বিজ্ঞান পড়ানোর রইল না কেউ! দিশাহারা প্রান্তিক স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ারা
- Published by:Suman Majumder
- hyperlocal
- Reported by:Suman Saha
Last Updated:
বহু আবেদন নিবেদনে স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগের অনুমোদন মিলেছিল। কিন্তু শিক্ষক না থাকায় পঠন পাঠন শুরু করা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত মাধ্যমিক বিভাগের নব নিযুক্ত এক ঝাঁক শিক্ষক উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান পড়ানোর দায়িত্ব নেন।
কুলতলি: বহু আবেদন নিবেদনে স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগের অনুমোদন মিলেছিল। কিন্তু শিক্ষক না থাকায় পঠন পাঠন শুরু করা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত মাধ্যমিক বিভাগের নব নিযুক্ত এক ঝাঁক শিক্ষক উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান পড়ানোর দায়িত্ব নেন। শুরু হয় ক্লাস। অনেকে ভর্তি হন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক ঘোষণায় বিজ্ঞানের সেই সব শিক্ষকই চাকরি হারিয়েছেন।
কুলতলির জামতলা ভগবানচন্দ্র হাই স্কুলের একাদশ পেরোনো বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্ররা বুঝতে পারছে না কীভাবে উচ্চ মাধ্যমিকে বসবে তারা। সুন্দরবন ঘেঁষা প্রত্যন্ত এই ব্লকে কোনও স্কুলেই উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান পড়ানোর ব্যবস্থা ছিল না। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সাল নাগাদ বিজ্ঞান পড়ানোর অনুমোদন পায় ভগবানচন্দ্র হাই স্কুল। কিন্তু অনুমোদন মিললেও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ফলে বিজ্ঞান বিভাগ চালু করা যায়নি।
advertisement
আরও পড়ুন- পেটের দায়ে কাজ করতে এসেছিল, দাউদাউ আগুন শেষ করল সব, বন্ধুকে খুঁজে শেষে মিলল হাড়
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের প্যানেলে ওই স্কুলে মাধ্যমিক বিভাগে ১১ জন নতুন শিক্ষক আসেন। এদের মধ্যে ছ’জন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। তাঁরা মাধ্যমিক স্তরের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকেও পড়ানোর দায়িত্ব নিতে রাজি হন। অতিরিক্ত বেতন ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াবেন বলে বোর্ডকে লিখিত ভাবে জানানও তাঁরা।
advertisement
advertisement
এর পরই ২০১৯ সাল নাগাদ স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগের পঠন পাঠন শুরু হয়। এক জন- দু’জন করে বাড়তে বাড়তে গত বছর ১২ জন বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। স্কুল সূত্রের খবর, প্রত্যেকেই ভাল ফল করেছিল। এবছরও জনা দশেক পড়ুয়া পরীক্ষা দিয়েছে। বর্তমানে একাদশ পেরিয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে ১৭ জন।বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই ১১ জন শিক্ষকেরই চাকরি বাতিল হয়েছে।
advertisement
স্কুল সূত্রের খবর, এই শিক্ষকরা চলে যাওয়ায় বিজ্ঞান বিভাগে পড়ানোর মতো কার্যত আর কোনও শিক্ষক নেই স্কুলে। এই পরিস্থিতিতে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রত্যন্ত এই এলাকায় বিশেষ করে বিজ্ঞানের মত বিষয়ে গৃহশিক্ষক মেলে না বললেই চলে। ফলে পঠন পাঠনের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের উপরেই নির্ভরশীল পড়ুয়ারা। এখন কোথায় যাবে, কার কাছে পড়বে জানে না ছাত্ররা।স্কুলে মোট পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। শিক্ষক ছিলেন ৪৬ জন।
advertisement
এমনিতেই পড়ুয়ার অনুমাতে শিক্ষক কম, তার উপর এক ধাক্কায় ১১ জন শিক্ষক কমে যাওয়ায় বিজ্ঞান বিভাগের পাশাপাশি স্কুলের সামগ্রিক পঠন পাঠনেও প্রভাব পড়তে চলেছে বলেই মনে করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তনু ঘোষাল বলেন, এক সঙ্গে এত জন শিক্ষক চলে যাওয়ায় বড় সমস্যায় পড়ে গেলাম। সবচেয়ে সমস্যা হবে বিজ্ঞান বিভাগে।
advertisement
নতুন শিক্ষকেরা মাধ্যমিক স্তরের হলেও তাঁরা উচ্চ শিক্ষিত। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ানোর যোগ্যতা রয়েছে। সংসদের অনুমতি নিয়ে তাঁরা অতিরিক্ত বেতন ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে বিজ্ঞান বিভাগ বাড়ছিল। আগামী বছর অন্তত পঁচিশ জন ছাত্র পাব আশা করেছিলাম। ল্যাবও তৈরি হয়েছিল। জানি না এখন কী হবে। প্রত্যন্ত এই এলাকায় আংশিক সময়ের জন্য বিজ্ঞান বিভাগে পড়াতে পারেন এমন উচ্চ শিক্ষিত কাউকে পাওয়াও মুশকিল।
advertisement
স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় বিধায়ক গণেশ মণ্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় তার চেষ্টা চলছে।
সুমন সাহা
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
April 05, 2025 10:53 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
বিজ্ঞান পড়ানোর রইল না কেউ! দিশাহারা প্রান্তিক স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ারা