কান পাতলেই কান্নার শব্দ, সারি সারি মরা মাছ ভেসে উঠেছে পুকুরে, মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের

Last Updated:

একের পর এক পুকুরে বিষক্রিয়ায় মরে পড়ে রয়েছে মাছ, আমফানের জেরে মাথায় হাত হাড়োয়ার মাছ ব্যবসায়ীদের

#হাড়োয়া: কতদিন বাদে পুকুরের মাছ চাষ করা যাবে? আদেও কি সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে। হ্যাঁ ঠিকই এখন এটাই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে হাড়োয়ার মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে। বুধবার বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবের পর মাথায় হাত পড়েছে এই মাছ ব্যবসায়ীদের।উত্তর ২৪ পরগনার যে কয়েকটি জায়গায় এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে তার মধ্যে অন্যতম জায়গা হলো বিদ্যাধরী নদীর ধারে 'হাড়োয়া'। তবে শুধু বাড়ি ঘর বা এলাকায় নয়, এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে তাদের জীবিকা নির্বাহের ওপরও। গোটা হাড়োয়ার বেশিরভাগ এলাকায় এখন ধ্বংসস্তূপ।
কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে কান্নার আওয়াজ। ভেসে আসছে হাহাকার হাহাকার ধনি। তার মধ্যেই বাড়ি তো গেল উল্টে গেল জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায়ও। বুধবারের সেই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের গাছ পড়ে পুকুরগুলো প্রায় নষ্ট হওয়ার জোগাড়। একের পর এক পুকুরে গাছ পড়ে বিষক্রিয়ায় মারা গেছে প্রচুর মাছ।
advertisement
advertisement
বিদ্যাধরী নদীর ব্রিজ পেরোলে হাড়োয়ার গ্রামগুলি নজরে আসবে। সেই গ্রামগুলিতে ঢোকামাত্রই নজরে পড়লো ভেড়ি গুলি। তবে এই ভেরি গুলিতে অবশ্য চিংড়ি চাষ হয় না। কেননা এগুলো আদপে পুকুর। যতই গ্রামগুলির ভেতরে ঢোকা হচ্ছে দেখা যাচ্ছে একের পর এক পুকুর গুলিতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে রয়েছে বিশাল আকৃতির গাছ। কোন কোন পুকুরে আবার পড়ে গেছে ট্রান্সফর্মার থেকে বিদ্যুতের খুঁটি পর্যন্ত। কিন্তু ট্রান্সফর্মার বা  বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যা না বিষক্রিয়া হয় উলটে গাছ পড়ে গাছের রস থেকে পুকুরে বিষক্রিয়ায় মরে পড়ে রয়েছে একের পর এক মাছ। যতই গ্রামের ভেতরে ঢোকা হচ্ছে ততই এরকম ছবি উঠে আসছিল।
advertisement
গ্রামের ডিজে জায়গাগুলিতে পুকুর রয়েছে সেখানে তো এখন থাকাই যাচ্ছে না। কারণ মরা মাছের দুর্গন্ধ এতটাই ছড়িয়েছে যে সেখানে এখন থাকাটাই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রামবাসীদের কাছে। রাস্তায় যেতে যেতে এক গ্রামবাসী বলে উঠলো "বাবু দেখছো তো কিভাবে মাছগুলো পড়ে মরে রয়েছে। এখনো পর্যন্ত মরে যাওয়া মাছ গুলির তোলার কাজ শুরু করেনি পঞ্চায়েত গুলো।" হ্যাঁ ঠিকই একের পর এক পুকুরে এভাবেই পড়ে রয়েছে মরা অবস্থায় মাছ। বছর ৩৫ এর এক মাছ ব্যবসায়ী বলছে " এখন যে অবস্থা আমাদের ব্যবসার তো ক্ষতি হলো। কিন্তু যেভাবে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে সেই দুর্গন্ধ তে আমরা কিভাবে থাকব সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।"
advertisement
গোটা হাড়োয়ার গ্রামগুলোতে তেলাপিয়া রুই কাতলা সহ কিছু স্থানীয় মাছের চাষ হয় এই পুকুর গুলিতে। অনেকেই লিজ নিয়ে এই পুকুর গুলিতে মাছ চাষ করেন, আবার অনেকের নিজস্ব পুকুরেই মাছ চাষ করে বাজারে এই মাছ বিক্রি করে তাদের রোজগার হয়। কোন নির্দিষ্ট আয় নেই, যে পরিমাণ মাছ বিক্রি করতে পারে তাতেই যা আয় হয় প্রত্যেক দিনে। কিন্তু বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় এদের সেই  রোজগারের পথ টাই কেড়ে নিয়েছে। এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন " পুকুরগুলোর যা অবস্থা তা সংস্কার না করে আবার মাছ চাষ করা সম্ভব নয়। পুকুরগুলো সংস্কার করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই সরকার সহযোগিতা না করলে তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।" যেতে যেতে দেখছিলাম গ্রামগুলির একাধিক ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে রয়েছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জানলাম ওখানে এক মাছ ব্যবসায়ী ঘর ভেঙে গেছে। তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই সে বলে উঠলো " দাদা আর কি বলব বলুন। আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। এখনতো খাবার টাকা টুকু নেই। আমাদের দিন কিভাবে কাটবে জানি না। সরকার না থাকলে আমরা হয়তো আর বেচেই থাকতে পারবো না।"
advertisement
গোটা হাড়োয়া জুড়ে গ্রামগুলিতে এই অবস্থায় এখন বর্তমানে। পঞ্চায়েত গুলির তরফে গাছ কাটার ব্যবস্থা করা হলেও লোকের অভাবে একই সঙ্গে বেশি পুকুর থেকে গাছ কাটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই গ্রামবাসীরা নিজেরাই পুকুর থেকে গাছ তুলতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসনের অপেক্ষা না করেই। কিন্তু যেভাবে একের পর এক পুকুর গুলিতে বিষক্রিয়ায় মাছ মরে পড়ে রয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে অনেকটা সময় কেটে যাবে বলে বলছেন গ্রামবাসীরা।সবে আয়লা,বুলবুল এর মত ঝড়কে কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে ছিল এই গ্রামবাসীরা। অবশ্য এই ধর গুলিতে মাছ ব্যবসার কতটা ক্ষতি হয়নি বলেই বলছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু যেভাবে গত বুধবারের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করে দিয়েছে তা আগে কখনও দেখা যায়নি বলেই বলছেন এই গ্রামবাসীরা। আর তাই এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় শুধু বাড়ি নয়, জীবিকা নির্বাহের পথ কেও বন্ধ করে দিল।
advertisement
Somraj Bandopadhya
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
কান পাতলেই কান্নার শব্দ, সারি সারি মরা মাছ ভেসে উঠেছে পুকুরে, মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement