ক্রিকেট ইতিহাসের ৪টি এমন রেকর্ড, যা ভাঙা প্রায় একপ্রকার অসম্ভব

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং কিংবদন্তি জ্যাক হবস প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি শতরান করার অনন্য কীর্তির অধিকারী। তিনি ২৯ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে ৮৩৪টি ম্যাচে ১৯৯টি সেঞ্চুরি ও ২৭৩টি অর্ধশতরান করেছেন। ১৯০৫ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে তিনি ৬১,৭৬০ রান সংগ্রহ করেন, যা আজও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। টেস্ট ক্রিকেটেও তিনি করেছেন ৫,৪১০ রান, গড় ৫৬। আধুনিক যুগের কোনো ব্যাটসম্যানই এখন আর এত দীর্ঘ সময় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেন না, তাই হবসের এই রেকর্ড ভাঙা কার্যত অসম্ভব।

অস্ট্রেলিয়ার মহান ব্যাটসম্যান স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নাম। তার টেস্ট গড় ৯৯.৯৪—যা আজও কেউ ভাঙতে পারেনি। যদি তিনি শেষ ইনিংসে শূন্য না করতেন, তার গড় হতো ঠিক ১০০। মাত্র ৫২টি টেস্টে ৬,৯৯৬ রান করা এই কীর্তির কেউ কাছাকাছিও যেতে পারেননি। আধুনিক যুগের সেরা ব্যাটারদের গড় যেখানে ৫০–৬০ এর মধ্যে, সেখানে ব্র্যাডম্যানের এই রেকর্ড অনন্তকাল অটুট থাকবে বলেই মনে হয়।

ভারতের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মা ওয়ানডে ক্রিকেটে এক অনন্য রেকর্ডের মালিক। তিনি একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস—২৬৪ রান (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০১৪)—ওডিআই ইতিহাসে সর্বোচ্চ। যেখানে অনেক খেলোয়াড় একটি ডাবল সেঞ্চুরিও করতে পারেন না, সেখানে তিনটি করা রোহিতের এই কীর্তি ভাঙা অত্যন্ত কঠিন।

ইংল্যান্ডের স্পিনার জিম লেকার ১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে নিয়েছিলেন ১৯টি উইকেট—প্রথম ইনিংসে ৯টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০টি। টেস্ট ক্রিকেটে এমন আধিপত্য দেখানো আর কোনো বোলারের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আজকের যুগে পিচ, ব্যাটিং কৌশল এবং নিয়মের কারণে এই রেকর্ড ভাঙা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করা হয়।

এই চারটি রেকর্ড শুধু পরিসংখ্যান নয়, ক্রিকেটের ইতিহাসে কিংবদন্তি অধ্যায়। যুগ বদলেছে, খেলার ধরণ বদলেছে, কিন্তু জ্যাক হবস, ডন ব্র্যাডম্যান, রোহিত শর্মা এবং জিম লেকারের এই কীর্তিগুলি আজও ক্রিকেটের সোনালি স্মৃতি হয়ে আছে। হয়তো ভবিষ্যতে আরও অনেক রেকর্ড তৈরি হবে, কিন্তু এই চারটি রেকর্ড ভাঙা—এখনও যেন এক অসম্ভব স্বপ্ন।