোট ছোট জামা কাপড় পরে পুরুষদের খেলা খেলবে ৷ যত সব ন্যাকামো!’
কটাক্ষ ছুটে এসেছে বহু ৷ একসময়ে মালিক পরিবারের মেয়ে ছোট ছোট জামাকাপড় পরে রিংয়ে পুরুষদের সঙ্গে কুস্তি করে, এই অভব্যতার দাওয়াই হিসেবে একঘরে করে দেওয়া সাক্ষী মালিকের পরিবারকে ৷ তবু মেয়ের প্রতিভার রাস্তায় সেই কাঁটাকে প্রাচীর হতে দেননি মালিক দম্পতি ৷ অবলীলায় তুলে ফেলেছেন তা ৷ কান দেননি কোনও কিছুতেই ৷ সাক্ষীকে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত সমর্থন যুগিয়ে গিয়েছেন ৷ তাই পরিশ্রম ছাড়াও সাক্ষীর সাফল্যের মন্ত্রা তাঁর পরিবারের সমর্থন ৷
যে রাজ্য কন্যাভ্রূণ হত্যায় প্রথম ৷ সেই রাজ্যের একটি ছোট গ্রামের এক ছোট পরিবার যা করে দেখিয়েছে তা কোনও অংশে কম নয় ৷ সেই সমর্থনের পুরস্কার হিসেবে তাঁর পরিবারকেও সম্মান দিতে কার্পন্য করছে না কেন্দ্র ৷ যাতে সাক্ষীর মতো দেশের আরও মেয়েরা তাদের লক্ষ্যে পূরণে পরিবারকে সঙ্গে পায় ৷
ভারতীয় খেলার ইতিহাসে সাক্ষীর কৃতিত্ব লেখা থাকবে চিরকাল ৷ সঙ্গে কন্যাসন্তানের জন্য মডেল ফ্যামিলি হিসেবে লেখা থাকবে সাক্ষীর পরিবারের নাম ৷
পদক জেতার পর থেকে পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকা শেষ হচ্ছে না অলিম্পিকে কুস্তিতে প্রথম পদকজয়ী কুস্তিগির সাক্ষীর ৷ ইতিমধ্যেই চার কোটি টাকারও বেশি অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন সাক্ষী ৷ কিন্তু তাঁর কৃতিত্বের জন্য তাঁর বাবার পদোন্নতির খবরটা নিঃসন্দেহে সাক্ষীর কাছে অনেক বেশি গর্বের ও আনন্দের ৷
রাজ্যকে গর্বিত করেছেন ২৩ বছরের সাক্ষী। তাই আড়াই কোটি টাকা নগদ পুরস্কারের সঙ্গে ইতিমধ্যে চাকরির কথাও ঘোষণা করেছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। এছাড়া ব্রোঞ্জ পদক জিতলে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থা। সেটাও পাচ্ছেন সাক্ষী।
তাদের কোনও কর্মী ব্রোঞ্জ পদক জিতলে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রেল। রেলের কর্মী হওয়ায় সেই টাকাও পাচ্ছেন সাক্ষী। পাশাপাশি সাক্ষীকে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া কথা ঘোষণা করেছে একটি ইস্পাত প্রস্তুতকারক সংস্থা। এখানেই শেষ হচ্ছে না পুরস্কার ৷ কারণ অলিম্পিকে ভারতের সব প্রতিযোগীকে ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন অভিনেতা সলমন খান। এদিন আলাদা করে আরও ১ কোটি টাকা আর্থিক পুরস্কার সাক্ষী মালিককে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে দিল্লি সরকার৷ তাই সব মিলিয়ে প্রায় চার কোটি টাকা এখন পুরস্কার হিসেবে পেতে চলেছেন রোহতাকের মেয়ে ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: 2016 rio olympics, India in Rio Olympic 2016, Reward, Rio 2016, Rio Olympics 2016, Sakshi Malik, Sakshi Malik Family