#নন্দীগ্রাম: নজরে নন্দীগ্রাম। দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে নন্দীগ্রাম জুড়ে একের পরে এক সভায় রাজ্যরাজনীতি সরগরম। একদিকে যেমন বিজেপি সর্বভারতীয় অমিত শাহ রোড শো করলেন। তেমনই পরপর তিনটি সভা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভা থেকেও মমতার নিশানায় থাকলেন নন্দীগ্রামে তাঁর বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বি শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দুকে আক্রমণ করলেও আজ প্রাক্তন সহকর্মী তথা কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী মুকুল রায়ের জন্য সুর নরম করলেন মমতা।
মুকুলকে নিয়ে এদিন মমতা বলেন, 'মুকুল শুভেন্দুর মতো খারাপ নয়'। এদিন শুভেন্দুকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, "আমি আগেই জানতাম ও এধার ওধার করছে। নিজেই তো বলল ২০১৪ থেকে যোগাযোগ করেছে বিজেপিতে। তার মানে ২০১৫-২০২০ ও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ভাগ্য ভালো নির্বাচনের আগে মীরজাফর চলে গিয়েছে। রেজাল্ট বেরোলে দেখতে পাবে বিশ্বাসঘাতকরা।"
বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে গেরুয়া শিবিরে বিগত কয়েকদিনে সমস্যা হয়েছে। সেই নিয়েও মমতা আজ কটাক্ষ করে বলেছেন, "বিজেপি আজ নিজেদের লোকেদের টিকিট দেয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস দেয়নি। যারা বিজেপি করেছে তারা হরেকৃষ্ণ বলে গেরুয়া পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাউকে টিকিট দেয়নি। এমনকি জয়প্রকাশকেও দেয়নি। সায়ন্তন রোজ আমায় গালি দিত। তাকেও দেয়নি।"
মমতা দাবি করেছেন, তৃণমূল থেকে যাঁরা বেরিয়ে বিজেপিতে গিয়েছেন তাঁদেরই টিকিট দিয়েছে বিজেপি। এর পরেই মমতা হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, "পার্টিটাই ধার করা। জেতার পরে পার্টিটা থাকবে তো? ধার করে যাদের টিকিট দিয়েছেন তারা থাকবে তো?নিজের দলকে ভেঙে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসকে মদত দিতে গিয়ে।" এই প্রসঙ্গেই মুকুল রায়ের কথা টেনে এনেছেন তিনি। বলেছেন, "মুকুল বেচারা থাকে কাঁচড়াপাড়ায়। বারাকপুর, জগদ্দল, ভাটপড়া ওর নিজের জেলা। পাঠিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগরে। মুকুল শুভেন্দুর মতো এত খারাপ নয়। অন্তত এটা আমি বলব।"
বরাবর ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে দাঁড়ান মমতা। কিন্তু এবার তিনি নন্দীগ্রামের প্রার্থী। কেন নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়িয়েছেন সেই বিষয়েও এদিন তিনি কথা বলেন। মমতা বৱছেন, "আমি যেদিন এখানে প্রার্থী হব বললাম তখন এখানে কেউ বিধায়ক ছিলেন না। তার আগেই গদ্দার ইস্তফা দিয়েছিলেন। এখনও কোনও বিধায়ক নেই। গদ্দার আগেই ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছে। নন্দীগ্রাম তোমায় এত দিল, তুমি পালিয়ে গেলে ইস্তফা দিয়ে। শূন্য জায়গা পূর্ণ করতে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমায় বলছে বহিরাগত।"
তিনি আরও বলছেন, "নন্দীগ্রামে প্রচার আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। গ্রামে গ্রামে যেতে হয়। ভবানীপুর হলে দুটো মিছিল করলে হয়ে যেত। ১০ তারিখ বিরুলিয়ার ঘটনার পরে আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। আমার মাথা, বুকে যন্ত্রণা হচ্ছিল। আমি ওষুধের বাক্স সব সময় রাখি। কারণ আমার শরীর কাঁটা ছেড়া করা। আমি একটা জীবন্ত লাশ। আমার বাক্স সবার কাজে লাগে। গোড়ালি চেপ্টে গিয়েছে দেখলাম। আমার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিল।আমি এমারজেন্সিতে যা যা ওষুধ খাওয়ার খেয়েছিলাম। আমি পায়ে প্লাস্টার ও ক্লিন করাচ্ছি।"
প্রসঙ্গত দুদিন আগেও প্রাক্তন সঙ্গী মুকুল রায়ের নাম নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা দাবি করেছিলেন, অপারেশন সূর্যোদয়ের সময়ে ১৫ দিন বাড়ি থেকে বেরোননি শুভেন্দু অধিকারী- শিশির অধিকারীরা। তাঁর এই দাবি যে সত্যি, বিজেপি নেতা মুকুল রায় তার সাক্ষী বলেও দাবি করেন মমতা৷ তৃণমূল ত্যাগের পর শেষ কবে মমতা মুকুল রায়ের নাম নিয়েছেন, তা স্মরণকালের মধ্যে মনে করা যাচ্ছে না। কিন্তু নন্দীগ্রামে গিয়ে এই নিয়ে পরপর দুবার মুকুল রায়ের নাম তাঁর মুখে, যা রাজনৈতির মহলে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mamata Banerjee