Women's Day Special: চার অঙ্গে ক্যানসার, বেতন ৮০ হাজার! পুরোটাই মানব সেবায় দান অর্চনা দেবীর

Last Updated:

Women's Day Special: নিজের প্রাপ্ত বেতন দান করে দেন দুঃস্থ মানুষদের প্রয়োজনে। এছাড়াও তিনি সাহায্য করেন পড়ুয়া, রোগী সহ বহু সাধারণ মানুষকে।

+
অর্চনা

অর্চনা চট্টোপাধ্যায় 

পূর্ব বর্ধমান: একটি নয়, শরীরের একাধিক অঙ্গে মারণ রোগের থাবা। এখনও পর্যন্ত শরীরের চারটে অঙ্গে ধরা পড়েছে ক্যানসার এবং বাদ পড়েছে শরীরের তিনটে অঙ্গ। তবুও থেমে নেই তিনি। শারীরিক প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে এগিয়ে এসেছেন মানব সেবায়। নিজের মনের জোর আর কাজ দিয়ে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার এই মহিলা। পেশায় স্বাস্থ্য কর্মী অর্চনা চট্টোপাধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের বাসিন্দা। গুসকরায় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরি করেন তিনি। বর্তমানে বেতন প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তবে বেতনের প্রায় সবটুকুই তিনি খরচ করেন মানব সেবায়। নিজের প্রাপ্ত বেতন দান করে দেন দুঃস্থ মানুষদের প্রয়োজনে। এছাড়াও তিনি সাহায্য করেন পড়ুয়া, রোগী সহ বহু সাধারণ মানুষকে।
অর্চনা দেবী বলেন, তিনি ছোটবেলায় চরম অভাবে দিন কাটিয়েছেন। একসময় ধান চাষ থেকে সাইকেলের লিক ঠিক করা সব তাঁকে করতে হয়েছে । তবে তিনি পড়াশোনায় খুব ভাল ছিলেন । ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে চাকরিকরে দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াবেন । সেইমত তিনি আজ এই কাজ করে চলেছেন । তবে এই কাজ নতুন নয় , ছোট থেকেই তিনি পরোপকারীছিলেন । নিজে না খেয়ে অন্যকে খাইয়ে দিতেন খাবার । ছোটবেলার ছোট প্রচেষ্টা আজ বড় আকার ধারণ করেছে ।২০১২ সালে অর্চনা দেবীর জরায়ুতে প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে । তারপর ২০১৫ সালে প্লীহায় ক্যানসার ধরা পড়ে । পরবর্তীতে আবার ২০২২ সালে লিভার এবং কিডনিতে তারক্যানসার ধরা পড়ে। এখনও পর্যন্ত তিনি ১৬টা কেমো নিয়েছেন। তবে নিজে ক্যানসার আক্রান্ত হলেও , তাঁর মনের জোর ব্যাপক।
advertisement
advertisement
এখনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রোগীদের তিনি পরিষেবা দেন। কারও টাকার দরকার হলে , ওষুধ অথবা খাবারের প্রয়োজন পড়লে হাসিমুখে সবটা দিয়ে আসেন তিনি । এককথায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন অর্চনা দেবী । এই প্রসঙ্গে রাহুল শর্মা নামে গুসকরা শহরের এক বাসিন্দা বলেন , তিনিও একটা সময় অর্চনা দেবীর কাছে অনেক  সাহায্য পেয়েছেন। তিনি বলেন , তাঁর বাবার নাম রাজু শর্মা । তাঁদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার জন। পরিবারের সব দায়িত্ব ছিল বাবার উপর। ২০১৩ সালে হঠাৎ বাবার স্ট্রোক হয়। সেই সময় পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তখন অর্চনা দেবী তাঁদের খুব সাহায্য করেছিলেন। ওষুধ থেকে টাকা পয়সা দেওয়া, সবরকম ভাবে সাহায্য করেছিলেন। এখন তাঁর বাবা বেঁচে রয়েছেন। বর্তমানে আগের তুলনায় একটু সুস্থ।
advertisement
অর্চনা চট্টোপাধ্যায় মাসে বেতন পান প্রায় ৮০ হাজার টাকা । বয়সও হয়েছে প্রায় ৬০ এর কাছাকাছি। পরিবারে রয়েছে স্বামী, মেয়ে , ছেলে , বৌমা এবং নাতনী। বর্তমানে তিনি যে টাকা বেতন পান , সেই টাকা দিয়ে ইচ্ছে করলেই শেষ জীবন তিনি রাজকীয় ভাবে কাটাতে পারেন। তবে তা তিনি করেননি, সকলের আনন্দেই যেন আনন্দ পান তিনি । প্রাপ্ত বেতনের প্রায় সবটাই বিলিয়ে দেন ।
advertisement
এই ধরণের কাজ করার জন্য তাঁকে বাড়িতেও অনেককথা প্রথম দিকে শুনতে হয়েছে । তবে পরিবারের সদস্যরাও এখন অর্চনা দেবীকে এই কাজে বাধা দেন না । যতটা পারেন তাঁরাও সাহায্য করেন ।নিজে ক্যানসারের রোগী হয়েও হাসি মুখে সাহস জোগান অন্য রোগীদের। অন্যের আনন্দে তিনি আনন্দ পান, দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোই যেন মূল ধর্ম অর্চনা দেবীর। অর্চনা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন তিনি আগামী দিনেও এই ধরনের কাজ চালিয়ে যাবেন ।
advertisement
—— বনোয়ারীলাল চৌধুরী
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Women's Day Special: চার অঙ্গে ক্যানসার, বেতন ৮০ হাজার! পুরোটাই মানব সেবায় দান অর্চনা দেবীর
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement