#DurgaPuja হাতের কাজে দুর্গাকে সাজিয়ে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও এসেছে মালাকারের ঝুলিতে
Last Updated:
ধান ভানতে শিবের গীত নয়। কিন্তু শোলাতেও শিব আছে। বলা ভালো শিবের বিয়ের গল্প আছে। তাহলে আগে গল্পটাই শুনুন। শিবের বিয়ের মুকুট বানাতে হবে। ডাক পড়ল বিশ্বকর্মার।
#বর্ধমান: ধান ভানতে শিবের গীত নয়। কিন্তু শোলাতেও শিব আছে। বলা ভালো শিবের বিয়ের গল্প আছে। তাহলে আগে গল্পটাই শুনুন। শিবের বিয়ের মুকুট বানাতে হবে। ডাক পড়ল বিশ্বকর্মার। জটাজুটধারী শিবের মাথার উপযোগী শ্বেতশুভ্র মুকুট হাল্কা হতে হবে। নইলে নাকি হিমালয় কন্যার মান থাকে না। তারপর যা হয়। শোলা দিয়ে তৈরি হয় মুকুট। যিনি বানালেন তাকে বলা হল মালাকার।
এতো গেল রূপকথার গল্প। শিব সাধক বাংলার কল্পনা। আর শোলা আর তার শিল্পীর ওপর দেবত্ব আরোপের কাহিনী। বেপরোয়া জলা জমি ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই শোলা উৎপাদন গেছে কমে। আমদানি করা শোলায় পড়তায় পোষায় না। এখন শোলা আসে বিহার উড়িষ্যা ঝাড়খন্ড আসাম থেকে। ফলে বাড়ে খরচ। দাম বাড়ে শোলার সাজের। ফলে শোলা শিল্পে পুঁজি লাগে বেশি। দরকার ব্যাঙ্ক-ঋণ। যা মেলে না।
advertisement
তবু পুজোর মুখে এখনও নাওয়া-খাওয়া ভোলেন বনকাপাশির শোলাশিল্পীরা। দিন রাত এক করে চলছে প্রতিমার শোলার সাজ তৈরি। শুধু কলকাতার কুমোরটুলি কেন রাজ্যের বেশিরভাগ প্রতিমাই সেজে ওঠে বনকাপাশির শোলার সাজে। এছাড়াও দিল্লি, মুম্বই, কলকাতার অনেক মন্ডপেই প্রতিমা সাজানোর বরাত পেয়ে আসছেন বনকাপাশির শিল্পীরা। তবে কাজ কমছে দ্রুত হারে।
advertisement
দুর্গাপুজো মিটলেই লক্ষ্মী, কালী, জগদ্ধাত্রী পুজো। সেসময় বাড়বে শোলার চাহিদা। বনকাপাশির শোলার সাজ ছাড়া চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী বা নৈহাটির কালী পুজোর কথা ভাবাই যায় না। তাই এখন দম ফেলার ফুরসত নেই বনকাপাশির। কাজ চলছে দ্রুত হাতে।
advertisement
টেরাকোটা আর ডোকরা মতো বাটিক, পটশিল্প আর শোলা একেবারে বাংলার নিজস্ব সৃষ্টি। দেশি-বিদেশি অতিথিদের রাজ্য সরকার যে উপহার দেন তার মধ্যে এই চার-পাঁচটি জিনিস থাকেই। সেই কারণেই একটা নিজস্ব সম্ভাবনা আছে বনকাপাশির। শুধু বর্ধমানের বনকাপাশিতেই দক্ষ শিল্পী আছেন হাজার ঘর। অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাওয়া পরিবারও রয়েছেন এইখানে।
advertisement
১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান আশিস মালাকারের বাবা আদিত্য মালাকার। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান তাঁর মা কাত্যায়নী মালাকার। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছেন আশিস মালাকারও। এক পরিবারের তিন তিন জন সেরা শিল্পী। ঘরানাও প্রস্তুত। উৎসাহও স্পষ্ট। এই ফ্যামিলি ট্র্যাডিশন বয়ে নিয়ে যেতে তৈরি আগামী প্রজন্মও।
আর এটাই সময়। হাত বাড়ানোর। নাহ সাহায্য বা করুণার নয়। বন্ধুত্বের। সহযোগিতা আর সম্মানের। একদা জার্মানী থেকে আসা “ডাকের-সাজ”-এর বিকল্প হয়ে ওঠা বাংলার শোলা-শিল্প। নিজ গুণে, নিজের পরিশ্রমে মাথা তুলেছে। সমাদৃত আর পুরস্কৃত হয়েছে। খারাপ সময়ের মধ্যেও একটা আলোক সম্ভাবনা থাকেই।
advertisement
সম্ভাবনা বনকাপাশিরও আছে। প্রয়োজন সরকার সান্নিধ্য আর সামাজিক সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতে পরিকল্পনা তৈরি করা। তাহলেই রাজ্যে শোলা শিল্পের হাব হিসেবে গড়ে উঠতে পারে বনকাপাশি। নইলে কিসের দেবাদিদেবের আশীর্বাদের কাহিনী?
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
September 16, 2016 8:10 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
#DurgaPuja হাতের কাজে দুর্গাকে সাজিয়ে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও এসেছে মালাকারের ঝুলিতে