East Bardhaman News: বনবন করে লাঠি ঘোরাচ্ছে মেয়েরা, রণপা নিয়ে হাঁটছে ছেলেরা! বর্ধমানের আজব স্কুল, পুরোটা জানলে গর্ব হবে
- Published by:Nayan Ghosh
- hyperlocal
- Reported by:Sayani Sarkar
Last Updated:
East Bardhaman News: হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যকে বাঁচাতে এবং পড়ুয়াদের আত্মনির্ভর করে তুলতে অভিনব উদ্যোগ পূর্ব বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি স্কুলে।
রায়না,পূর্ব বর্ধমান,সায়নী সরকার: হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং পড়ুয়াদের আত্মনির্ভর করে তুলতে এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি স্কুল। স্কুলেই শেখানো হচ্ছে রণপা। এমনকি পড়ুয়াদের আত্মরক্ষার পাঠ দিতে চক ডাস্টারের পাশাপাশি শিক্ষকরা হাতে তুলে নিয়েছেন লাঠি। মেয়েদের শেখানো হচ্ছে লাঠি খেলা। এতে একদিকে যেমন আত্মরক্ষা ও শরীরচর্চা শিখছে পড়ুয়ারা, ঠিক তেমনই স্কুলে আসতে আগ্রহী তারা। ফলে কমেছে স্কুল ছুটের সংখ্যাও।
হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের সীমান্তবর্তী রায়না ২ ব্লকের বেলাড় ভূরকুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৭০ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষের উদ্যোগে গড়ে ওঠে এই স্কুল। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে ৬৬ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শুরু হয় পঠন পাঠন। পরবর্তীকালে প্রথম অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানোর সরকারি অনুমোদন পায় বিদ্যালয়টি। এরপর ২০০৪ সালে মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয় স্কুলটি। বর্তমানে ২৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন এখানে। পূর্ব বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামের এই সরকারি স্কুলে এখন এক ভিন্ন রকম চিত্র।
advertisement
আরও পড়ুন: বছর শেষে শহরে পা রাখছে সালমান, সঙ্গে অরুণিতা! বড়দিন থেকে নববর্ষ, আটদিনের মেগা আয়োজন মালদহে
advertisement
পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে নেওয়া হয়েছে নানান উদ্যোগ। এখানে কেবল পাঠ্যবইয়ের পাতায় শিক্ষা সীমাবদ্ধ নয়, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যগুলিও হয়ে উঠেছে শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে রণপা একসময় সংবাদ আদান-প্রদান বা দ্রুত পথ চলার মাধ্যম ছিল, আজ তা আধুনিক প্রজন্মের কাছে নিছক বিস্ময়। কিন্তু এই স্কুল সেই বিস্ময়কেই বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছে। পাশাপাশি, আত্মরক্ষার পাঠ দিতে মেয়েদের শেখানো হচ্ছে লাঠিখেলা। রণপা ও লাঠি খেলা ছাড়াও স্কুলের শেখান হয় ক্যারাট, নাচ, গান,আঁকা।
advertisement
বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদ্যুৎ গুহ বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলমুখী করে তোলা। এটি একটি তপশিলি জাতি এলাকা। বেশিরভাগ পড়ুয়া স্কুলছুট হয়ে যাচ্ছিল। প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে নানারকম কর্মসূচি নেওয়া হয়। এতে স্কুল ছুট ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন স্কুল মুখী হয়েছে তেমন তারা শিখছে আত্মরক্ষার পাঠ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত নায়েক বলেন, অষ্টম শ্রেণীর পর্যন্ত পড়ে স্কুল ছুট হয়ে যাচ্ছিল অনেকে। সেই জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে। স্কুলের পড়ুয়ারা জানিয়েছে, বর্তমান সময়ে আত্মরক্ষার কৌশল জানাটা খুবই প্রোজন।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তাদের কথায়, যেটা বাইরে থেকে পয়সার বিনিময়ে শিখতে হয়, সেটাই আমাদের বিদ্যালয় বিনামূল্যে শেখাচ্ছেন শিক্ষকরা। এতে একদিকে আমাদের স্কুলে আসার জন্য যেমন আগ্রহ বাড়ছে, তেমনই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কোনও বিপদে পড়লে আত্মরক্ষার কৌশল জানা থাকায় আমরা সহজেই বিপদ থেকে উদ্ধার হতে পারব। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে যখন বাংলার লোকসংস্কৃতি শুধুমাত্র ইতিহাসের পাতায়, তখন প্রত্যন্ত গ্রামের এই পড়ুয়ারা প্রমাণ করেছে যে শেকড়কে আঁকড়ে ধরেও আধুনিক হওয়া সম্ভব। শিক্ষকরা এখানে কেবল জ্ঞানের আলোই ছড়াচ্ছেন না, বরং প্রতিটি পড়ুয়ার ভেতরে বুনে দিচ্ছেন আত্মনির্ভরতার বীজ। এখানে স্কুল মানেই কেবল চার দেয়ালের মাঝে আটকে থাকা বা একঘেয়ে পাঠদান নয় বরং সংস্কৃতি ও আত্মরক্ষার মেলবন্ধন। শিক্ষার এই মডেলটি অন্যান্য সরকারি স্কুলের কাছেও হতে পারে অনুপ্রেরণা।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Barddhaman (Bardhaman),Barddhaman,West Bengal
First Published :
December 17, 2025 8:50 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
East Bardhaman News: বনবন করে লাঠি ঘোরাচ্ছে মেয়েরা, রণপা নিয়ে হাঁটছে ছেলেরা! বর্ধমানের আজব স্কুল, পুরোটা জানলে গর্ব হবে







