নৈহাটিতে বিস্ফোরণের অভিঘাতে ভাঙল মা কালীর মূর্তিও !
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
ঘটনাস্থলের একদম কাছেই ছিল বালি খাদানের অফিস। বিস্ফোরণের তীব্রতা সেখানেই সব থেকে বেশি অনুভূত হয়। সেই অফিসেই একটি ফ্রেমের ভিতরে মা কালীর একটি মূর্তি রাখা ছিল।
#কলকাতা: যিনি সবার রক্ষা করেন, তাঁকেই রক্ষা করা গেল না! আক্ষেপ নৈহাটিতে বিস্ফোরণস্থলের বাসিন্দাদের। বৃহষ্পতিবার নৈহাটির ছাইঘাটে বাজির বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে আচমকা ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। যার জেরে নৈহাটি ও গঙ্গার ওপারে চুঁচুড়াতে কয়েকশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণের 'শক-ওয়েভ' দুদিকেই বাড়িতে ফাটল ধরিয়েছে, জানালার কাঁচও ভেঙে গিয়েছে।
ঘটনাস্থলের একদম কাছেই ছিল বালি খাদানের অফিস। বিস্ফোরণের তীব্রতা সেখানেই সব থেকে বেশি অনুভূত হয়। সেই অফিসেই একটি ফ্রেমের ভিতরে মা কালীর একটি মূর্তি রাখা ছিল। সেই ফ্রেম ভেঙে মায়ের মূর্তি দু'টুকরো হয়ে যায়। মা কালীর মূর্তি ভেঙে মাথা আলাদা হয়ে গিয়েছে। নিজেদের বাড়ি ক্ষতীগ্রস্ত হওয়ার মতোই এটাও এলাকাবাসীর কাছে বড় আক্ষেপ। স্থানীয় বাসিন্দা এক মহিলা বলেন, "যে মা আমাদের সবার রক্ষা করেন, আজ তাঁকে আমরা রক্ষা করতে পারলাম না। নিজেই নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। এমন কি ছিল যার জেরে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটল? পুলিশ খুঁজে বের করুক কার জন্য এই অন্যায় হল। শাস্তি দিক।"
advertisement
advertisement
শুধু মা কালীর মূর্তি নয়, বিস্ফোরণের তীব্রতায় গোটা অফিসঘর তছনছ হয়ে গিয়েছে। যেহেতু বিস্ফোরণস্থলের সব থেকে কাছে প্রায় ১০০ ফুট দূরুত্বেই ছিল এই অফিস। তাই সেখানে কিছুই প্রায় আস্ত নেই। সবকটি দরজা জানালা ভেঙে উড়ে গিয়েছে। তবে ঘটনার সময় কেউ সেখানে না থাকায় হতাহত হননি। শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল গোটা এলাকায় এখনও আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন নৈহাটিবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ আরও সতর্ক হলে এত বড় ঘটনা ঘটত না।
advertisement
গত সপ্তাহে নৈহাটির দেবক গ্রামে বাজি কারখানায় প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের পর এলাকার প্রায় সমস্ত বাজি কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তারপর থেকেই নৈহাটির এই ছাইঘাটে সেই বাজি নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছিল। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল গঙ্গার ধারের কয়েক জায়গায় গোল করে মাটি পুড়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুলিশ সেই জায়গায় বাজি নিষ্ক্রিয় করেছে বলেই মাটি কালো হয়ে রয়েছে। কিন্তু যে কোনও বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে নিয়ম হল, কমপক্ষে দশ ফুট গর্ত করে তাতে বাজির মশলা ও বাজি ঢেলে মাটি চাপা দিয়ে তারপর দূর থেকে ডিটোনেটোর দিয়ে তা নিষ্ক্রিয় করতে হয়। যাতে বিস্ফোরণের কোনও অভিঘাত মাটির উপরে না আসে। কিন্তু এক্ষেত্রে যে তা করা হয়নি সেটি স্পষ্ট। বাসিন্দারা এও জানান যে গত কয়েকদিন যে পরিমান বাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে তার তুলনায় বৃহস্পতিবারের নিষ্ক্রিয় করা বাজির পরিমান ছিল অনেক বেশি। কেন এক সাথে এত পরিমান বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করা হল? কেন সেক্ষত্রে মাটিতে বেশি গর্ত করে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হল না? প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী।
advertisement
প্রশ্ন আরও উঠছে, সামান্য বাজি কারখানা থেকে বাজেয়াপ্ত করা বাজির মশলায় এত বড় অভিঘাত কিভাবে হল? এমন কি ছিল যার জেরে শক ওয়েভ পৌঁছল চুচুড়াতেও।
সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গোটা ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিসের কারণে এত বড় বিস্ফোরণ এবং কারও গাফিলতি রয়েছে কিনা সব দিকই খতিয়ে দেখবে তারা। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে জানার চেষ্টা করবে কি ছিল সেই বিস্ফোরকে যার জেরে কাঁপলো নৈহাটি ও চুঁচুড়া।
advertisement
Sujay Pal
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
January 10, 2020 8:03 PM IST