Vishwakarma Puja 2025: ৭:৫৭-তে বিশ্বকর্মা রানাঘাটে, ৮:৪৫-এ শ্যামনগরে! ট্রেনে হইহই করে যা কাণ্ড, দেখলে আনন্দ হবে
- Published by:Raima Chakraborty
- hyperlocal
- Reported by:Mainak Debnath
Last Updated:
Vishwakarma Puja 2025: উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা যায় ওই কম্পার্টমেন্টে শান্তিপুর এবং শিয়ালদহ পর্যন্ত পরবর্তী প্রত্যেক স্টেশন থেকে ওঠা নিত্যযাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় প্রগাঢ় এবং পারিবারিক। তারপরেই এমন অদ্ভুত সুন্দর কাজ।
শান্তিপুর, নদিয়া, মৈনাক দেবনাথ: ডাউন শান্তিপুর-শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে প্রথম বগির যাত্রীদের ভ্রাম্যমান বিশ্বকর্মা পুজো এবার ১৮ তম বর্ষে! বুধবার বিশ্বকর্মা পুজো। বিভিন্ন কলকারখানার সঙ্গে নানা ধরনের যানবাহনেও পুজো লক্ষ্য করা যায়।
রেল স্টেশনেও অনেকেই পুজো দেখে থাকেন তবে রেল কম্পার্টমেন্টের মধ্যে সমস্ত ধর্মীয় উপাচার মেনে ঢাকের তালে পুরোহিত মশায়ের মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে কাসর ঘণ্টা বাজিয়ে, ধূপ-ধুনো সহযোগে, ফলমূল মিষ্টান্ন-সহ নৈবেদ্য সাজিয়ে পুজো দেখাও সৌভাগ্যের বিষয়।
৭ঃ২৪ মিনিটের ডাউন শান্তিপুর-শিয়ালদহ লোকালের প্রথম কম্পার্টমেন্টের দ্বিতীয় গেটে ডেইলি প্যাসেঞ্জারদের উদ্যোগে এই ভ্রাম্যমান পুজো এবার ১৮ তম বর্ষে পদার্পণ করল। তবে কখনও ৭ঃ১০ কখনও বা ৭ঃ২৮ টাইম টেবিলের হেরফের হয়েছে তবে বিগত বছরে পুজোর রীতিনীতি পরিবর্তিত হয়নি এতটুকু! এমনকী করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও না। উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা যায় ওই কম্পার্টমেন্টে শান্তিপুর এবং শিয়ালদহ পর্যন্ত পরবর্তী প্রত্যেক স্টেশন থেকে ওঠা নিত্যযাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় প্রগাঢ় এবং পারিবারিক। শীতকালে বনভোজন, গৃহে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে একে অন্যের।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: রুটি কিছুতেই নরম হচ্ছে না? রইল ম্যাজিক টিপস! রুটি তুলতুল করবে, মিলিয়ে নিন
১৭ বছর আগে সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৩০ জনের মতো থাকলেও বর্তমানে তা পার হয়েছে ১৭৫-এর উপর। শান্তিপুর থেকে শিয়ালদহ যাওয়া এবং আসা মিলিয়ে দিনের অর্ধেক অংশ বিশ্বকর্মার তৈরি যন্ত্রাংশের উপর জীবন কাটান, চাকরি ব্যবসা দোকান কর্মচারী, হকার যে যাই হোক না কেন পরিবার সদস্যদের থেকেও নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা রক্তের সম্পর্কের থেকে কোনও অংশে কম নয়। তবে পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকেই তাকিয়ে থাকেন তাঁদের ফেরার অপেক্ষায়, ছুটির দিন কটা বাদ দিয়ে বছরের প্রত্যেকদিনই লোহার কল কব্জা ইঞ্জিনের উপর দাঁড়িয়ে জীবন জীবিকা। যার যার স্রষ্টা বিশ্বকর্মা। তাই তাঁর কৃপা পেতেই এই পুজোর সূত্রপাত।
advertisement
পুজো চালু হওয়ার ১৬ বছরের মধ্যে শুধুমাত্র একবার রবিবার পড়েছিল। তাই অফিস কাছারি বা অন্যান্য কাজকর্মে যাওয়া পুজো উদ্যোক্তারা সেবার শুধু পুজোর জন্যই ব্যারাকপুর পর্যন্ত গিয়ে পুজো পাট সেরে আবার ফিরে এসেছিলেন যে যাঁর বাড়িতে। তবে পরিবার সদস্যরা ঠাকুর দেখার বায়না করলেও নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই, কারণ বিশ্বকর্মা পুজোর দিনেও বেশিরভাগ অফিস আদালত দোকানে কাজ করা সদস্যদের পৌঁছাতেই হয়। তবে প্রত্যেক সদস্যকে পুজো উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় একটি ব্যাগ পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য প্রসাদ এবং মিষ্টির প্যাকেট।
advertisement
আরও পড়ুন: ঘুমের ঘোরে আচমকা শরীর কেঁপে ওঠে? মনে হয় খাট থেকে পড়ে যাবেন? কেন হয় এমন? কীভাবে বাঁচবেন জানুন
প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে শান্তিপুরের ওই ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা প্রতিমা পুজোর উপকরণ ট্রেনে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ট্রেনের সামনে মাঙ্গলিক কলা গাছ ফুলের মালা লাগাতে। ঢাকি বাজাচ্ছেন ঢাক, এরই মাঝে সমগ্র ট্রেন যাত্রী একবার করে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে প্রণাম করে যাচ্ছেন বিশ্বকর্মাকে। নিত্যযাত্রীরা যে যার নির্ধারিত কম্পার্টমেন্টে গেলেও আগ্রহী বেশ কিছু ক্যাজুয়াল প্যাসেঞ্জার পুজো দেখতে দেখতে যাবেন বলে ভিড় করেছেন এই কম্পার্টমেন্টেই। ইতিমধ্যেই ট্রেন ছাড়ার সবুজ সংকেত জ্বলে উঠেছে, স্টেশন মাস্টার রেল কর্মী আরপিএফ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রত্যেকের উপহার-মিষ্টি পৌঁছে দিয়ে সকলেই হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়েন ট্রেনে।
advertisement
ডাউন শান্তিপুর-শিয়ালদহ লোকাল শান্তিপুর থেকে এদিনও ছাড়ল সকাল ৭ঃ২৪ মিনিটে। তারপর থেকেই তোড়জোড় শুরু হয় পুজোর, ফলকাটা নৈবেদ্য সাজানো, ঠাকুরমশাইয়ের পুজোর যাবতীয় উপকরণ গুছিয়ে হাতের কাছে দেওয়া। ধুনুচি প্রদীপ ধুপ থাকলেও আগুন শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার্থে। ঠাকুর মশাই পূজায় বসেন ৭ঃ৫৭ তে ট্রেন তখন রানাঘাট। পুজো সম্পন্ন হয় শ্যামনগরে ৮ঃ৪৫। এরপর, ঠাকুর মশাই এবং ঢাকি দক্ষিণা নিয়ে নেবে পড়েন আপ শান্তিপুর লোকাল ধরে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে। ব্যারাকপুর পর্যন্ত চলে প্রসাদ বিতরণ। ট্রেন যখন শিয়ালদহ ৯ঃ৪০ মিনিটে পৌঁছায় সকলেই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য নেমে পড়েন।
advertisement
বিশ্বকর্মা কিন্তু রয়ে যান সর্বশেষ সময় ট্রেন চলাচলের অর্থাৎ মধ্যরাত্রি পর্যন্ত। এর মধ্যে অবশ্য কোন শাখায় কতবার ওই ট্রেন যাতায়াত করেছেন তা বলতে পারবেন একমাত্র বিশ্বকর্মাই। তবে বিসর্জন নিয়ে কোনও সমস্যাই নেই। প্রতিবার শান্তিপুর স্টেশন মাস্টারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির সহযোগিতায় কারশেডে থাকা, কর্মীরাই মধ্যরাত্রি প্রতিমা নামিয়ে পরের দিন সকালে বিসর্জন দেন। বিসর্জনের পারিশ্রমিকও নাকি দেওয়া থাকে প্রত্যেকবারেই প্রতিমার কোনও একটি অংশে লুকনো অবস্থায়, যা শুধু যিনি বিসর্জন দেন তিনিই জানেন।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 17, 2025 1:54 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Vishwakarma Puja 2025: ৭:৫৭-তে বিশ্বকর্মা রানাঘাটে, ৮:৪৫-এ শ্যামনগরে! ট্রেনে হইহই করে যা কাণ্ড, দেখলে আনন্দ হবে