কালনা : ধর্ষণের পর সামাজিক লজ্জা চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছিল নাবালিকা। সেই ধর্ষণের ঘটনায় কুড়ি বছর জেল হল অপরাধীর। কালনা আদালতের বিচারক এই রায় দিয়েছেন।
এক নাবালিকাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে তারই বাড়ির পেঁপে গাছ তলায় ধর্ষণ করেছিল সুব্রত হালদার নামে কালনার সাতগাছি এলাকার এক যুবক। মেয়ের কাছে ঘটনার কথা জানতে পেরে নাবালিকার মা কালনা থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই ঘটনার প্রায় এক বছর আট মাস পর কালনা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার শুক্রবার সাজা ঘোষণা করলেন।দোষী সাব্যস্ত সুব্রত হালদারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এ বি ধারায় ও পকসো আইনে ৪ উপধারায় ২০বছর জেল হেফাজত, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছ মাসের জেল হেফাজতের সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক।
সাজা ঘোষণার পর এই মামলার সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা বলেন," ২০২০ সালের ১৪অক্টোবর কালনা শহরের সুভাষপল্লী এলাকার বাসিন্দা এক নাবালিকার মা তার মেয়েকে পাড়ার মুদি দোকান থেকে ডাল ও নুডলস কিনতে পাঠিয়েছিলেন। সেই সময় প্রতিবেশী যুবক সুব্রত হালদার ওই নাবালিকাকে তার মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে গেছে বলে জানায়। তাকে বলে মোবাইল ফোনটা তার বাড়িতে দিয়ে আসার জন্য। নাবালিকা সরল মনে ফোন নিয়ে আসামির বাড়িতে পৌঁছলে দেখে বাড়ির বাইরে থেকে শিকল তোলা রয়েছে। সে এই দেখে ফিরে আসার উদ্যোগ নেয়। সেই সময় আসামি নাবালিকার পিছু পিছু বাড়ির সামনে চলে আসে। আর এর পর নাবালিকাকে বাড়ির মধ্যে পেঁপে গাছ তলায় নিয়ে গিয়ে জোর করে ধর্ষণ করে। মেয়েটি কোনও রকমে বাড়ি ফিরে এসে তার মাকে ঘটনার কথা জানায়। এরপর তার মা কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুব্রতর বিরুদ্ধে। ’’
আরও পড়ুন : বাগদা সীমান্তে যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেফতার দুই বিএসএফ জওয়ান
কালনা থানার তৎকালীন ওসি রাকেশ সিং এই ঘটনার তদন্তভার দেন এস আই সোমনাথ নস্করকে । গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। এর পর ঘটনার অদন্তে নেমে পুলিশ ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট আদালতে পেশ করে পুলিশ। সমস্ত দিক বিবেচনা করে ঘটনার প্রায় এক বছর আট মাস পর আসামির সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক। যদিও আদালতে মামলা চলাকালীন সামাজিক লজ্জার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয় নাবালিকা।
আরও পড়ুন : ছলনা করে প্রেমিককে ডেকে আনল স্ত্রী, মুন্ডু কেটে আলাদা করল স্বামী!
এদিন রায় ঘোষণার পর নাবালিকার মা আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন," এই রায়ে আমি খুশি, কিন্তু ফাঁসি হলে আরও খুশি হতাম । আজ যদি মেয়েটা বেচেঁ থাকত তা হলে আমার আর কোনও দুঃখ থাকত না। ওই ছেলেটা আমার সব শেষ করে দিয়েছে।"
অন্যদিকে আসামিপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে যাবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।