গ্রাম থেকে বিতাড়িত পরিযায়ী শ্রমিকেরা জঙ্গলে কোয়ারেন্টাইনে!‌ রাতে তাড়া করছে শেয়াল, বাঘরোল

Last Updated:

তাঁরা বলছেন, ‘‌ভেবেছিলাম গ্রামে গিয়ে অন্তত ১৪ দিন স্কুলে থেকে তারপর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব!‌ যাই হোক সেটা জন্ম ভিটেতেই হবে।

#‌ডোমজুর:‌ কেউ গিয়েছিলেন সোনার কাজে, কেউ আবার জরির কাজে। দীর্ঘ লোকডাউনে তাঁরাই আটকে পড়েছিলেন ভিনরাজ্যে। কেউ দিল্লি, কেউ আবার মুম্বইয়ে। কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘ কয়েকদিন জোটেনি খাদ্য, হারিয়েছেন কাজ। অনেক চেষ্টাতেও ফিরতে পারেনি বাড়িতে। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সহযোগিতায় বাড়ি ফেরার সুযোগ এলেও অনেক কষ্টে জোগাড় হয়েছে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের টিকিট। ফেরার ব্যবস্থা মোটামুটি পাকা হওয়ার পর তাঁরা ভেবেছিলেন, অন্তত জন্মভিটেয় ফিরে নিশ্চিন্ত হয়ে থাকতে পারবেন। কিন্তু সেখানে এসেই যে নিজের পরিচিত মুখগুলোর জন্যই ঠাঁই হবে জঙ্গলে, তা ঘুনাক্ষরেও টের পাননি ডোমজুরের বেশকিছু পরিযায়ী শ্রমিক।
দিনকয়েক আগেই দিল্লি ও মুম্বাই থেকে ডোমজুরের রুদ্রপুরে ফেরে শ্রমিকের দল। গ্রামে পৌঁছে তাঁরা নিজেরাই আবেদন করেছিলেন, তাঁদের রাখা হোক সরকারের ঠিক করা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। সেই মতো রুদ্রপুর হাইস্কুলে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। কিন্তু ভিনরাজ্যে থেকে ফেরা শ্রমিকরা স্কুলে ঢুকতেই বাধা সৃষ্টি করা হয়। স্কুলে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তালা। বাধ্য হয়ে গ্রামের একটি ঘুপচি ঘরে ঠাঁই হয় তাঁদের। এরইমধ্যে ভিনরাজ্যে থেকে ফেরার পর সরকারি তরফে সবার লালারস পরীক্ষাও করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনের শরীরে মেলে করোনা ভাইরাস। আক্রান্তদের পাঠানো হয় কোভিড হাসপাতালে। আর তারপর সেই এলাকা থেকে বিতাড়িত হতে হয় বাকিদের‌ও, ঠাঁই হয় গ্রামের শেষপ্রান্তে জঙ্গলের মধ্যে।
advertisement
সাতদিন জঙ্গলে কাটালেও, এখনও কোনও সরকারি ও প্রশাসনিক সাহায্য তাঁরা পাননি বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। এক গ্রামবাসী যুবক বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও তাঁদের পাশে এখনও কেউ এসে দাঁড়ায়নি। জঙ্গলে কাটানো শ্রমিকদের দাবি , ‘‌গ্রামে আমাদের পরিবারের কেউ আমাদের খাওয়ার দিতে এলেও তাঁদের বাধা দেওয়া হচ্ছে | কোনওরকমে জঙ্গলের মধ্যে রান্না করে খাচ্ছি। সারাদিন কোনওরকমে কাটলেও আতঙ্ক গ্রাস করে রাতের বেলায়। শৌচকর্ম করতে গেলে করতে গেলেই তাড়া করছে শিয়াল। খাবারের খোঁজে আসছে বাঘরোল। আর সাপ তো মাঝে মাঝেই ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকায়।’‌
advertisement
advertisement
তাঁরা বলছেন, ‘‌ভেবেছিলাম গ্রামে গিয়ে অন্তত ১৪ দিন স্কুলে থেকে তারপর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব!‌ যাই হোক সেটা জন্ম ভিটেতেই হবে। কিন্তু এখানে এসে নিজের এলাকাই এত পর হয়ে যাবে কখনো ভাবতে পারিনি। যাদের সঙ্গে মাঠে খেলাধুলা করেছি, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গ্রামের সুখ দুঃখে সময় কাটিয়েছি, আজ তাঁরাই আমাদের গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না। দিল্লি মুম্বাইয়ে যে কষ্ট করেছিলাম, তার থেকে বেশি কষ্ট পেলাম নিজের গ্রামে। যাই হোক সরকারি নির্দেশিকা মেনেই ১৪ দিন কাটিয়ে তারপরেই ফিরবো ঘরে।’‌
advertisement
Debasish Chakraborty
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
গ্রাম থেকে বিতাড়িত পরিযায়ী শ্রমিকেরা জঙ্গলে কোয়ারেন্টাইনে!‌ রাতে তাড়া করছে শেয়াল, বাঘরোল
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement