#বর্ধমান: সংসার চলে কোনও রকমে। গচ্ছিত অর্থ বলতে তেমন কিছু নেই। স্বাভাবিক ভাবেই পারিবারিক আর্থিক অবস্থা বাড়িতে প্রতিমা এনে পুজো করার মতো নয়। অন্তত দুর্গা পুজো করার মতো তো নয়ই। তবুও তা করতে হবে। মা দুর্গা যে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তেমনটাই। তাই বংশ রক্ষার জন্য সন্তান কামনায় তবুও আনা হল দুর্গাপ্রতিমা। ১২৭ বছর আগে বর্ধমানের কাঞ্চননগরের তন্তুবায় পাড়ায় দুর্গাপুজোর চল শুরু হল।
বাড়িতে তাঁত। সেই তাঁতে কাপড় বুনে বিক্রি করে সংসার চলে। তারই মধ্যে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কালীর পুজোও হয়। পাঁচকড়ি মন্ডলের স্ত্রী সন্তান কামনায় কাতর মিনতি করলেন সেই দেবীর কাছে। মা কালী স্বপ্নাদেশ দিলেন, ছেলেপুলে নিয়েই আসব। সেই স্বপ্নের সূত্র ধরেই দুর্গা পুজোর আয়োজন।সে কথা না হয় থাক মিথ হয়েই।
স্ত্রীর কথায় কালীর বদলে দুর্গাপুজোর আয়োজন শুরু করলেন তাঁতী পাঁচকড়ি মন্ডল। কিন্তু সেই পুজোর এতো খরচ জোগাবেন কোথা থেকে। শুরু হল বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করা। ভিক্ষের চাল জমা হল ঠাকুর ঘরে। সেই ভিক্ষের কড়ি একত্রিত করে কালীর মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হল দুর্গার। আধুনিক মনন বলবে কাকতালীয়, তবে মন্ডল পরিবারকে তারপর থেকে আর বংশরক্ষার জন্য চিন্তা করতে হয়নি।
বর্তমানে পরিবারে তুলনামূলক স্বচ্ছলতা এসেছে। তবে ভিক্ষের প্রথা ফিরে এসেছে বারে বারে। অনেকেই মনোবাঞ্ছা পূরণে ভিক্ষের মানত করে। নিয়ম রক্ষার ভিক্ষে করে তা পূরণও করেন।
মহাষষ্ঠীতে পালকি করে কলাবউ আনা হয়। কলা বউ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে পুজোর শুরু হয়। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নির্ঘন্ট মেনে চলে পুজো। আত্মীয়স্বজনদের উপস্হিতি, পঙতিভোজ, আনন্দ উল্লাসে জমজমাট থাকে কাঞ্চননগরের মন্ডলবাড়ি।
তবে এবছর আবহ আলাদা। করোনার সংক্রমণ সব এলোমেলো করে দিয়েছে। নিয়ম মেনে পুজো হবে ঠিকই, তবে আত্মীয়-পরিজনরা কে কবে কতজন আসবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলছেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ তার ওপর আবার ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে আত্মীয়-স্বজনরা এবার আসতে চাইছেন না অনেকেই।
SARADINDU GHOSH
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।