হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
কাজ নেই, তবে এবার ভোটটা অন্তত দিতে পারবো,আশায় বুক বাঁধছে খেজুরী

কাজ নেই, তবে এবার ভোটটা অন্তত দিতে পারবো,আশায় বুক বাঁধছে খেজুরী

আস্তিক দাস৷

আস্তিক দাস৷

  • Last Updated :
  • Share this:
    #খেজুরী: গ্রামের পথে ঢুকতেই সাজানো বাগানে দণ্ডায়মান মাটির রাজা রামমোহন রায়, প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর৷ সিমেন্টের ফলকে খোদাই করা খেজুরী বন্দর থেকে তাদের বিদেশ যাত্রা গৌরবান্বিত ইতিহাস৷ তার ঠিক সামনেই আস্তিক দাসের টিনের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট দোকান৷তবে এমনটা কিন্তু হওয়ার কথা ছিল না৷ বারো ক্লাস পাশ করে দর্জির কাজ করতে চেন্নাই পাড়ি দিয়েছিল সদ্য কৈশোর পেরনো আস্তিক৷  কিছুবছর এদিক ওদিক টুকটাক কাজ৷ অবশেষে আশ্বাস মিলেছিল কাজ পাওয়ার৷ ফিরেও এসেছিল মাটির টানে৷ কোথায় সেই আশ্বাস?ব্রিটিশ আমলে তৈরি ভারতের প্রথম ডাকঘর৷ ব্রিটিশ আমলে তৈরি ভারতের প্রথম ডাকঘর৷হুগলি নদীর মোহনায় ম্যানগ্রোভ ঘেরা খেজুরীর অপূর্ব প্রান্তরে দাঁড়িয়ে একনাগাড়ে কথাগুলো বলে যাচ্ছিল আস্তিক৷ দুপুর গড়িয়ে দিন তখন বিকেলের পথে হেঁটেছে৷ "এই যে দেখছেন মোহনা, ওপারেই সাগর৷ কী সুন্দর না আমাদের গ্রাম? জানেন এখানে থেকেই বিদেশ গিয়েছিলেন রামমোহন রায়৷ ইংরেজদের তৈরি পোস্ট আপিসও রয়েছে আমাদের এখানে৷ যদি একটু কাজ পেতাম কোনও দিন বুড়ো বাবা, মাকে ছেড়ে যেতাম না এখান থেকে৷" একরাশ হতাশার মাঝেও আস্তিকের গলায় ফুটে উঠছিল খেজুরীর ঐতিহ্যের গর্ব৷আস্তিকের মতোই খেজুরী নিয়ে গর্ব রয়েছে গ্রামের প্রতিটা মানুষেরই৷ খেজুরী উপকূলে মৎস্যবন্দর, পর্যটন শিল্প, সুগার মিলের স্বপ্ন দেখে তারা৷ স্বপ্ন দেখে কাজ পাওয়ার৷ কেউ কাজের আশায় পাড়ি দেয় ভিন রাজ্যে৷ কেউ বা আশা ছেড়ে ছোটখাট দোকান, ভ্যান চালিয়েই আপোস করে নেয় নিয়তির সঙ্গে৷
    খেজুরী৷ খেজুরী৷ভৌগলিক অবস্থান, ইতিহাস, সবদিক দিয়েই আদর্শ পর্যটন কেন্দ্র হয়ে ওঠার সবরকম সম্ভাবনা সত্ত্বেও খেজুরী পড়ে রয়েছে অবহেলিত৷ ইংরেজ আমলে তৈরি দেশের প্রথম ডাকঘর, কাউখালি লাইট হাউজের পাশেই রয়েছে সরকারি সৌন্দর্যায়নের একফালি নমুনা৷ "সন্ধে হলে এই পার্কে এসে বসি৷ ঠান্ডা হাওয়া দেয় এখানে৷ কতকিছু দেখার আছে বলুন তো এখানে৷ লোকজন এলে তো সরকারেরও লাভ৷ আমাদেরও কিছু রোজগার হয়৷ তবে পার্কটা হওয়ার পরে মনে হয় হয়তো এবার নজর দিচ্ছে একটু এদিকে৷"২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে ৫৪.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে খেজুরী থেকে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জিত মণ্ডল৷ আস্তিকের মতো আশা করে ভোট দিয়েছিল খেজুরীর প্রতিটা মানুষই৷ কাজ আসবে৷ আশাভঙ্গ হয়েছে৷ এবারের লোকসভা ভোটে সেই বেকারত্বের অভিযোগেই জর্জরিত সরকার৷ রাজ্য সরকারের ৯ লক্ষ মানুষকে চাকরি দেওয়ার দাবিকে হাতিয়ার করেই দায় ঝেড়ে ফেলতে চায় মোদি সরকারও৷ ক্ষোভ জমেছে খেজুরীরও৷ আগামী ১২ মে কাঁথি লোকসভায় ভোটগ্রহণ৷  ২০১৪ সালে বিজয়ী প্রার্থী তৃণমূলের শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে লড়বেন বামপ্রার্থী পরিতোষ পট্টনায়ক, কংগ্রেস প্রার্থী দীপক কুমার দাস ও বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ সামন্ত৷হুগলি নদীর মোহনা৷ হুগলি নদীর মোহনা৷হতাশায় ডুবেও এবারের ভোটে খেজুরীর আশ্বাস একটাই৷ গত বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত গঠন হওয়ায় ভোট দেওয়ার সুযোগটাই পায়নি খেজুরী৷ এবার অন্তত সে সুযোগটুকু পাওয়া যাবে৷
    First published:

    Tags: Elections 2019, Loksabha Elections 2019, Sixth Phase Voting, Special Story, West Bengal Lok Sabha Elections 2019